স্পোর্টস ডেস্ক \ শেষ মুহূর্তে অঁতোয়ান গ্রিজমান বল জালে পাঠালেও অফসাইডের জন্য গোল পায়নি ফ্রান্স। ম্যাচের অন্তিম সময়ে অঁতোয়ান গ্রিজমানের শট সব বাধা এড়িয়ে খুঁজে নিল জাল! দারুণ একটি প্রাপ্তি হাতে ধরা দিতে দিতেও দিল না- তিউনিসিয়ার খেলোয়াড়দের মুখ ভার, সমর্থকদের চোখে জল। সবাই ধরে নিলেন, ম্যাচের শেষ শট এটাই। হঠাৎ করেই দৃশ্যপটে এলো ভিএআর। অফসাইড কি না, মনিটরে দেখতে গেলেন রেফারি। জানিয়ে দিলেন, গোল হয়নি, অফসাইডে ছিলেন ফরাসি ফরোয়ার্ড! গ্রুপ পর্বে যাত্রা থেমে গেলেও ফ্রান্সের বিপক্ষে জয়ের উচ্ছ্বাসে মাঠ ছাড়ল তিউনিসিয়া! আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে বুধবার ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে আফ্রিকার দেশটি। থামিয়েছে বিশ্বকাপে ফ্রান্সের জয়রথ। ২০১৪ আসরের কোয়ার্টার-ফাইনালের পর এই প্রথম বিশ্ব মঞ্চে হারল তারা। শেষ ষোলোর ভাগ্য নিজেদের হাতে ছিল না। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জিতলেও বিদায়ের শঙ্কা ছিলই। ম্যাচের শেষ পর্যায়েই খবর আসে, ডেনমার্ককে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়া। তারপরও বড় এক প্রাপ্তি নিয়েই ফিরল তিউনিসিয়া। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানো তো কম কথা নয়। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করা ফ্রান্স একাদশে আনে ৯ পরবির্তন। টিকে যান কেবল রাফায়েল ভারানে ও অহেলিয়া চুয়ামেনি। এত পরিবর্তনের ছাপ পড়ে খেলায়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যেন নিজেদের ছায়া হয়ে থাকে। প্রথমার্ধে গোলের জন্য নিতে পারে কেবল দুটি শট, লক্ষ্যে ছিল না একটিও। ১৯৬৬ আসরের পর গ্রুপ পর্বের কোনো ম্যাচের প্রথমার্ধে যা তাদের সর্বনিম্ন। প্রথম মিনিট থেকে ফ্রান্সের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে তিউনিসিয়া। অষ্টম মিনিটে ফ্রি কিক থেকে জালে বল পাঠান নাদের ঘানদ্রি। তবে তিনি নিজেই অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। হাতছাড়া হয় তিউনিসিয়ার দারুণ একটি সুযোগ। ২৫তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পান কিংসলে কোমান। কিন্তু খুব ভালো জায়গা থেকেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড। লম্বা সময় ধরে এটাই ছিল ফ্রান্সের সেরা সুযোগ। পাঁচ মিনিট পর দারুণ একটি সুযোগ আসে আনিস বিন স্লিমানির সামনে। দুর্বল হেড নিয়ে দলকে হতাশ করেন তরুণ এই মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ার্ধেও একইরকম আক্রমণাত্মক শুরু করে তিউনিসিয়া। ৫৮তম মিনিটে এগিয়ে যায় তারা। চলতি আসরে এটাই তাদের প্রথম গোল। মাঝমাঠে ইউসুফ ফোফানার কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে এইস্সা লাইদুনি খুঁজে নেন ওয়াহবি খাজরিকে। বল কিছুটা এগিয়ে ডি বক্সের মাথা থেকে ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে আড়াআড়ি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন তিনি। পা বাড়িয়েও বলের নাগাল পাননি ফরাসি গোলরক্ষক। এর দুই মিনিট পরে অন্য ম্যাচে ডেনমার্কের বিপক্ষে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত তারা মাঠ ছাড়ে ১-০ গোলে জিতে। পিছিয়ে যাওয়ার পর একে একে কিলিয়ান এমবাপে, আদ্রিওঁ রাবিও, গ্রিজমান, উসমান দেম্বেলেদের বদলি হিসেবে নামান দিদিয়ে দেশম। আক্রমণের গতি বাড়ে ফ্রান্সের। তবে কোনো না কোনোভাবে এমবাপেদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় তিউনিসিয়ার রক্ষণ। ৮৯তম এমবাপের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক। পরের মিনিটে রন্দাল কোলো মুয়ানির বুলেট গতির শট একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। একের পর এক আক্রমণ করে যাওয়া ফ্রান্স ম্যাচের অন্তিম সময়ে জালে বল পাঠায়। কিন্তু ক্রস বাড়ানোর সময় গ্রিজমান অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হলো ফ্রান্স। গোল পার্থক্যে পিছিয়ে থেকে রানার্সআপ অস্ট্রেলিয়া। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় তিউনিসিয়া। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থেকে হতাশার আসর শেষ করল ডেনমার্ক।