মোস্তাফিজুর রহমান, আশাশুনি থেকে \ সীমাহীন জন-দুর্ভোগের পরেও সংস্কার হচ্ছে না আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা জিসি টু উজিরপুর জিসি ভায়া গাজির মাঠ সড়কের পাইথালী টু কালিবাড়ি (চাম্পাফুল) বাজার সড়ক (যার আইডি নং ২৮৭০৪২০০৭)। প্রায় ৩ কিলোমিটার এ ব্যস্ততম সড়কের অসংখ্য স্থানের পিচ উঠে ১ থেকে দেড় ফুটের গর্তের তৈরি হয়ে যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিগত বর্ষা মৌসুমে ভারী যানবাহনের চাপে সড়কটির সহস্রাধিক স্থানে ডেবে ও ফেঁপে ছোট, মাঝারী ও ভারী সকল প্রকৃতির যানবাহনের জন্য মরণ ফাঁদ পরিনত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে সড়কে ভারী যানবাহনের চাকা ডেবে সড়ক আটকে ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও সড়কটি ব্যবহারকারী জনসাধারণের আশা ছিলো বর্ষা মৌসুম শেষে এ ভোগান্তি কমবে কিন্তু বর্তমান সময়ে এসেও এই একই চিত্র অহরহ চোখে পড়তে দেখা গেছে। এ সড়ক ব্যবহারকারী যাত্রী সাধারণের জন্য ভারী যানবাহন ভেবে ভোগান্তি যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ৩ কিলোমিটারের এ সড়কে বর্তমান যে অবস্থা তাতে কোথায় কোথায় বেশি খারাপ একা উলেখ করার আর অবকাশ নেই। এক কথায় বলতে গেলে পূর্বে যে সড়কটি কার্পেটিং ছিলো এটা এলাকায় নতুন আগত কাউকে বিশ্বাস করানোই কষ্টকর হয়ে পড়বে। বিগত ৬ মাসে সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকায় একাধিক বার উলেখিত সড়কের বেহাল দশায় জনভোগান্তির কথা উলেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরে অবশেষে কতৃপক্ষ সড়কটি সংস্কারের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেও অজানা কারনে বিলম্বিত হচ্ছে পূণ সংস্কার কাজ বাস্তবাযন হতে। এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নাজিমুল হকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হলেও কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহন না করায় দ্বিতীয় বার শেষে ৩য় বারের জন্য টেন্ডার আহ্বানের প্রক্রীয়া চলমান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রথম বার সিডিউল জামা দেওয়ায় অনিহা প্রকাশের কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, বর্তমানে বাজার দর উদ্ধমুখি হওযার স্টিমেটের তুলনায় ব্যবহৃত মালামালের বর্তমান বাজার দর অসংগতিপূর্ণ হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো সিডিউল জমা দিতে অনিহা প্রকাশ করছেন। বর্তমান বাজার দরের সাথে স্টিমেটে জিনিস পত্রের দামের অসংগতির বিষয়ে জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে এলজিইডি’র হেডকোয়ার্টারের কর্মকর্তাদের উপর। এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সুজায়েত হোসেন দৈনিক দৃষ্টপাত-কে বলেন, সড়কটি সংস্কারের উদ্দেশ্যে দরপত্র দাখিলের ধার্যকৃত প্রথম দিনে কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিডিউল জমা দেননি। আগামি ১২ ডিসেম্বর-২২ ৩য় বারের মত দরপত্র দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে। আশা করছি ১২ ডিসেম্বর বিষয়টির সমাধান চলে আসবে। তবে দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত প্রথম দিনে কেন কোন প্রতিষ্ঠান সিডিউল জমা দেননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বর্তমানে সড়ক সংস্কারে ব্যবহৃত জিনিসপত্রের বাজার দর উদ্ধগতিকেই দায়ী করলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাতক্ষীরা জেলা ঠিকাদার সমিতির এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রতিবেদক জানান, জেলা সমিতির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রথম দরপত্র দাখিলের দিনে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিডিউল জমা দেন এবং লটারির প্রক্রীয়াও সম্পন্ন হয়। কিন্তু সমিতির তুমুল বিরোধিতায় একটি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েও সিস্টেমে সেখান থেকে সরে আসলে রি-টেন্ডারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেন ঠিকাদাররা অনিহা প্রকাশ করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বর্তমান জিনিস পত্রের বাজার দর এবং স্টিমেটে উলেখিত বাজার দরের অসংগতিকেই দায়ি করেছেন। এদিকে দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকা জরাজীর্ণ সড়কটি ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়া, মরিচ্চাপ নদীর উপর নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ চাপড়া বেইলী ব্রীজ পারাপারে ভারী যানবাহনের নিষেধাজ্ঞা এবং শালখালী (কামালকাটি) ব্রীজ ও বাঁকড়া ব্রীজ ভেঙে ব্যবহারে অনুপযোগী পড়ায় আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণের ভারী মালামাল আনা নেয়ায় পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। বর্তমান সময়ে আশাশুনি, কালিগঞ্জ উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার জনভোগান্তি লাঘোবে ব্যস্ততম ও অতিব জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি সংস্কারে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।