এফএনএস স্পোর্টস: কথা ছিল ছাদখোলা বাসে বুয়েন্স এইরেস শহরে ঘুরবেন লিওনেল মেসিরা। শেষ করবেন শহরের কেন্দ্রে বিশাল ওবেলিসো স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে। কিন্তু বাসে যাত্রা শুরু করেও শেষ করতে পারেনি বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনা দল। এত বিপুল মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল যে, শেষ পর্যন্ত হেলিকপ্টারে করে প্যারেড শেষ করতে হয়েছে মেসি, দি মারিয়াদের। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, মেসিদের বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবে অংশ নিতে রাস্তায় নেমে আসে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। বাসে আট ঘণ্টার যাত্রার পরিকল্পনা থাকলেও নিরাপত্তার কথা ভেবে কমিয়ে আনা হয়। বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে স্থানীয় সময় সোমবার রাত আড়াইটার দিকে রাজধানী বুয়েন্স এইরেসের বিমানবন্দরে অবতরণ করে আর্জেন্টিনা দলকে বহনকারী বিমান। ছাদখোলা বাসে চড়ে হাজার হাজার সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে পাশেই আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে যান মেসি, দি মারিয়া, দে পলরা। সেখানে কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম করেন তারা। গত মঙ্গলবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয় আগেই। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে শহরের কেন্দ্রে ওবেলিসো স্মৃতিস্তম্ভের দিকে যায় দলকে বহনকারী বাস। সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। রাস্তায় ঢল নামে মানুষের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, একটা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ওভারব্রিজ থেকে মেসিদের বাসের ওপর লাফ দেন দুই সমর্থক। একজন বাসে নামতে পারলেও আরেকজন ছিটকে বাইরে পড়ে যান। সমর্থকদের চাপ অনেক বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) ও সরকার। পরে মেসিদের হেলিকপ্টারে করে শহর প্রদক্ষিণ করানো হয়। আর্জেন্টিনা প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র গাব্রিয়েলা চেরুত্তি টুইট করেন, “লোকজনের আনন্দ-উলাসের কারণে রাস্তায় খেলোয়াড়দের নিয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়েছে, তাই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা হেলিকপ্টারে করে উড়ছে। আসুন আমরা শান্তিতে উদযাপন চালিয়ে যাই এবং খেলোয়াড়দের প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দেখাই।” ছাদখোলা বাসে খেলোয়াড়দের প্যারেড পরিকল্পনা অনুযায়ী না হওয়ায় ক্ষমা চেয়ে টুইট করেন এএফএ প্রেসিডেন্ট ক্লদিও তাপিয়া। ১৯৮৬ সালে দিয়েগো মারাদোনার হাত ধরে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের পর তিন যুগ ধরে বৈশ্বিক শিরোপার স্বাদ পাচ্ছিল না আর্জেন্টিনা। মাঝে দুইবার ফাইনাল খেলেও সঙ্গী হয় হতাশা। মেসির কাঁধে চড়ে এবার কোনো ভুল করেনি তারা। গত রোববার লুসাইল স্টেডিয়ামে ফ্রান্সের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ফাইনালটি নির্ধারিত সময়ে ২-২ ড্র হয়। অতিরিক্ত সময় শেষ হয় ৩-৩ সমতায়। পরে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জেতে লাতিন আমেরিকার দলটি।