এফএনএস বিদেশ : পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু জেলার সেনানিবাসের একটি সন্ত্রাসবিরোধী থানা (সিটিডি) দখলে নিয়ে বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেছিলো পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) জঙ্গিরা। ঘটনার তিন দিন পর গত মঙ্গলবার একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে চালায় দেশটির দুটি বিশেষ বাহিনী। এই অপারেশনে সমস্ত জিম্মিদের উদ্ধার ও ২৫ জন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার বান্নু সেনানিবাসের ভিতরে কাউন্টার-টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) থানায় এই ঘটনা ঘটে। থানার ভেতরে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের মধ্যে একজন পুলিশের কাছ থেকে একটি একে-৪৭ ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালায়। এরপরই সেই জঙ্গি সেখানে আটক অন্যান্য জঙ্গিকে মুক্ত করে এবং পুরো কম্পাউন্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা বেশ কয়েকজন বেসামরিক ও পুলিশ সদস্যকেও জিম্মি করে। পাকিস্তানের টিভি চ্যানেল জিও নিউজের সাক্ষাতকারে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আহমেদ শরিফ জানান, ৩৫ জঙ্গির মধ্যে ২৫ জন নিহত ও সাতজন আত্মসমর্পণ করেছে, বাকি তিনজন পালানোর চেষ্টাকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শরিফ জানান, আমরা তাদের (জঙ্গিদের) নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। তবে তারা রাজি ছিল না। তারা আফগানিস্তানে নিরাপদ পথ চেয়েছিলেন, যা কর্তৃপক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছিল। তিনি আরও জানিয়েছেন, অভিযানে তিন কর্মকর্তাসহ ১০ সৈন্য আহত এবং এক বেসামরিক নাগরিক ও দুইজন সৈন্য নিহত হয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এই অভিযানে মোট ৩৩ জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পরে তিনি জানান, অভিযানের বিস্তারিত ও হতাহতের চ‚ড়ান্ত সংখ্যা জানাবে সেনাবাহিনী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও উলেখ করেছিলেন, জঙ্গিরা একটি দলের অংশ ছিল না, বরং তারা বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে, জঙ্গি গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাদের সদস্যরা সিটিডি কর্মী এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জিম্মি করে নিয়েছিল। বিবৃতিতে, পাকিস্তান সরকারকে টিটিপি সদস্যদের দক্ষিণ বা উত্তর ওয়াজিরিস্তানে স্থানান্তর করতে বলে যেখানে টিটিপির আস্তানা রয়েছে। অন্যথায় সমস্ত ক্ষতির জন্য সেনাবাহিনী দায়ী থাকবে বলে হুমকি দেয়। এর আগে, সিটিডি থানা কম্পাউন্ডের ভিতর থেকে জঙ্গিদের প্রকাশিত একটি ভিডিও দাবি করে, ৯ জন পুলিশ কর্মী তাদের বন্দী অবস্থায় ছিল এবং জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে আকাশপথে আফগানিস্তানে নিরাপদে যাওয়ার দাবি করেছিল। নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান (পাকিস্তান (টিটিপি) এর সাথে সম্পৃক্ত সন্ত্রাসীরা এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল এবং স্থবিরতার অবসান ঘটাতে পাকিস্তান সরকার জঙ্গি গোষ্ঠীর নেতৃত্বের সাথে আলোচনা শুরু করে। তবে তিন দিনেও জঙ্গিরা আত্মসর্মপণ না করায় শেষে অভিযান চালায় সেনা বাহিনী।