এফএনএস আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী-অধ্যুষিত দোনেস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন। সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সেখানে ‘শান্তি রক্ষার জন্য’ সেনা পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন। পুতিনের এমন সিদ্ধান্তের পর পুতিনের উদ্দেশে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন শান্তি বজায় রাখতে চায়। ক‚টনৈতিক আলোচনা ও পন্থার মধ্য দিয়েই সেই কাজ চালিয়ে যেতে চায়। তবে রাশিয়ার হাতে কোনোভাবেই নিজেদের একখন্ড মাটিও তুলে দেওয়া হবে না। রাশিয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা কাউকে ভয় পাই না। কোনো কিছুতেই ভয় পাই না। কারো কাছে বশ্যতা স্বীকার করব না। কারো হাতে কোনো কিছু তুলেও দেব না। জেলেনস্কির অভিযোগ, মিনস্ক চুক্তি লঙ্ঘন করে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করে অস্থির পরিবেশ তৈরি করছে রাশিয়া। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন জেলেনস্কি। ইতোমধ্যেই তিনি জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বকে জরুরি বৈঠকের আহŸান জানিয়েছেন। মিত্র দেশগুলোকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহŸান জানিয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, এখনই দেখার সময় কারা আমাদের আসল বন্ধু। কারা রাশিয়ার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে। রুশ প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। তারা বলছেন, বিচ্ছিন্ন অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পরোক্ষভাবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধেরই আভাস দিলেন। অবিলম্বে এই ঘোষণা প্রত্যাহারের আহŸান জানিয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। পুতিনের ওই ঘোষণার পর জরুরি বৈঠকে বসেন ইইউ ও ন্যাটো সদস্যরা। পরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ও ইইউ কাউন্সিল প্রধান চার্লস মিশেল। তবে সেটি কি ধরনের নিষেধাজ্ঞা হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এদিকে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর যুদ্ধের আশঙ্কায় দোনেস্ক ও লুহানস্ক ছাড়তে শুরু করেছেন ইউক্রেনের সাধারণ বাসিন্দারা। পুতিনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে কিয়েভের বাসিন্দারা বলছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধের পাঁয়তারা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে মস্কোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন রুশ নাগিরকরা।