আবু তালেব মোল্যা \ আমাদের আনিছ ভাই পরপারে চলে গেলেন। প্রিয় আনিছ ভাই না ফেরার যে দেশে অনন্তকালের জন্য গেছেন নিশ্চয় তিনি সেখানে ভাল থাকবেন, একজন শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সমাজ সংস্কারক এবং প্রতিবাদী হিসেবে তিনি সাতক্ষীরার জন মানুষের কাছে নিজেকে পরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। সাংবাদিকতার পরতে পরতে তার ক্ষনজন্মা আর সৃষ্টিশীলতা বারবার আলোর বিচ্ছুরন ঘটিয়েছে। সম্পাদক আনিছুর রহিম এবং অধ্যক্ষ আনিছুর রহিমের অত্যন্ত কাছ থেকে যারা দেখেছেন তারা নির্ধিদায় বলবেন তিনি অসাধারনের মাঝে অতি সাধারন ভাবে বিচরন করবেন। তার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব বোধ যেমন প্রখর ও সুদীপ্ত ছিল অনুরুপ ভাবে বিনয়ের শেতশুভ্র মূর্ত প্রতিক ছিলেন। বাম ধারার ছাত্র রাজনীতির কারনে বাম রাজনীতির অন্যতম পুরধা তার সাথে বিশেষ সখ্যতা সাংবাদিকতায় পরিপূর্ণতা পায়। সহজ সরল জীবন যাপনে অভ্যস্থ এবং অনায়াসে সাধারন মানুষের কাতারে নিজেকে নিতে পারতেন। পৃথিবীতে কেউ চিরস্থায়ী নয়, জন্মালে মৃত্যু হবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু শুন্যতা আর ক্ষতের সৃষ্টি করে, বেদনাহত করে এমনই মৃত্যু সাতক্ষীরার মানুষের অতি প্রিয় আনিছুর রহিমের। সাংবাদিকতার সব শাখায় তার বিচরন ছিল আলোকিত, শিক্ষা বিস্তর আর প্রসারেও তিনি ছিলেন আপাদমস্তক, শিক্ষা সংস্কারক, দেবহাটার সখিপুর সরকারি খানবাহাদুর আহছানউলাহ কলেজ তার সৃষ্টি সুখের অন্যতম কীর্তি। আগামী দিনের বাংলাদেশ বির্নিমানের কারিগর হিসেবে শিশু শিক্ষার জন্য তিনি বিদ্যাপিঠ পরিচালনা করে আসছিলেন। সাহসিকতা, ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা এবং সহযোগিতার নিরবিচ্ছিন্ন মানুষটির প্রনয়নে সত্যিকার অর্থে সাতক্ষীরা বাসি কেবল শোকাহত নয়, সাতক্ষীরা বাসি তাদের কৃতি সন্তানের মহা প্রস্থানে হত বিহŸল। সাতক্ষীরা চিত্র প্রকাশ কালীন সময় গুলোতে তিনি বারবার আলোচনায় থেকেছেন। রক্ত চক্ষু বা লোভ লালসা তাকে স্পর্শ করেনি, সাংবাদিকদের জন্য তিনি ছিলেন উদার। যে কাউকে সম্বোধনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার ছোয়া থাকতো ভরপুর। স্বভাব সুলভ ভঙ্গিময় জীবন যাপনে অভ্যস্থ আনিছ ভাইয়ের মাঝে কোন কোন সময় দেখেছি আবেগ। তবে পাওয়া না পাওয়ার হিসেব তিনি করতেন না। বিশ্ব বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী এক সময়ের প্রানোচ্ছল তরতাজা যুবক সরকারি চাকুরী না করে শিক্ষকতা আর সাংবাদিকতাকে বেছে নিয়েছিলেন, আর এ জন্য তিনি তার অপরাপর গুনাবলী হতে পৃথক স্বত্ত¡ার অধিকারী। কর্মব্যস্ত এই সমাজ সংসার বহমান, সময় অতিদ্রুত ফুরিয়ে যায়, জীবন জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ মনে রাখতে পারে না যেমন যথাযথ তেমনই যথার্থ আমাদের আনিছ ভাই আমাদের মাঝে থাকবেন চিরজাগ্রত, মৃত্যুঞ্জয়ী তিনি বেঁচে থাকবেন সৃষ্টিশীলতায়, কর্মদক্ষতায়, সামাজিকতায় সর্বপরি শ্বেতশুভ্র সাদা মনের মানুষ হিসেবে। আনিছ ভাইয়ের অনন্ত যাত্রায়, হারানোর বুকে রক্ত ক্ষরন এবং আমাদের শোক গাঁথা।