মাছুদুর জামান সুমন \ কনকনে শীত আর হীমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশের সর্বত্র এমন অবস্থা, শীতের প্রকোপ যেমন বেড়েই চলেছে অনুরূপ ভাবে উত্তরের অতি ঠান্ডায় বাতাস বইছে যে কারনে শীত দৃশ্যতঃ শৈত প্রবাহে পরিনত হয়েছে। গত তিন চার দিন যাবৎ শীতের প্রচন্ডতায় কেবল জনজীবন মুখ থুবড়ে পড়েছে তা নয় শীত কৃষি উৎপাদন সবজি চাষেও চরম ভাবে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে চলেছে। একদিকে শীত অন্যদিকে ঘন কুয়াশা যেন কুয়াশার দুর্ভেদ্য প্রাচীর। একপ্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে চোখ মেলানো ভার। গতকাল দিনের অধিকাংশ সময় সুর্যের আলো দেখা যাইনি। যে কারনে শীতের প্রভাব কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের কয়েকটি জেলায় বিশেষ করে উত্তরের জেলা গুলোতে চলছে শৈত প্রবাহ। শীত এবং কুয়াশা নিয়ে আবহাওয়া দপ্তর ভাল খবর দিতে পারেনি, আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায় আগামী আরও কয়েকদিন উত্তরের বাতাস এবং কুয়াশা অব্যাহত থাকবে। গত তিন চার দিন যাবৎ তীব্র শীত আর কুয়াশার কারনে হত দরিদ্র, অসহায়, গরীব জন সাধারন যেমন শীত যন্ত্রনায় কাতর হয়ে পড়েছে অনুরূপ ভাবে খেটে খাওয়া শ্রমিক শ্রেনি মাঠে ঘাটে শীত মোকাবিলা করে কাজ করতে না পারায় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। সাতক্ষীরার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ন জনপদ বরাবরই অরক্ষিত আর এই কারনে যে বসবাস কম ফাঁকা এলাকা যে কারনে শীত সহজেই উক্ত এলাকায় প্রভাব বিস্তর করতে সক্ষম হয় আর বর্তমান সময় সেটাই হচ্ছে। শীতের তীব্রতায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের দৃশ্যত ও দেখা যাচ্ছে। সদর উপজেলার বুইচালা গ্রামের সবজি চাষী আহম্মদ উল্যা দৃষ্টিপাতকে জানান অতি শীতে সবজি বাগানের স্বাভাবিকতা বিঘœ ঘটছে, হলুদভাব এর সৃষ্টি হচ্ছে সবজি ক্ষেতে, বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও বলেন শীতের সাথে প্রতিযোগিতায় থাকা কুয়াশা সবজি বাগানের জন্য চরম ক্ষতির কারন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শীত আর কুয়াশার কারনে সড়ক ও মহা সড়ক গুলোতে যান চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। যাতায়াত যোগাযোগ ব্যবস্থায় ছন্দ পতন ঘটেছে। পণ্য সামগ্রী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে সর্বাপেক্ষা উদ্বেগের কারন হিসেবে বিবেচনায় থাকছে কুয়াশার কারন হেতু সড়কে সড়কে দূর্ঘটনা ঘটছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সড়ক ও মহাসড়ক গুলোতে ঘন কুয়াশার কারনে দূর্ঘটনায় অন্তত ৫/৭ মানব সন্তানের করুন মৃত্যু ঘটেছে। রাজধানী ঢাকা যাত্রীরাও কুয়াশার কারনে ফেরী পারাপারে চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া ফেরী চলাচল দিনে রাতে কয়েক ঘন্টা বন্ধ থাকছে যে কারনে ফেরী ঘাটে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন যাত্রীরা। হাড় কাপানো শীতের এই সময় গুলোতে নানান ধরনের ঠান্ডা জনিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে শীতের কারনে বৃদ্ধ এবং শিশুরা সর্বাধিক ভোগান্তীতে পড়েছে। ছর্দি, কাশি, হাপানী, এ্যালার্জি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া সহ নানান ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। শীতের মুহুর্ত গুলোতে অবশ্যই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কোন ভাবেই ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না। কুসুম গরম পানি পান ও গোসলে ব্যবহার করতে হবে। ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ রাখতে হবে। শিশুরা রাত্রে ঘুমন্ত অবস্থায় শরীরের লেপ এবং কম্বল অনেক সময় ফেলে দেয় বিধায় এ ক্ষেত্রে মাকে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। শীতের সময় গুলোতে জনজীবনের সাথে শীতের অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব কেবলই বিরূপ প্রভাব হিসেবেই জানান দিচ্ছে। শীতের তীব্রতার সময় গুলোতে আমরা সমাজে বসবাস কারীরা যে যার অবস্থান হতে শীতার্তদের সহযোগিতা করি এবং পাশে দাঁড়াই। শীতকে কোন ভাবেই অবহেলা করার সুযোগ নেই কোন ভাবেই গরম কাপড় ব্যতিত থাকবেন না, শীতের তীব্রতা যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটাতে পারে।