এফএনএস: সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সম্ভাব্য সব ক্ষেত্রেই জনগণের পাশে দাঁড়ায় সেনাবাহিনী। বাস্তব সম্মত ও যুগোপযুগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি বিশ্ব মানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় সেনাবাহিনীর শীতকালীন বহিরঙ্গন অনুশীলনের চ‚ড়ান্ত মহড়া পরিদর্শন শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, টাঙ্গাইলের দেল দুয়ারের মহড়ার মাধ্যমে তিন সপ্তাহব্যাপী সেনাবাহিনীর শীতকালীন বহিরঙ্গন অনুশীলনের চ‚ড়ান্ত মহড়া ‘অনুশীলন নবউদ্যোগ’ গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশন সফলভাবে এই অনুশীলন পরিচালনা করে। বৃহস্পতিবারের অনুশীলনে সাঁজোয়া বহর, এপিসি’র পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ছত্রীসেনা অংশগ্রহণ করে। সেনাবাহিনীর আর্মি এভিয়েশনের হেলিকপ্টার ব্যবহার করে আর্মি কমান্ডো সন্নিবেশ, ইঞ্জিনিয়ার্স কর্তৃক প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং পদাতিক ও অন্যান্য কোরের সমন্বয়ে শত্র“ অবস্থানের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরীসহ সেনাসদরের প্রিন্সিপাল ষ্টাফ অফিসার, অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা, ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সাংবাদিক এবং অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। গত ১৯ ডিসেম্বর শীতকালীন প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সেনাসদর ও সেনাবাহিনীর সব ফরমেশন পূর্ণাঙ্গরূপে নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন হয়। জাতির গর্ব ও আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণের প্রতিপাদ্য হলো ‘যুদ্ধ পারঙ্গমাতা, যুদ্ধোপযোগিতা ও রনপ্রস্তুতি প্রদর্শন’। দেশ সেবায় নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে সরেজমিনে বাস্তবধর্মী বিভিন্ন সামরিক বিষয়াদি অনুশীলনের মাধ্যমে পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন সাধন করাই এই অনুশীলনের মূল লক্ষ্য। এ ছাড়া এ বছর শীতকালীন বহিরঙ্গন অনুশীলনটিতে অধিকতর বাস্তবধর্মী ও অভিনব জ্ঞানের প্রতিফলন ঘটানো হয়। সেনাবাহিনী প্রধানের নতুন কৌশলের উদ্ভাবন, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিভিন্ন প্যারা মিলিটারি ফোর্সের সমন্বয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য এই অনুশীলনের পরিকল্পনা করা হয়। সব মিলিয়ে সেনাবাহিনীর এবারের শীতকালীন প্রশিক্ষণ ছিল অনেক অভিনব ও বাস্তবধর্মী। সেনাবাহিনীর সব সদস্য ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে এই শীতকালীন অনুশীলনে অংশগ্রহণ করে। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও শীতকালীন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ফরমেশনসমূহ স্ব-স্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অসহায় ও দুস্থ শীতার্ত মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র ও ত্রাণ বিতরণ, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপ্রাণীর বিনামূল্যে চিকিৎসা, পরামর্শ প্রদান ও ওষুধ বিতরণ করছে।