## যথাসময়ে নির্বাচন : ইসি আলমগীর
জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে \ আগামীতে নতুন রাষ্ট্রপতি কে হবেন এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা। নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে, যথাসময়ে সময়ে সংবিধানের আলোকে নির্বাচন করা হবে রাষ্ট্রপতি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, যথাসময়ে এ নির্বাচন হবে। প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ। সেক্ষেত্রে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে করতে হবে এ নির্বাচন। সংসদের চলতি অধিবেশন ফেব্র“য়ারি ৯ তারিখ পর্যন্ত চলবে বলে সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমান সংসদে ৩৫০ আসনের মধ্যে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করার পর সাতটি আসন শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে ১ ফেব্র“ুয়ারি ছয় আসনের উপ নির্বাচন রয়েছে। আগামী ২২তম অধিবেশনে কে রাষ্ট্রপতি হবেন তা নির্ধারিত হবে।সবশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেবার ১৮ ফেব্র“য়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বরাবরের মতো ৬ ফেব্র“ুয়ারি নির্বাচিত হন তিনি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইতোমধ্যে বলেছেন, যেহেতু তিনি (আবদুল হামিদ) দুই টার্ম থেকেছেন, সংবিধান অনুযায়ী তিনি আর বেশি থাকতে পারেন না। সেহেতু আমরা নতুন রাষ্ট্রপতি দেখব, ইনশালাহ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের প্র্রার্থীর রাষ্ট্রপতি হওয়াটা প্রায় নিশ্চিত। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের এ প্রক্রিয়া আমরা ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি এ নির্বাচন কমিশনার। এভাবে তো বলতে পারবো না, যথাসময়ে হবে। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইন অনুযায়ী স্পিকারের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার-এর এ প্রসঙ্গে আলাপ হবে। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- (১) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে এ পদ শূন্য হইলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি।একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সাংসদরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে। সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা-প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ডালপালা মেলেছে। কেউ বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানকে এ পদে দেখা যেতে পারে। আবার সংসদ সচিবালয় সূত্র বলছে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। স্পিকার হিসেবে সুনামের সঙ্গে সংসদ পরিচালনা করছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজনও। এর আগে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর নাম শুরুতে আলোচনা হলেও ওনাকে মন্ত্রি-পদমর্যাদার সংসদীয় উপনেতা নির্বাচিত করাই সে আলোচনা এখন নেই। তবে, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি যেই হোক সেখানে প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন ও বিশ^স্ত কেউ হবেন এটা নিশ্চিত ।