মাছুদুর জামান সুমন \ বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের আবহাওয়া জলবায়ূ এবং ভূ-প্রকৃতি বরাবরই কৃষি সহায়ক। আমাদের দেশের মাটিতে যতগুলো কৃষি উৎপাদন হয় তার মধ্যে বিশেষ ভাবে উলেখযোগ্য ধান। জীবন ধারনের অন্যতম উৎস ধান। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় অনেক আগে হতে এই জেলা ধান উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। সাতক্ষীরাকে শস্য ভান্ডার ও বলা হয়ে থাকে। জেলার বিস্তীর্ন ভূমিতে ধানের চাষ হয়। বর্তমান সময়ে বোরো মৌসুমের আবাদ শুরু হয়েছে। প্রকৃতির নিষ্ঠুরতা সহ নানান ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দুর্বিপাক ধান চাষে প্রতিবন্ধকতা দীর্ঘ দিনের। কখনও অনাবৃষ্টি আবার অতি বৃষ্টি কাঙ্খিত ধান উৎপাদন না হওয়ায় কৃষক এবং কৃষি উভয়ই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সাতক্ষীরার মাঠে মাঠে সরিষার ক্ষেত যেমন চোখ জুড়িয়ে যায় অনুরূপ ভাবে ধানের সবুজ আবহ আর বাতাসের মুর্ছনায় হেলাদোলা অনন্য অসাধারন দৃশ্য কেবল কৃষকের কেন যে কারও মন জুড়িয়ে যায়। বোরো মৌসুম সম্পূর্ন ভাবে সেচের উপর নির্ভরশীল থাকে দ্বিতীয় ব্লক হিসেবে বলা হয়। কৃষক যথা সময়ে সার, বীজ পেলে এবং সেচের সুফল ভোগ করলে বোরো উৎপাদন কাঙ্খিত লক্ষে পৌছাবে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় সাধারনত উচু জমিতে পানি নিষ্কাষনের সহজতর পদ্ধতি সম্বলিত জমিতে বোরো চাষ করা হয়। জেলার তিন ফসলী জমি খ্যাত মাটিতে বোরো চাষের জন্য বিশেষ সহায়ক। বর্তমান সময়ে কৃষি উৎপাদন খরচ এবং উৎপাদিত ধানের মূল্যের বাধ্যবাধকতা কৃষকের জন্য বিশেষ অনুকূলে না থাকায় কৃষকরা বোরো চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে চলেছে। বৃষ্টিতে ভিজে রৌদ্রে পুড়ে ধান সহ অপরাপর শস্য উৎপাদনকারী কৃষক যদি নায্য মূল্য না পায় তাহলে কৃষক কেবল হতাশ হবেন তা নয় মারাত্মক ভাবে লোকসানের সম্মুখিন হবেন এটা যথাযথ, বিধায় ধানের নায্য মূল্য নির্ধারনের বিকল্প নেই। কৃষককে কম সূদে ঋন বিতরন, কৃষি ঋন মাপ এবং প্রনোদনাই ধান সহ অন্যান্য কৃষি উৎপাদনকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। সরকারি ভাবে ধান, চাল ক্রয়ের বিষয়টি বিশেষভাবে আলেখ্য কৃষকের উৎপাদন খরচ পরবর্তি বিক্রয় মূল্য যদি লাভের না হয় তাহলে কৃষক তো চাষাবাদ করবে না। সবজি সহ অপরাপর কৃষি উৎপাদনে যেমন গতি সঞ্চার করেছে ধানের ও চালের মূল্য নির্ধারনে এবং প্রনোদনা প্রদানে এগিয়ে আসতে হবে। চাষের জন্য চাষ নয় কৃষকদের কে সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হবে। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি নির্ভর এবং অধিক ফলনশীল ধান বীজ আবিস্কার হয়েছে কৃষকদেরকে সে দিকে নজর দিতে হবে। কৃষি দপ্তরকে কৃষকদের প্রশিক্ষন সহ চাষাবাদের ক্ষেত্রে জ্ঞানী করে তুলতে হবে। স¤প্রতিক সময় গুলোতে সাতক্ষীরার উলেখযোগ্য সংখ্যক চিংড়ী ঘেরের জমিতে লবনাক্ত সহনশীল ধান চাষ শুরু হয়েছে। লবনাক্ত সহনীয় ধান চাষের দিকে বিশেষ নজর দিলে আগামীতে ধান চাষে ও উৎপাদনে সাতক্ষীরা বিপ্লব সাধন করবে এমন প্রত্যাশা কৃষি উন্নয়নকামীদের।