বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৫:০১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
‘মে দিবস’ শ্রমিকদের মর্যাদা ব্যতীত দেশ-জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয় মার্কিন রনতরিতে হুতিদের ড্রোন হামলা আগুন ঝরা তাপদাহ নানান ধরনের রোগ ছড়াচ্ছে মসলা যুক্ত ভারী খাবার গ্রহণ না করার পরামর্শ চিকিৎসকদের ডাঃ শরিফুল ইসলাম সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেলেন জিরো পয়েন্ট রুপালী ব্যাংকর নতুন শাখা উদ্বোধন ৮ দলীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ফতেপুর ইয়ংস্টার ক্লাব চ্যাম্পিয়ন সাতক্ষীরায় বিআরটিএ মোবাইল কোর্ট অব্যাহত নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে তাপ প্রবাহজনিত পীড়ন প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় করণীয় বিষয়ে জনসচেতনা সভা অনুষ্ঠিত

মেহেদির পারফরম্যান্সে জয় পেল রংপুর

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩

এফএনএস স্পোর্টস: রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি। শেখ মেহেদি হাসান ফিরছিলেন হতাশ হয়ে। তবে ডাগআউটে সতীর্থরা তাকে বরণ করে নিলেন তালিতে। পরের ব্যাটসম্যান আজমতউল­াহ ওমারজাই মাঠে যেতে যেতে পিঠ চাপড়ে দিলেন তার। কাজ শেষ করতে না পারলেও দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন তো তিনিই! বোলিংয়ে ৩ ওভারে ১৩ রানে ১ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৪৩ বলে ৭২ রানের ইনিংস, ম্যাচের নায়ক মেহেদিই। তার দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের জয় ৫ উইকেটে। বিপিএলে সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ঢাকাকে ১৪৪ রানে আটকে রংপুর জিতে যায় ১ ওভার বাকি রেখেই। আগের ম্যাচগুলোয় বোলিং মোটামুটি করলেও ব্যাট হাতে মেহেদি ছিলেন একদমই নিষ্প্রভ। তার পরও তাকে টপ অর্ডারে খেলিয়ে গেছে দল। অবশেষে তিনি প্রতিদান দিলেন। আগের সাত ইনিংস মিলিয়ে তার রান ছিল ৭১। এবার এক ইনিংসেই ছাড়িয়ে গেলেন আগের সব ম্যাচকে। দলকেও এনে দিলেন জয়। আট ম্যাচে রংপুরের এটি পঞ্চম জয়, নবম ম্যাচে ঢাকার সপ্তম পরাজয়। টসের সময় ঢাকা অধিনায়ক নাসির হোসেন বলেছিলেন, ১৬০-১৭০ রান এই উইকেটে ভালো হতে পারে। কিন্তু সেই স্কোরে পৌঁছানোর মতো স্কিল, মানসিকতা কিংবা তাড়না, কোনোটাই দেখা গেল না তার দলের ব্যাটিংয়ে। একপ্রান্ত আগলে রাখা উসমান ঘানি শেষ দিকে একটু দ্রুত রান তুলে ৫৫ বলে ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে কিছুটা ভদ্রস্ত পর্যায়ে নিয়ে যান দলকে। টস জিতে বোলিংয়ে নামা রংপুরকে আবারও ভালো শুরু এনে দেন আজমতউল­াহ ওমারজাই। আগের ম্যাচে এক ওভারে তিন উইকেট নিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ধসিয়ে দেওয়া আফগান পেসার নতুন বলে জ¦লে ওঠেন আবার। দুর্দান্ত সুইং বোলিংয়ে তিনি ফেরান ঢাকার দুই ওপেনারকে। বাতাসে সুইং করে অনেকটা ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি পিচ করে আরও ঢুকে ছোবল দেয় স্টাম্পে, ঠিকমতো বুঝতেও পারেনি ব্যাটসম্যান মিজানুর রহমান (৫)। আগের ম্যাচে ফিফটি করা সৌম্য সরকার এবার ১১ রানে আউট হন ওমারজাইয়ের সুইংয়ের জবাব না পেয়ে। আরেকপ্রান্তে আঁটসাঁট বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের আটকে রেখেছিলেন শেখ মেহেদি হাসান। তার স্লাইডার সামলাতে ব্যর্থ হয়ে বোল্ড হন ইংলিশ ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ব্লেইক (৪)। ৫ ওভার শেষে ঢাকার রান তখন ৩ উইকেটে ২৮। চতুর্থ জুটিতে সেই ধস থামান উসমান ঘানি ও মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু প্রাণহীন ব্যাটিংয়ে দুজনের কেউই পারেননি দ্রুত রান তুলতে। ৪১ রানের জুটিতে বল লাগে ৩৭টি! ১৫ বলে ১৪ রান করে মিঠুন বোল্ড হয়ে যান রাকিবুল হাসানকে বাজেভাবে স্লগ করতে গিয়ে। রানের গতি একটু বাড়ে পরের জুটিতে। ঘানি ও নাসিরের জুটিতে রান আসে ৪৫ বলে ৫৫। ১৫ ওভার শেষে ঘানির রান ছিল ৩৭ বলে ৩৮। পরে তার ও নাসিরের ব্যাটে একটু দ্রুত রানের তাড়া দেখা যায়। নাসির ২২ বলে ২৯ করে রান আউট হয়ে যান। ঘানি শেষ দিকে রউফের আলগা বল কাজে লাগিয়ে দলকে দেড়শর কাছাকাছি নিয়ে যান। হারিস রউফ ছাড়া রংপুরের সব বোলারই বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। শেষ ২ ওভারে ৩২ রানসহ রউফ ৪ ওভারে দেন ৪৯ রান। রংপুর রান তাড়ায় মোহাম্মদ নাঈম শেখকে হারায় শূন্য রানে। তবে রনি তালুকদার ও মেহেদি মোটামুটি কাজে লাগান পাওয়ার প্লে। চতুর্থ ওভারে সালমান ইরশাদের দুটি আলগা বলে চার মারেন রনি। পরের ওভারে আফগান বাঁহাতি স্পিনার আমির হামজা হোতাকের বলে দুটি চারের পর ইনসাইড আউটে ছক্কায় ওড়ান মেহেদি। আরেকটি ছক্কা পান তিনি আল আমিন হোসেনে শর্ট বলে পুল করে। একটু পর অভিজ্ঞ এই পেসারের বলই ছয়ে ভাসান তিনি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলে। রনির রানের গতি যদিও কমে গিয়েছিল। হামজাকে টানা দুটি চার মেরে তিনি গা ঝাড়া দেন। পরের বলেই হামজা শোধ তোলেন রনিকে (২৮ বলে ২৯) ফিরিয়ে। জুটি থামে ৪২ বলে ৬৩ রানে। পরের ওভারে শোয়েব মালিককে ফেরায় ঢাকা দারুণ পরিকল্পনা করে। তার জন্য গালিতে ফিল্ডার রেখে স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ বল করেন সালমান ইরশাদ। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান পা দেন সেই ফাঁদেই। পরে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান অল্পতেই ফেরেন সৌম্য সরকারের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। তবে আরেকপ্রান্তে মেহেদি ছুটতে থাকায় রান রেটের চাপে কখনোই পড়তে হয়নি রংপুরকে। টি-টোয়েন্টিতে সপ্তম ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি ৩১ বলে। তাতে ৪০ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে। ফিফটির পরও দলকে এগিয়ে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭২ করে তিনি ফেরেন আল আমিনের বলে। জয় তখন নাগালেই। মোহাম্মদ নাওয়াজ ও ওমারজাই মিলে শেষ করেন কাজ। শেষের আগের ওভারে ইরশাদের বলে ওমারজাইয়ের দুই চার ও নাওয়াজের ছক্কায় শেষ হয় ম্যাচ। ঢাকার হয়ে তাসকিন প্রথম স্পেলে ২ ওভারে ৭ রান দেওয়ার পর অনেকক্ষণ বোলিং করতে পারেননি, হয়তো কোনো চোট সমস্যা। পরে ফিরে একটি ওভার করলেও শতভাগ দিতে পারেননি বলেই মনে হয়েছে। তবে দিনশেষে, যথেষ্ট পুঁজিই ছিল না তাদের। সংক্ষিপ্ত স্কোর: ঢাকা ডমিনেটর্স: ২০ ওভারে ১৪৪/৫ (মিজানুর ৫, সৌম্য ১১, ঘানি ৭৩*, ব্লেইক ৪, মিঠুন ১৪, নাসির ২৯, আরিফুল ২*; মেহেদি ৩-০-১৩-১, ওমারজাই ৪-০-২৭-২, রউফ ৪-০-৪৯-০, রাকিবুল ৪-০-২১-১, হাসান ৪-০-২৮-০, নাওয়াজ ১-০-৫-০)। রংপুর রাইডার্স: ১৯ ওভারে ১৪৬/৫ (নাঈম ০, রনি ২৯, মেহেদি ৭২*, মালিক ৪, সোহান ৬, নাওয়াজ ১৭*, ওমারজাই ১২*; তাসকিন ৩-০-১৩-০, ইরশাদ ৪-০-৩৬-২, হামজা ৪-০-২৯-১, আল আমিন ৩-০-১৯-১, সৌম্য ৩-০-২৪-১, নাসির ২-০-২৩-০)। ফল: রপুর রাইডার্স ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দা ম্যাচ: শেখ মেহেদি হাসান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com