এফএনএস: বাংলাদেশে টেকসই পোশাক উৎপাদনের সুযোগ ও সম্ভাবনা বিষয়ে আগামী ১৬ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রদর্শনী। সম্মেলনে বিভিন্ন সেশনে আলোচনা করবেন দেশি-বিদেশি ৬০ জনেরও বেশি বক্তা। এছাড়াও অংশ নেবে ২০টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের আয়োজনে সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরামের এই চতুর্থ সংস্করণের সম্মেলনে আলোচ্যসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে সার্কুলারিটি, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, ক্লাইমেট অ্যাকশন, নবায়নযোগ্য জ¦ালানির দিকে অগ্রযাত্রা ও মানবাধিকার বিষয়ক ডিউ ডিলিজেন্স ইত্যাদি। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে ফ্যাশন সোর্সিং কার্যনির্বাহীদের কাছে সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন হিসেবে বিবেচিত। চতুর্থ সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরামের বক্তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, মাননীয় বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী। এছাড়াও বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের প্রধান ও রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, বিজিএমইএ সভাপতি এবং জায়ান্ট গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান, বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি এবং স্টার্লিং গ্রæপের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএ-র সহ-সভাপতি এবং ফতুল্লা অ্যাপারেলসের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে শামীম এহসান, কেডিএসএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আল-আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড এর চেয়ারম্যান সেলিম রহমান, এপিক গ্রæপের নির্বাহী চেয়ারম্যান রঞ্জন মাহতানী, লডস ফাউন্ডেশনে শ্রম অধিকার কর্মসূচির প্রধান নওরীন চৌধুরী, আন্তর্জাতিক শ্রম সস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটি আইনেনসহ আরও অনেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম ২০২৩-এ পোশাক প্রস্তুতকারক, সরকারি কর্মকর্তা এবং নীতিনির্ধারক, গ্রিন ফাইন্যান্স নিয়ে কাজ করা পেশাদার, মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ, সবুজ উৎপাদন ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, ফ্যাশন সাসটেইনেবিলিটি এবং সোর্সিং দল এবং ফ্যাশন সাপ্লাই চেইনে কাজ করা এনজিওদের একই ছাদের নিছে নিয়ে এসেছে। যাতে করে সবাই কিভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের যাত্রা আরও টেকসই হয় সে বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক আলোকপাত করতে পারেন। পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য সম্মেলনে প্যানেল আলোচনা, সেমিনার, সবুজ প্রবৃদ্ধির উপর প্রদর্শনী এবং অংশীজনদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং এর ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে তারা আরও জানিয়েছেন, সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন ফ্যাশন শিল্পে সাসটেইনেবিলিটি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সময় এসেছে। যেখানে একসময় সাসটেইনিবিলিটি ছিল কেবল ঐচ্ছিক চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়, বিগত দুই বছরে তা অবশ্যপালনীয় আইন-কানুনে রূপ নিয়েছে। ফলে সাসটেইনিবিলিটি পারফরমেন্সে উন্নতি করতে ব্যর্থ হলে সম্মুখীন হতে হবে শাস্তির, যার মানে ফ্যাশন ব্র্যন্ডগুলির জন্য সাপ্লাই চেইনে ডিই ডিলিজেন্স মেনে চলা এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরামের আয়োজক মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘প্রত্যেক বড় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর নিকট আলোচনার বিষয় এখন একই, আর সেটি হল ‘নেট জিরো’ লক্ষ্য পূরণের জন্য আমরা কীভাবে আমাদের কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারি। বছরের পর বছর ধরে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর ব্যাপারে তাদের নিজস্ব খুচরা বিক্রয় কার্যক্রমের উপর মনোযোগ দিয়ে আসছিল। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায় যে, ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্বন নিঃসরণ হয় ৩ নম্বর স্তরে (টায়ার-৩) অর্থাৎ সাপ্লাই চেইনে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং সাসটেইনিবিলিটি পারফরমেন্সে ভালো করার বিভিন্ন চ্যলেঞ্জগুলো ও পন্থা নিয়ে দিক নির্দেশনামূলক আলোচনা ও মতবিনিময় করার একটি কার্যকর ক্ষেত্র তৈরি করেছে সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম। আর এ কারণেই এ সম্মেলন সবার কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ণ। সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম ফ্যাশন এবং টেক্সটাইল শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকল গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের পাশাপাশি নীতিনির্ধারক এবং ব্যবসায়ীদের একই জায়গা নিয়ে এসেছে; যাতে করে সবাই মিলে এ শিল্পর সকল সমস্যার সমাধান বের করে তা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’