এফএনএস স্পোর্টস: মাসখানেক আগেও দলে যিনি হয়ে পড়েছিলেন ব্রাত্য, সেই উসমান দেম্বেলে বদলি হিসেবে নামার কিছুক্ষণ পরই দুর্দান্ত এক গোল করলেন। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিল বার্সেলোনা। সেখান থেকে তাদের আর নাড়াতে পারল না আথলেতিক বিলবাও। টানা তৃতীয় ম্যাচে গোল উৎসব করল শাভি এরনান্দেসের দল। কাম্প নউয়ে গত রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৪-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াংয়ের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দেম্বেলে। বাকি দুই গোল করেন লুক ডি ইয়ং ও মেমফিস ডিপাই। গত রোববার লা লিগায় ভালেন্সিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার ইউরোপা লিগে নাপোলিকে ৪-২ ব্যবধানে হারায় কাতালান ক্লাবটি। আবারও প্রতিপক্ষের জালে চার বার বল পাঠিয়ে মৌসুমে প্রথমবারের মতো টানা তিন জয়ের স্বাদ পেল বার্সেলোনা। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে প্রথম উলেখযোগ্য সুযোগটি পায় বার্সেলোনা। কিন্তু ফেররান তরেসের পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মারেন গাভি। অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে দুই উইং দিয়ে আক্রমণ শানানোর চেষ্টায় থাকা দলটি ৩২তম মিনিটে আরেকটি ভালো সুযোগ পায়। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট নেন ফেররান। স্বাগতিকদের এই দুই প্রচেষ্টার মাঝে ২৮তম মিনিটে বিলবাও ভালো একটি আক্রমণ করে। ডি-বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে জোরাল শট নেন আসিয়ের, সোজাসুজি শট ঠেকাতে সমস্যা হয়নি গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। গত সপ্তাহের ওই দুই দুর্দান্ত জয়ে নতুন শুরুর জানান দেওয়া বার্সেলোনা এগিয়ে যায় ৩৭তম মিনিটে। কর্নারে জেরার্দ পিকের হেড ক্রসবারে বাধা পাওয়ার পর ফিরতি বল দারুণ ভলিতে জালে পাঠান অবামেয়াং। বার্সেলোনার জার্সিতে গত রোববার ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে গোলের খাতা খোলার ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার পর নাপোলির জালেও বল পাঠান অবামেয়াং। দ্বিতীয়ার্ধেও অধিকাংশ সময় বল দখলে রাখার পাশাপাশি আক্রমণে চাপ ধরে রাখে বার্সেলোনা। কিন্তু কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না তারা। ৬৩তম মিনিটে একজনকে কাটিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান ফেররান। কিন্তু ডি-বক্সে ঢুকেই তার নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন উনাই সিমোন। ৬৭তম মিনিটে ফেররানের বদলি নামার ছয় মিনিট পরই চমৎকার গোলটি করেন দেম্বেলে। ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে এক ঝটকায় ডিফেন্ডার ইনিগোর বাধা এড়িয়ে দুরূহ কোণ থেকে বুলেট গতির শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। শেষ দিকে তাদের সামনে আর দাঁড়াতেই পারেনি বিলবাও। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে দেম্বেলের ডান দিক থেকে বাড়ানো ক্রসে অরক্ষিত লুক ডি ইয়ং হেডে ব্যবধান আরও বাড়ান। আর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে কাছ থেকে শেষ গোলটি করেন আরেক বদলি ফরোয়ার্ড মেমফিস। বিলবাওয়ের বিপক্ষে মৌসুমের প্রথম দুই দেখায় একবারও জিততে পারেনি বার্সেলোনা। লা লিগায় ১-১ ড্রয়ের পর গত জানুয়ারিতে দলটির বিপক্ষে হেরেই কোপা দেল রের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয় তারা। এবারের জয়ে সেই ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দিতে পারল দলটি। দারুণ এই জয়ে লিগ টেবিলেও তৃতীয় স্থানে থাকা দলের সঙ্গে ব্যবধান কমাল বার্সেলোনা। ২৫ ম্যাচে ১২ জয় ও ৯ ড্রয়ে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে তারা। এক ম্যাচ বেশি খেলা রিয়াল বেতিসের পয়েন্ট ৪৬। ২৬ ম্যাচেই ৬০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের চেয়ে ৬ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে সেভিয়া। আট নম্বরে আথলেতিক বিলবাওয়ের পয়েন্ট ৩৭। কিছুদিন আগেও ধুঁকতে থাকা বার্সেলোনা অবশেষে যেন নিজেদের খুঁজে পেয়েছে। অন্তত তাদের সা¤প্রতিক পারফরম্যান্সে সেটাই ফুটে উঠছে।