২৪ পরগনার ইতিহাসে ভারতের সুন্দরবনের বর্তমান আয়তন ৪,২৬৪ বর্গ কিঃ বাংলাদেশের ৪১০৯ বর্গ কিঃ মিঃ মোট ৮৩৭৩ কিঃ মিঃ ৮৮.৫১-৯১.৩র্০র্ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ, ২১.৩-২২.৩র্র্০র্ উত্তর অক্ষাংম চওড়া উত্তর দক্ষিনে ৫০ মাইল বা ৮০ কিঃ মিঃ বলে উলেখ করা হয়েছে।
সুন্দরবনের উত্থান-পতনঃ
পৃথিবীর তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল। সৃষ্টির আদিতে পৃথিবীত নিরাকার ছিল। এই নিরাকার শব্দটি অধুনা দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়। (১) নাই আকার যাহার= নিরাকার অর্থা শুন্যময়। (২) নিরাকার অর্থ-জলবৎ বা তরলীকৃত। ধীরে ধীরে ঠান্ডা ঘণিভূত হয়ে তা স্থলে পরিণত হয়েছে। বিজ্ঞান বলে এ্যামিবা নামক (একাকোষী) জলজ কীট থেকে মানব প্রাণের সঞ্চার। অতএব সে সময় কোন স্থলও সৃষ্টি হয়েছিল কিনা কে জানে। আবার হিন্দু শাস্ত্র প্রমাণ দিচ্ছে-মধু কৈটভের মেদ থেকে মোদিনী সৃষ্টি। এখানে মধু অর্থে-জল আর কৈটভ অর্থে- ঐ জলে কীটের মরা, পচা, গলা, দেহাবশিষ্ট থেকে মেদিনী বা পৃথিবী সৃষ্টি। কীট থেকেই কৈটভ কথার উৎপত্তি। শাস্ত্রে আরও বলে ব্রহ্মের ললাটের এক বিন্দু ঘাম থেকে ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর সৃষ্টি। যে যাই হোক না কেন মানব সৃষ্টির অনেক পূর্বে যে সাগর, মহাসাগর, উপসাগর পাহাড়-পর্বত গিরিগুহা এবং স্থাবর জঙ্গমাদি সৃষ্টি হয়েছিল একথা সতঃসিদ্ধ। তাই সুন্দরবনও এমন এক সময় সৃষ্টি হয়েছিল যে সময় এখানে কোন মানব প্রাণের অস্তিত্ব ছিল না। একটি দৃষ্টান্তে হয়তো বা বিষয়টি অনেক সহজ বোধ্য হতে পারে। এক সময় ভারত বর্ষের আন্দামান দ্বীপ পুঞ্জে কোন জনবসতি ছিল না। ভারত বর্ষের অমার্জিত অপরাধীদেরকে ফাঁসি না দিয়ে দীবান্তর করা হত এবং আন্দামান দ্বীপ পূঞ্জে পাঠানো হত। সেখানে বুনো ফল খেয়ে তারা বেঁচে থাকত এবং বাঁচার তাগিদে ফল ও ফসল উৎপাদন করত। কালক্রমে চোরে চোরে মাসতুত ভাইরাই আন্দামানের বাসিন্দা হয়ে ওঠে। এখন সেখানে জেলা শহর গড়ে উঠেছে এবং দ্বীপান্তরিত অপরাধীদের বংশধররাও সৎস্বভাবের হয়ে উঠেছে। সুন্দরবনেরও পরিনতি অনেকটা সেই রুপ হয়ে উঠেছে।