পরশুরাম একবিংশবার ক্ষত্রিয় নিক্ষত্রিয় করলে দুর্বল কাপুরুষ ক্ষত্রিয়গণ যুদ্ধে প্রাণ না দিয়ে প্রাণ ভয়ে সুন্দরবন অঞ্চলে এসে পলায়ন করে। ৭৬এর মন্বন্তরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যুদ্ধ বিগ্রহ মানুষ সুন্দরবনে এসে পলাতক হয়। কোথাও জনসংখ্যা বেড়ে গেলে স্থান সংকুলান ও খাদ্যের সন্ধানে তারা নতুন নতুন নির্বিঘœ, নির্র্ঝঞ্ঝাট ও নিরাপদ স্থান বেছে নেয়। এই হিন্দুরাও তো এক সময় সিন্ধু নদের অববাহিকায় হরপ্পা ও লারকানা জেলায় বসবাস করত। তাদের বংশ পরস্পরার অনেক উত্তরসুরীও যে বর্তমান এদেশে নেই এমন কথা বলা চলে না। আরাকান অধিবাসীরাও এক সময় এদেশে এসেছিল। আবার কেহ কেহ বা সুন্দরবনের অফুরন্ত সম্পদের ভান্ডার লুটপাট করতে এদেশে আসে। লবন প্রস্তুতকারী চন্ড ভন্ড নামে এক জাতিও এদেশে এসে বসবাস করে। তাদের স্থাপিত বসতি স্থানকে চন্দ্র দ্বীপ বলা হত। এভাবে শক হুন ঘুন পার্শ্বিক, মারাঠা, বর্গী, মগ, পর্তুগীজ জলদস্যু, মালাকান সেন বংশ, পাল বংশ, দ্রাবিড় আর্য-অনার্য, মুগল তুর্কী হয়ে ইংরেজ শাসনামল পর্যন্ত নানা চড়াই উৎরাই ও উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের বিবর্তনের ধারা বর্তমান অবস্থানে এসে পৌছেছে। সমুদ্র স্রোত যেমন সমুদ্রের আবর্তে পড়ে ফেনাইত হয় তেমনি দ্রাবিড় আর্য-অনার্য শুদ্রানি ব্রাহ্মনের সংমিশ্রিত রক্তে বর্তমান বাঙালী জাতির জীবন ধারা।