দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ আবারও তাপদাহের কবলে জনপদ। অস্বস্থির গরম, ভ্যাপসা গরম, প্রখর সূর্যতাপ, লু-হাওয়া মাঠ ঘাট শুকিয়ে যাওয়ার অতিক্রম এক কথায় বৈশাখের আগুনে, প্রচন্ড তাপে পুড়ছে জনমানব। সর্বত্র হ্যাসফ্যাস, কোথাও স্বস্তির সুবাতাস নেই। এমন দৃশ্য সারাদেশেই। গ্রীষ্মের অতি তাপের বিকিরনে উদভ্রান্ত, দিকহীন জনজীবন এরই মাঝে প্রকৃতির নিষ্ঠুরতার আগমনী বার্তা, মানুষে মানুষে আতঙ্ক বাড়ছে, ধনীর অট্টালিকা হতে গরীবের পুর্ণ কুটিরে, মেঠো পথে, সর্বত্র ঘুর্ণিঝড় আতঙ্ক, উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। আবহাওয়া দপ্তর গ্রীষ্মের তাপদাহকে নিয়ে সুখবর দিতে না পারলেও আগামী কাল হতে তাপদাহের তীব্রতা কিছুটা হ্রাসের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় মোচা রবিবার দুপুরের পর বাংলাদেশের উপকুল অতিক্রম করবে এবং নিন্ম চাপের প্রভাবে শনিবার রাতে বা তার আগে বৃষ্টি এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হতে পারে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় অন্তত দুই মাস যাবৎ তাপদাহের তীব্রতা জেকে বসেছে। পক্ষকাল পূর্বে দুই তিন দিন সামান্য বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া কিছুটা স্বস্তি আনায়ন করলেও তা ছিল যৎসামান্য সময়ের জন্য। মাঠ ঘাট ফেটে যাওয়ার মোখ্যম তাপ তার বিকিরন ঝড়াচ্ছে। পুকুরের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে, চিংড়ী ঘেরের পানি শুন্যতায় চিংড়ী উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। প্রচন্ড রৌদ্র হতেই তাপে মাঠে ঘাটে লোকজন কাজ করতে পারছে না। সকাল হতেই সূর্যের আলোর তীব্রতা পশ্চিম আকাশে সূর্য ডুবে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে লোকজন পুকুরের পানিতে গোসল করতে পারছে না। এক দিকে পুকুরে পানি শুন্যতা অন্যদিকে প্রখর রৌদ্রে পুকুরের পানি অত্যাধিক গরম হওয়া, গ্রীষ্মের তাপদাহে মৌসুমী ফলের উপস্থিতিতে, বাজারের আম, তরমুছ, তালের শাদ বিক্রি বেড়েছে। পিপাসায় কাতর জনসাধারন শরবত সহ ঠান্ডা পানীয় সংগ্রহ করছে। বাজারের খোলা যায়গায় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরী লেবুর শরবত পান করতেও দ্বিধা করছে না পিপাসায় কাতররা। শহরের প্রাণচাঞ্চল্য, কর্মব্যস্ত জনজীবন প্রচন্ড গরমে ছন্দ পতন ঘটেছে, খুলনা রোড, হাটের মোড়, পাকাপুল, নিউ মার্কেট চত্বর দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে, শহরের বড় বাজারেও লোক সমাগম যৎসামান্য, জেলা শহরের পাশাপাশি গ্রামীন জনপদের হাট বাজার গুলোতেও লোক শুণ্যতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ তথা গাড়ী ভর্তি যাত্রীদের দৃশ্য চোখে পড়লো। তাল পাখার উপস্থিতি শহর হতে গ্রামের বাজার গুলোতে বিস্তৃত হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত প্রচন্ড তাপের কিরন হিট স্টোকের ঘটনা ঘটাতে পারে আর এজন্য অতি তাপ, তাপদাহে নিতান্তই প্রয়োজন ব্যতিত ঘরের বাইরে বের না হওয়াই শ্রেয়। গত দুই তিন দিন যাবৎ তাপদাহের অসয্য, অসহনীয়, অস্বস্তির উপস্থিতির পাশাপাশি ধেয়ে আসা ঘুর্ণিঝড় জনজীবনকে বিচলিত করেছে। সাতক্ষীরা বারবার প্রকৃতির নিষ্ঠুরতায় বিপর্যস্থ হয়েছে। জান মালের ক্ষতি হয়েছে। আর তাই উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক সর্বাধিক, জেলা প্রশাসনের পক্ষহতে ইতিমধ্যে ঘুর্ণিঝড় মোচা মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা হয়েছে। সাতক্ষীরায় জনমানুষের চিরচেনা ঘুর্ণিঝড় অতীতের ন্যায় এবারও স্বার্থক ভাবে মোকাবিলা করবে এমন প্রত্যাশা জনসাধারনের। তাপদাহ আর ঘুর্ণিঝড় উভয় সাতক্ষীরার বিশলক্ষাধীক মানুষকে অসহনীয় বিপদ জনক, আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে ফেলছে।