শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠক আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা দেশের দুই সমুদ্রবন্দরে চালু হচ্ছে কনটেইনারবাহী জাহাজ চলাচল আদালতে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে স্বামী দাবি করলেন মডেল মেঘনা বজ্রপাতে বিএনপি নেতার মৃত্যু রোববার আবার বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতারে যাচ্ছেন চার নারী খেলোয়াড় দেবহাটার ঘরে ঘরে ছাগল পালন বাণিজ্যিক ভাবে চলছে চাষ \ খামার দেখভালে এগিয়ে মা বোনেরা শ্যামনগরে পরীক্ষায় নকলের দায়ে ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার দায়িত্বহীনতায় ১২ শিক্ষক অব্যাহতি মাহফিলের টাকা গ্রহণ করে বক্তা না আসায় আদালতে মামলা

রোদ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার উপায় কী?

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩

এফএনএস লাইফস্টাইল: রোদের তাপমাত্রা বাড়ছে দিন দিন। ক্ষণে ক্ষণে মেঘ জমে ঈশান কোণে। মেঘ কেটে আবার গনগনে রোদ। ভর দুপুরের গরম হাওয়া শরীর অস্থির করে তুলে। এই রোদে বাইরে বের হলে এবং অনেকটা সময় রোদে থাকলে মানবদেহে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা বাহ্যিক কিংবা অভ্যন্তরীণ হতে পারে। তাই রোদের প্রভাব থেকে বাঁচতে আপনাকে নিতে হবে সামান্য প্রস্তুতি। আর সে প্রস্তুতির কথা জানাচ্ছেন শাহিনুর আলম কলি।
উত্তরোত্তর মানুষের ব্যস্ততা বাড়ছে। সকাল বা দুপুরে-যেকোনো সময় কাজের তাগিদে বাইরে বের হতেই হয়। কারণ রোদের নাগাল থেকে বাঁচতে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। তবে রোদের সাথে আপোশ নয়। কড়া রোদে শরীর ও ত্বকের সুরক্ষায় রোদচশমা, পানির বোতল, স্কার্ফ, টুপি আর সঙ্গে রাখুন একটা ছাতা। এখানেই শেষ নয়। রোদে ভালো থাকতে হলে আপনাকে বাইরে বের হওয়ার আগে আরও কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। সানস্ক্রিন ব্যবহার, ওয়েট টিস্যু সঙ্গে নেওয়া, হালকা সুতি পোশাক পরা এবং গোসলের সময় কিছুটা সচেতনতা।
লোকে বলে মেয়েরা নাকি ত্বকের ব্যাপারে সচেতন। হ্যাঁ, দীর্ঘ দিন সৌন্দর্য ধরে রাখতে মেয়েরা রোদের ব্যাপারে বেশ সচেতন। তবে ছেলেরাও এখন পিছিয়ে নেই সৌন্দর্যের প্রশ্নে। আসলে রোদ থেকে বাঁচতে অবহেলার সুযোগ নেই। কেননা সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি ত্বকে মেলানিনের মাত্রা বাড়িয়ে ত্বকের রং কালো করে দেয়। প্রচÐ গরমে ঘাম হয়। ঘামাচি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণও হতে পারে এ সময়। ত্বকে লালচে ভাব দেখা দেয়। মুখের ব্রণ বেড়ে যায়। হাতে পায়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ পড়তে শুরু করে। বাহ্যিক এসব সমস্যার সাথে সাথে শরীরের অভ্যন্তরে রোদের খারাপ প্রভাব পড়ে। কড়া রোদে ডিহাইড্রেশন হয়ে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ঘামে মাথাব্যথাসহ সর্দি-কাশি বেশি হয়। সাধারণত সকাল নয়টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা থাকে বেশি।
এই রোদে বাইরে বের হওয়ার সময় আপনাকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। রোদ থাক বা না থাক, বাইরে বের হওয়ার ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। বাজারে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর যুক্ত লোশন, ক্রিম, পাউডার, স্প্রে পাওয়া যায়। আপনার প্রয়োজন মতো ইউভিএ ও ইউভিভি প্রতিরোধক সানস্ক্রিন কিনে নিন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাট ধরনের সানস্ক্রিন এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার-সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। আর মিশ্র ত্বকের জন্য অল স্কিন টাইপ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যায়। শুধু মুখে নয়, হাতে পায়ে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। তার আগে পানিতে কয়েক ফোঁটা বেনজয়েল অ্যাসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে গোসল করলে ঘামের দুর্গন্ধ হবে না এবং রোদে ত্বক কালচে হবে না। ওষুধের দোকানে পেয়ে যাবেন এই তেল। রোদে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়।
বাতাসের সাথে প্রচুর ধুলাবালি ঘুরে বেড়ায়। এসব ময়লা ত্বকে আটকে ব্রণ কিংবা রেশ হতে পারে। তাই সব সময় ত্বক পরিষ্কার রাখুন। প্রতিদিন কয়েক বার ঠাÐা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ওয়েট টিস্যু দিয়েও মুখ পরিষ্কার করা যায়। গরমে বেশি করে পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন আট থেকে দশ গøাস পানি একটু পর পর পান করা উচিত। এতে ডিহাইড্রেশন রোধ হবে এবং ত্বক ভালো থাকবে। গরমে শরীর সুস্থ রাখতে প্রচুর রসালো ফল আর সবজি খাওয়া উচিত। হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আপনার রোদচশমা যেন অবশ্যই শতভাগ সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি রোধ করতে পারে, কেনার সময় সেদিকে নজর রাখুন।
বাইরে বের হলে ব্যাগে রাখা ছাতাটি ব্যবহার করতে আলসেমি করবেন না। ছেলেরা হ্যাটজাতীয় টুপি আর মেয়েরা স্কার্ফ পরতে পারেন। যাদের ত্বক পাতলা, বাইরে দীর্ঘ সময় থাকলে তাদের দুই ঘণ্টা পর পর নতুন করে ত্বকে সানবøক লাগাতে হবে। কিছু ফেস পাউডার সানবøকের কাজ করে। তবে দিনের রোদে তরল ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো। এই রোদে ব্যবহূত প্রসাধনী মানসম্মত কিনা সেদিকে সচেতন থাকতে হবে। রোদ থেকে ঘরে ফিরে ঠাÐা পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। চাইলে টাটকা অথবা ফ্রিজে রাখা ঠাÐা টমেটো দশ মিনিট ত্বকে লাগাতে পারেন। ত্বক ভালো থাকবে। তবে রেশ রয়েছে যাদের ত্বকে, তারা শুধু ঠাÐা পানি বা ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন। ত্বক লালচে হয়ে জ¦ালা করলে বরফ ঘষতে হবে। ত্বক ভালো রাখার জন্য সপ্তাহে এক থেকে দুই বার প্রাকৃতিক ফেশিয়াল প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

দিনটা শুরু হবে চায়ে, না কফিতে? জানুন কোনটা ভালো সকালের শুরুটা কেমন হয়, পুরো দিনের ওপর তার একটা ছাপ পড়ে। কেউ সকালে উঠে চায়ের কাপ হাতে না পেলে যেন দিনই শুরু করতে পারেন না, আবার কেউ আছেন কফির তীব্র গন্ধ ছাড়া সকাল কল্পনাই করতে পারেন না। এই দুটি পানীয় শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং অভ্যাস, সংস্কৃতি এবং মানসিক প্রশান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—সকালের জন্য কোনটা ভালো? চা নাকি কফি? এই নিয়ে নানান জনের নানান মত। চাপ্রেমীরা বলবেন চায়ের কথা তেমনি কফিপ্রেমীদের ভোট থাকবে কফিতে। আসুন জেনে নেই আসলে স্বাস্থ্যকর দিক থেকে কোনটি সবচেয়ে ভালো। বিশ^জুড়ে কোটি কোটি মানুষ দিনের শুরু করে এক কাপ চা দিয়ে। বিশেষ করে উপমহাদেশে চা শুধু পানীয় নয়, এক ধরনের সংস্কৃতি। আমাদের দেশে সকালে বাসার বারান্দায় বসে কড়া লাল চা কিংবা দুধ চা পান করার অভ্যাস অনেক পুরোনো। চায়ে উপস্থিত থাকে ক্যাফেইন, তবে তা কফির তুলনায় অনেক কম। এজন্য চা ধীরে ধীরে কাজ করে, মাথা ঠান্ডা রাখে এবং এক ধরনের প্রশান্তি দেয়। এতে থাকা এল—থিয়ানিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মনোযোগ বাড়ায়। যাদের সকালে অতিরিক্ত উত্তেজনা বা নাড়া—চাড়া একদম পছন্দ নয়, তাদের জন্য চা একটি আদর্শ পানীয় হতে পারে। অন্যদিকে কফি হচ্ছে সকালের সেই পানীয়, যা অনেকের চোখ খুলে দেয়। যাদের সকালে কাজে নেমে পড়তে হয় দ্রুত, তাদের কাছে কফি যেন এক অলৌকিক শক্তির উৎস। এতে থাকা বেশি পরিমাণ ক্যাফেইন খুব দ্রুত কাজ করে, মনোযোগ বাড়ায়, ক্লান্তি দূর করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কাপ ব্ল্যাক কফি সকালবেলা শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে এবং ফ্যাট বার্নিংয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাই যারা স্বাস্থ্য সচেতন, তাদের অনেকেই সকালে কফিকেই বেছে নেন। কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর? চা এবং কফি—দু’টোর মধ্যেই রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা। চায়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ক্যাটেচিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস হৃদরোগ, ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। গ্রিন টি তো একেবারে স্বাস্থ্য সচেতনদের প্রিয়। অন্যদিকে কফির মধ্যেও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নানা উপকারী উপাদান যা টাইপ—২ ডায়াবেটিস, পারকিনসনস ডিজিজ এবং অ্যালজাইমার্স প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। তবে একটা বড় পার্থক্য হলো—কফির অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে উদ্বেগ, ঘুমের সমস্যা, হৃদকম্পন ইত্যাদি হতে পারে। অন্যদিকে চা তুলনামূলকভাবে বেশি সহনীয় এবং দীর্ঘমেয়াদে কম পাশ^র্প্রতিক্রিয়ামূলক। জীবনধারা ও অভ্যাস নির্ভর সকালে চা ভালো, না কফি—এই প্রশ্নের উত্তর অনেকাংশেই নির্ভর করে ব্যক্তির জীবনধারা ও স্বাস্থ্যের ওপর। কেউ যদি খুব সকালে উঠে ধীরে ধীরে দিন শুরু করেন, কিছুক্ষণ বই পড়ে, প্রার্থনা করেন বা নিজেকে সময় দেন—তাদের জন্য চা একটি উপযুক্ত সঙ্গী। আবার অফিস শুরু হতেই যদি ছুটতে হয়, মাথা ঠান্ডা রাখতে না পারলে সমস্যা হয়, তবে এক কাপ কফি প্রয়োজনীয় জ্বালানির মতো কাজ করে। অনেকেই আবার দুটোই পছন্দ করেন—সকালে কফি, বিকেলে চা। এতে শরীর ও মন দুটোকেই যথাযথভাবে সাড়া দেওয়া যায়।চা বনাম কফি, এই লড়াইয়ে নির্দিষ্ট করে জেতার কেউ নেই। বরং আপনার শারীরিক চাহিদা, মানসিক অবস্থা, এবং সকালের অভ্যাস—এই তিনটাই ঠিক করে দেবে কোনটা আপনার জন্য উপযুক্ত। কেউ হয়তো সকালে এক কাপ লাল চা নিয়ে প্রকৃতির শব্দে মুগ্ধ হন, আবার কেউ কফির তীব্রতায় জেগে উঠে নতুন দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হন। দিনের শুরুটা হোক যেভাবেই চা বা কফি, দুটোই যদি আপনাকে ইতিবাচকতায় ভরিয়ে তোলে, তবে সেটাই আপনার জন্য সেরা সকাল।

© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com