স্পোর্টস ডেস্ক \ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন। এ খবর দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ফক্স স্পোর্টস। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই কিংবদন্তি। এর আগে শুক্রবার সকালে পরপারে পাড়ি জমান রডনি মার্শ। গত সপ্তাহে হার্ট অ্যাটাকের পর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মার্শ। ৫২ বছর বয়সী ওয়ার্নের ম্যানেজমেন্ট টিম এক বিবৃতিতে বলেছে, শনিবারের (অস্ট্রেলিয়ান সময় অনুযায়ী) প্রথম প্রহরে থাইল্যান্ডের কোহ সামুইয়ের একটি বাংলোতে হার্ট অ্যাটাকের কারণে মারা গিয়েছেন ওয়ার্ন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজের বাংলো বাড়িতে নিথর অবস্থায় পাওয়া যায় শেন ওয়ার্নকে। মেডিকেল স্টাফদের সর্বাত্মক চেষ্টার পরেও ফেরানো যায়নি তাকে। তার পরিবার আপাতত বিষয়টি নিয়ে খোলাখুুলি কিছু বলতে চাইছে না। পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’ ওয়ার্নের মৃত্যুর খবরে স্তম্ভিত ক্রীড়া দুনিয়া। ক্রিকেট, ফুটবল সবখানেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সাবেক বর্তমান খেলোয়াড়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। পাকিস্তানি পেসার শোয়েব আখতার বলেছেন, ‘মাত্র শুনলাম কিংবদন্তি ওয়ার্ন আর নেই। আমি কতটা ব্যথিত ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।’ সাবেক ইংলিশ ফুটবলার গ্যারি লিনেকার লিখেছেন, ‘শেন ওয়ার্ন মারা গেছে শুনে আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। সর্বকালের সেরা স্পিনার। বিশ্বাস করতে পারছি না। শান্তিতে থাকো শেন।’ ভারতীয় ক্রিকেটার আজিঙ্কা রাহানে বলেন, ‘ওয়ার্নের চিরবিদায়ের খবরে আমি স্তম্ভিত। ক্যারিয়ারের শুরুতে তার সঙ্গে আমার কিছু অসাধারণ মুহূর্ত রয়েছে। শান্তিতে থাকো লিজেন্ড!’ ১৪৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৭০৮টি উইকেট নিয়েছেন শেন ওয়ার্ন। যা টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৪ ওয়ানডেতে তার শিকার ২৯৩ উইকেট। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ম্যাচসেরা হন ওয়ার্ন। ১৯৯২ সালে সিডনিতে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ওয়ার্নের। পরের বছর ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন প্রথম ওয়ানডে। সাদা পোশাকে সর্বশেষ ম্যাচ ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। যেখানে শুরু, সেই সিডনিতেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন তিনি। দুই বছর পর মেলবোর্নে আইসিসি বিশ্ব একাদশের হয়ে এশিয়ান একাদশের বিপক্ষে খেলেন ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। গত ২৪শে ফেব্র“য়ারি রডনি মার্শ বুলস মাস্টার্স দাতব্য গোষ্ঠীর একটি ইভেন্টের জন্য বুন্দাবার্গে যান। পথিমধ্যে হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে বুলস মাস্টার্সের সংগঠক জন গ্লানভিল এবং ডেভিড হিলিয়ার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে কোমায় চলে যান রড মার্শ। এরপর তার ছেলে পল গণমাধ্যমকে জানান, তার পিতা (মার্শ) সেরে উঠবেন কি না সেটা স্পষ্ট হতে সময় লাগবে। পল বলেছিলেন, ‘তিনি এখন মৃত্যুশয্যায় রয়েছেন। এই মুহূর্তে শুধুই অপেক্ষার এবং সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাইনি আমরা।’ এরপর শুক্রবার সকালে অ্যাডিলেডের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রডনি মার্শ। মৃত্যুর সময় স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন তিনি।