দৃষ্টিপাত ডেস্ক \ দরপতন আর মুল্য হ্রাসের আম বাজার এবার মুল্যবৃদ্ধির আলোয় আলোকিত হয়েছে। শেষ মৌসুমে আমের দর পাওয়ায় চাষীরা লাভবান হচ্ছে, বিগত দিনের লোকসান কোন কোন ব্যবসায়ী পুষিয়ে নিচ্ছে। দর বৃদ্ধির এই সুসময়ে অবশ্য বঞ্চিত হচ্ছে ইতিপূর্বে আম বিক্রি করা ব্যবসায়ীরা। জেলার দেবহাটার অন্যতম আম চাষী আবু সালেক জানান যে সকল ব্যবসায়ী আমের দরপতনের সময় গুলোতে গাছের আম না ভেঙ্গে বাজার ওঠা তথা মুল্যবৃদ্ধির আশায় আম ভাঙ্গা হতে বিরত ছিল সেই সকল ব্যবসায়ীরাই কেবল বর্তমানে আমের মুল্যবৃদ্ধির সুফল পাচ্ছে এবং লাভবান হচ্ছে। সাতক্ষীরায় গত কয়েক বছর যাবৎ বানিজ্যিক ভিত্তিতে আম চাষ হচ্ছে যে কারনে জেলায় শত শত আম বাগানের পাশাপাশি যে যার বাড়ীতে পতিত জমি বা বসতবাড়ীর আশপাশে আম বাগান তৈরী করে আম উৎপাদন করে চলেছে। চলতি আম মৌমুসের শুরুতে এক শ্রেনির অসাধু আম ব্যবসায়ী অপরিপক্ক আম গাছ থেকে ভেঙ্গে তাতে নানান ধরনের রাসায়নিক পদার্থের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে কৃত্রিম ভাবে আম পাকিয়ে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করতে থাকায় এবং তা প্রচার পাওয়ায় দৃশ্যতঃ সাতক্ষীরার আমের সুনামের পরিবর্তে বদনাম হতে থাকে। ইতিমধ্যে আম ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যে মাসের প্রথম সপ্তাহে গোবিন্দ ভোগ ও দ্বিতীয় সপ্তাহে হীমসাগর আম ভাঙ্গার ও বাজার জাত করনের সময় আসলে আম চাষীরা আম ভাঙ্গতে শুরু করে। কিন্তু বাজার দাম সর্বনিন্ম পর্যায়ে পৌছায়। মৌসুমে হীম সাগর কেজি প্রতি কাঁচা অন্তত ৪০/৪২ টাকা এবং পাকা কেজি প্রতি ৫০/৫৫ টাকা হওয়ার কথা একই ভাবে ন্যাংড়া আমের মুল্য অনুরুপ থাকার কথা কিন্তু হীম সাগর কেজি প্রতি কাঁচা ১৫/২০ ও পাকা ২৫/৩০ টাকার মধ্যে সীমা বদ্ধ থাকে। আম এমনই এক ফল যা ইচ্ছা করলেই গাছে রাখা যায় না, হয়ত সপ্তাহ বা দশ দিন দেরীতে ভাঙ্গানো যায়। আমের বাজার মুল্য নিন্মমুখি হওয়ায় তথা দরপতনের ঘটনা ঘটায় আম চাষীরা ব্যাপক ভিত্তিক লোকসানের মুখে পড়ে, সাতক্ষীরার আম নির্ভর অর্থনীতিতে ছন্দ পতন ঘটে। আম চাষী সহ আম ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের মাঝে হাতাশা বিরাজ করতে থাকে। সাতক্ষীরায় গত কয়েক বছর যাবৎ বানিজ্যিক ভিত্তিতে আম চাষ হয়ে আসছে রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরার আম চাষে বিনিয়োগ করায় দৃশ্যতঃ আম চাষ এবং আম ব্যবসায় গতি সঞ্চার হয়, মৌসুমের শুরুতে জেলার আম বাগান গুলোতে কেন্দ্র করে প্রানের সঞ্চার ঘটে এবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না কিন্তু আমের মুল্য হ্রাসের কারন হেতু আম বাগান গুলোতে হতাশার ছায়া বিরাজ করে। সাতক্ষীরার এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীদের কারনে এবং আবহাওয়াগত কারনে আমের বাজারে দরপতনের যে ছোয়া দেখা দেয় তাতে সাতক্ষীরার আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ব্যবসায়ী ও চাষীদের একটি বড় অংশ ব্যাংক সহ এনজিও এবং ব্যক্তি মালিকানা হতে ঋন নিয়ে আম চাষে নামে বিধায় আমের মুল্য হ্রাসের নেতিবাচক প্রভাবে তারা লোকসানের মুখে পড়ে। শেষ মৌসুমে এসে আমের বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে তবে বাগানগুলোতে পর্যাপ্ত আমের উপস্থিতি নেই। গত কয়েকদিন যাবৎ কাঁচা হীমসাগর ৫০/৫২ এবং পাকা ৬০/৬৫ টাকায় কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে যা আম চাষীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তবে বৃহত্তর অংশের ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ পাচ্ছে না। অনেকের আম ভাঙ্গা শেষ হয়েছে অনেক আগেই। আমের বাজার ফিরে পাওয়ায় অর্থাৎ আমের চাহিদার কারনে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আম পাঠাচ্ছে চাষীরা, চাষীদের মুখে আনন্দের হাসি এমনই খুশি থাকুক আম চাষীরা।