এফএনএস লাইফস্টাইল: শিশুর ত্বকের যতেœর ব্যাপারে মায়ের ভ‚মিকাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। মায়েরা যদি কিছুকিছু বিষয়ে সচেতন হন তবে অনেক চর্মরোগই প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর অনুলিখিত কয়েকটি বিষয় শিশুর বিভিন্ন চর্মরোগ প্রতিরোধে নিঃসন্দেহে সহায়ক। বিস্তারিত জানাচ্ছেন আবরার জাহিন। শিশুর পরিধেয় কাপড়-চোপড় অবশ্যই খসখসে, অমসৃণ হওয়া উচিত নয়, হতে হবে নরম ও মসৃণ। কাপড়টি সুতির হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কারণ, ত্বকের জন্য সুতির কাপড়ই সবচেয়ে নিরাপদ। কাপড়টি বেশি আঁটসাঁট হওয়া উচিত নয়। কারণ আলো-বাতাস প্রবেশ করতে না পারলে ঘাম আটকে থাকে এবং বিভিন্ন চর্মরোগ সৃষ্টি হয়। তাই পোশাক-পরিচ্ছদ যতটা সম্ভব ঢিলাঢালা হওয়াই ভালো। আর পোশাক-পরিচ্ছদ সব সময় শীত-গ্রীষ্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। ঘামাচি : সাধারণত গরমে বহু শিশুর ঘর্মনালির মুখ বন্ধ হয়ে ত্বকে র্যাশ দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে জায়গাটা একটু ঠাÐা, পরিষ্কার রাখলেই এ সমস্যার সুরাহা পাওয়া যায়। ন্যাপি র্যাশ : শিশুকে এ সময় ন্যাপি কম পরিয়ে জায়গাটা খোলামেলা রাখা উচিত। ইচ্ছে করলে একটু অয়েন্টমেন্টও সেই জায়গায় লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে। সেবোরিক ডার্মাটাইটিস : মাথার খুশকি থেকেই সাধারণত ত্বকে র্যাশ দেখা দেয়। ফলে এ সমস্যায় ভালো করে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। রুবেলা ইনফেকশন : গর্ভবতী মায়ের যদি রুবেলা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সদ্যোজাত শিশুরও অনেক সময় এ ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। এতে স্কিনে শুধু ছোট ছোট র্যাশ দেখা দেওয়াই নয়, সেই সঙ্গে শিশুর বমি, শরীর খারাপ, শ্বাসকষ্ট, হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্ক্যাবিজ : ত্বকের চুলকানির এই রোগ খুবই ছোঁয়াচে। এ ক্ষেত্রে শিশুর মুখ বাদ দিয়ে তার শরীরের সর্বাঙ্গে টানা একদিন অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে রাখলেই হবে না, শিশুর পাশাপাশি বাড়ির সব সদস্যকে সেই অয়েন্টমেন্ট লাগাতে হবে, এমনকি শিশুর পরিচর্যাকারীকেও। অ্যালার্জিক আর্টিকেরিয়া : চকোলেট, টমেটো সস, চিংড়ি, বেগুনসহ বেশ কিছু খাবার থেকে ত্বকে লাল, চাকা চাকা দাগ দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই সেই খাবার বন্ধ করে ওষুধ দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হয়। পরিত্রাণের উপায় : শিশুকে প্রতিদিনই গোসল করানো ভালো। তবে সাবান ও শ্যাম্পু প্রতিদিন ব্যবহার না করলেও চলে। পানি যেন অবশ্যই পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো-গোসলের শেষে নরম শুকনো সুতি কাপড় দিয়ে ভালোভাবে পানি মুছে ফেলতে হবে। যাতে কোনো স্থানে, বিশেষ করে শরীরের ভাঁজগুলোতে পানি লেগে না থাকে। কারণ, এ থেকে ছত্রাক জাতীয় জীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। শিশুর কাপড়-চোপড় সাবান দিয়ে ধোওয়ার পর পরিষ্কার পানিতে বারবার চুবিয়ে সম্পূর্ণ সাবানমুক্ত করে শুকানো উচিত। কারণ, সাবানের ক্ষারযুক্ত শুকনো কড়কড়ে কাপড় শিশুর নরম ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। শিশুরা হাত-পা বেশি নাড়াচাড়া করে এবং হাত মুখে দেয়, তাই নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। যাতে নিজের মুখে নিজে আঘাত না পায় এবং রোগ-জীবাণু নখের মাধ্যমে মুখে না যায়। শিশুদের ত্বকে অ্যান্টিসেপটিক এবং কসমেটিকস জাতীয় কোনো মলম যখন তখন না লাগানোই ভালো। কারণ, এতে শিশুদের নরম ত্বকে অনেক সময় এগুলো সহ্য হয় না এবং সমস্যা সৃষ্টি হয়। ত্বকে আঘাত পেতে পারে এ রকম খেলনা বা ব্যবহার্য জিনিসপত্র সব সময় শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা উচিত। কাদা মাটি ধুলোবালি ও কড়া রোদ থেকে শিশুদের দূরে রাখুন। মশা, মাছি, পোকা-মাকড়, পিঁপড়া ইত্যাদি যেন শিশুকে কামড়াতে না পারে সে দিকে সর্বদা লক্ষ রাখুন। কারণ এ থেকে হঠাৎ মারাত্মক অ্যালার্জিক রিয়্যাকশন হতে পারে। বাড়িতে পোষা কুকুর-বিড়াল না রাখাই ভালো। কারণ, এদের শরীর থেকে বেশ কিছু চর্মরোগের জীবাণু সংক্রমণ হয়ে থাকে। যা শিশুকে সহজেই আক্রান্ত করতে পারে।