বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সুন্দরবনে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর দেবহাটা বিএনপির সদস্য নবায়ন উদ্বোধনী আয়োজনে জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলারোয়ায যুবদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ মুন্সীগঞ্জে তাপদাহে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ শ্রীউলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ভাড়াশিমলায় ২৫০ প্রান্তিক কৃষানের মধ্যে সবজির বীজ বিতরণ খুলনার সাবেক মহিলা কাউন্সিলর গ্রেফতার বসন্তপুর ফকিরপাড়া জামে মসজিদে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল

মমতাহীন এক প্রাণীর নাম কুমির

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩

আবু ইদ্রিস শ্যামনগর থেকে \ স্রষ্টার সৃষ্টি জগৎ বড়ই অদ্ভুত রহস্যময়। রহস্যের আবরণে আবৃত সৃষ্টি জগৎ সম্পর্কে জানা বড়ই কঠিন ব্যাপার। যুগে যুগে বিজ্ঞানীরা তাদের তপস্য, সাধনায়, গবেষণায় যতটুকু আবিষ্কার করেছেন তা তৎসামান্য বলে মনে হয়। যতই সৃষ্টি জগৎ সম্পর্কে ঘাটাঘাটি করা হয়েছে ততই নতুনত্ব তথ্য উদঘাটন হয়েছে। প্রাণীকুল সৃষ্টি জগতের বাইরে নয়। আজকের আয়োজনে মমতাহীন এক প্রাণীর নাম কুমির সম্পর্কে। কুমির পৎড়পড়ফুষরফধব বর্গের তিন (৩) গোত্রের ২৫ প্রজাতির। তবে বাংলাদেশের সুন্দরবন নদী কেন্দ্রিক পৎড়পড়ফুষরফধব বর্গের দুই প্রজাতির কুমির দেখা যায়। মায়ের কোন তুলনা নেই। মায়ের তুলনা মা নিজেই। উপমা দিয়ে মায়ের মমত্ব তুলে ধরা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে কুমিরের বেলায় একটু ভিন্ন। কুমিরের মধ্যে মা ছানা সম্পর্ক থাকে না। অনেক সময় এরা নিজের বাচ্চা নিজেরাই খেয়ে ফেলে। তাই এদের মমতাহীন প্রাণী বলা হয়। এরা মাংসাশী চতুষ্পদ সরিসৃপ প্রাণীর মধ্য সবচেয়ে বড়। কুমির নদীতে পচা গলা ভাসমান পশুপাখি খেয়ে থাকে। নদীর মাছও খায়। কুমির খাবার চিবিয়ে খায় না। খাবার সরাসরি গিলে খায় এর। পচা মাংস এদের সবচেয়ে প্রিয় খাবার। এদের চোয়ালের শক্তি সিংহের চোয়ালের শক্তির চেয়ে প্রায় ১৩ গুণ বেশি। কুমির এত হিংস্র বাঘ ও এদের ভয় পায়। কুমির সরীসৃপ জাতীয় জলজ প্রাণী। তবে এরা উভচর। পানিতে বিচরণের সময় পুরা শরীর পানির নিচে থাকে শুধুমাত্র চোখ ও নাক পানির উপরে থাকে। এদের শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তি প্রখর। দূর থেকে শিকারি দেখে পানিতে ডুব দেয় এবং শিকারের কাছে যেয়ে ভেসে ওঠে এবং আকস্মিকভাবে শিকারকে আক্রমণ করে। কুমিরের শরীর চারটি স্বতন্ত্র অংশে বিভক্ত। কুমিরের দাঁত অনাবৃত। মুখ বন্ধ থাকলেও এদের দাঁত দেখা যায়। কুমিরের দেহ কাটাযুক্ত। কুমিরের মাথা সরু দীর্ঘ আকৃতির। কুমিরের মুখ ইংরেজি অক্ষর ভি আকৃতি বিশিষ্ট। এদের চোখ উল্লম্ব পুতুল যুক্ত । মুখের উপর ও নিচে চোয়াল দুটির প্রস্থ এক এবং নিচে চোয়ালের দাঁতগুলি মুখ বন্ধ থাকা অবস্থায় উপরের চোয়ালের দাঁতগুলোর উপরে থাকে। মুখে আছে কয়েক ডজন ধারালো দাঁত। কুমিরের শরীর হাড়ের প্লেট দ্বারা সুরক্ষিত। এগুলো দেখতে মাছের আঁশের মত তবে খুব শক্ত এবং প্রতিরোধী। এদের লেজ শক্তিশালী, নিজেকে রক্ষা করতে শত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধ করতে এবং সাঁতার কাটতে লেজ ব্যবহার করে। ২০ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট কুমিরের সচরাচর দেখা মেলে। কার্তিক থেকে পৌষ মাসে স্ত্রী কুমির ডাঙ্গায় এসে বালিতে ৪৫ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার গর্ত খুড়ে বাসা বেঁধে ডিম পাড়ে। এরা দুটি সারি করে ডিম দেয় এবং তার উপরে বালি দিয়ে ভরাট করে বালি দ্বারা প্রতিটি সারি আলাদা রাখে। ডিম ছাড়া শেষ হলে মা কুমির দূর থেকে পাহারা দেয়। ৯০ দিন পর বাচ্চা ফুটে ডাকতে থাকলে সে শব্দ মা শুনতে পায় এবং বালু সরিয়ে বাচ্চাদের বাহির করে নদীতে ছেড়ে দেয়। নবজাত কুমিরের বাচ্চা পাঁচ থেকে ছয় বছর খুব দ্রুত বাড়ে। ক্রমান্বয়ে কুমিরের বাচ্চার বৃদ্ধির হার কমে যায়। সবচেয়ে মজার ব্যবহার হলো কোন কোন অঞ্চলে কুমিরের ডিম মানুষে খায়। কুমির শীতল রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী। কুমির চুপচাপ নিরীহ প্রকৃতির প্রাণী মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা হিংস্র প্রাণী। কুমিরের আয়ুষ্কাল ৬০ থেকে ৭০ বছর। তবে ১০০ বছর পর্যন্ত ও এরা বাঁচে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com