দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ গাছই প্রাণ, মানবকুল আর প্রাণি কুলের সুস্থ, স্বাভাবিক এবং স্বাচ্ছন্দভাবে জীবন যাপন করা এবং বেঁচে থাকবার একমাত্র অবলম্বন বৃক্ষ। আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনে তথা সামগ্রীক কর্মযজ্ঞে একমাত্র পাথেয় নানান ধরনের নানান প্রজাতির গাছ গাছালি, বেঁেচে থাকার মাধ্যম বৃক্ষ রোপনে আমরা কতটুকু আন্তরিক এবং নিধনে কেমন র্নিমম নির্দয় তা ভাবনার সময় সমাগত। আমরা আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে অবাধে বৃক্ষ নিধন করে চলেছি। সবুজের সমারোহ, ছায়াঢাকা, পাখিডাকা পরিবেশ বান্ধব পরিস্থিতি যেন দিনে দিনে হলুদা ভাব হতে চলেছে। জ্বালানী, আসবাব পত্র, বাসাবাড়ী নির্মানে অবাধে এবং নির্দয় ভাবে কাটা হচ্ছে নানান প্রজাতির বৃক্ষ। একটি গাছ, এক একটি জীবনের জয়গান গেয়ে চলেছে। সেই বাস্তবতায় গাছ কাটার অর্থই দাঁড়ায় জীবনহানি, মানবকুলের নির্মমতার পদচিহৃ, একটি গাছ বা একাধিক গাছগাছালি মানব তথা প্রাণি কুলকে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার উৎস্য হিসেবেই কেবল কাজ করছে তা নয়, সমাজ সসংসারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার অবাধ ক্ষেত্র বির্নিমান করে চলেছে। বিশেষ করে ফলবান বৃক্ষ অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে। আমাদের দেশের বাস্তবতায় আম, জাম, কাঠাল, লিছু, ছবেদা, তাল, খেজুর, নারিকেল প্রভৃতি গাছ অর্থনৈতিক অসামান্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের ক্ষেত্রে আম অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। আমাদের দেশে উৎপাদিত আমের সিংহভাগ উৎপাদিত হয় সাতক্ষীরা জেলাতে। সাতক্ষীরায় আমের পাশাপাশি বিপুল পরিমান কাঠাল, নারিকেল উৎপাদিত হয়। খেজুরের রস, সাতক্ষীরা জস সেই চিরচারিত প্রচার দিনে দিনে ফিকে হতে চলেছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় নির্বিচারের বনজ বৃক্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলজ বৃক্ষের নিধন থেমে নেই। একদা সাতক্ষীরার গ্রামে গ্রামে মাঠে প্রান্তরে মেঠো পথে, সড়কের আশপামে খেজুর, তাল আর নারিকেল গাছের শত সহস্র উপস্থিতি প্রকৃতিতে এক অরুপ সৌন্দর্য্যরে ক্ষেত্র বিস্তাত করেছিল কিন্তু সে তো সোনালী অতীত। কালে ভাদ্রে কতক কতক খেজুর, তালের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। মেহগনি, সাল, সেগুন, সিরিজ, কলুচটকা, সহ নানান ধরনের বনজ বৃক্ষ নিধনে ও সময় ক্ষেপন করছে না অনেকে। একটি গাছ কাটলে এক প্রজন্ম পিছিয়ে পড়তে হয়। আর তাই নিতান্তই প্রয়োজনে বৃক্ষ নিধনে বা কাটার প্রয়োজন হলে একটি বৃক্ষের পরিবর্তে অন্তত পাঁচটি বৃক্ষ রোপনকরতে যেন আমরা ভুল না করি বর্তমান বর্ষা মৌসুম চলছে। আষাঢ় মাস চারিদিকে ব্যাপক ভিত্তিক পানির উপস্থিতি না থাকলেও ভয়াবহ তাপদাহ অনুপস্থিত, প্রকৃতিতে সুনশান স্বস্তির সুভাষ মাঝেমধ্যে বৃষ্টির পানি ভূ-খন্ড, জনপদ ভিজিয়ে চলেছে। এখনই বৃক্ষরোপনের উপযুক্ত সময়। সাতক্ষীরা দৃশ্যতঃ রবনাক্ত প্রবন এলাকা হলেও সর্বত্র লবনাক্ততার ছোয়া নেই। আবার লবনাক্ত উপযোগী ফলবান ও বনজ বৃক্ষের রোপনের যথেষ্ট্য সুযোগ বিদ্যমান। লবনাক্তসহনীয় পরিবেশে অতি সহজেই বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার উপযোগী কদবেল গাছ, নারিকেল গাছ এবং বনজ বৃক্ষ খ্যাত নিম গাছ। এখনই সময় যে যার সামর্থনুযায়ী বৃক্ষ রোপন করি। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় সর্বাপেক্ষা জরুরী ফলবান বৃক্ষের মধ্যে আম, কাঠাল, লিছু, উলেখিত গাছের ফল অর্থনীতিতে কাঙ্খিত ভূমিকা রাখছে। একই সাথে বজ্রপাত নিরোধ তালগাছ, নারিকেল আর খেজুর গাছ। বাড়ীর পাশে, রাস্তার ধারে, পতিত জমিতে, বিলের আইলে, ঘেরের ভেড়িবাঁধে , পুকুর পাড়ে যেখানে সামান্য জায়গা পড়ে আছে সেখানেই আমরা বৃক্ষরা রোপন করতে পারি। ফলজ, বনজ বৃক্ষের পাশাপাশি নানান ধরনের ঔষধী গাছ রোপন করতে পারি। গাছই একমাত্র মাধ্যম যা জন্ম হতে তার শেষ পরিনিত পর্যন্ত মানবকুলের জন্য আর্শীবাদ। আমরা গাছের জীবন রক্ষায় কতটুকু আন্তরিক? কিন্তু গাছই আমাদের জীবন রক্ষায় প্রতিমুহুর্তে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে। আসুন আমরা শফত গ্রহন করি বৃক্ষ নিধন নয়, বৃক্ষ রোপন করবো, গাছ কাটবো না, গাছ রক্ষায় নিয়োজিত থাকবো।