দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ আমাদের দেশের বহুবিধ সবজির মধ্যে অন্যতম এবং অধিকতর পরিচিত পুঁইশাক। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে, মাচায়, ঘরের চালে, উঠানে, বিভিন্ন গাছের ডালে পুইশাক এর লকলকে ডগা বিচরন করে। এক সময় বাড়ীর সবজির চাহিদা মেটাতে পুঁইশাক চাষ করা হলেও সময়ের ব্যবধানে আর বাস্তবতার নিরিখে পুঁইশাকের অর্থনৈতিক মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সা¤প্রতিক বছর গুলোতে বানিজ্যিক ভাবে এই চাষ হচ্ছে এবং চাষিরা অধিকতর লাভবান হচ্ছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় পুঁইশাক বানিজ্যিক ভাবে চাষে বিপ্লব ঘটেছে। অপেক্ষাকৃত কম খরচে এবং অধিক লাভবান হওয়ায় পুঁইশাক চাষে চাষীরা আগ্রহী হচ্ছে। আমাদের দেশে এই শাঁক অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মূল্য ও অপেক্ষাকৃত কম, তবে সময়ের ব্যবধানে বর্তমান সময়ে সাতক্ষীরার হাটবাজারে প্রতিকেজি পুঁইশাক বিশ/পঁচিশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পূঁইশাক সারা বছর উৎপাদিত সবজি হিসাবে পরিচিত আর এ কারনে বছরের সকল সময় সাতক্ষীরার হাটবাজার গুলোতে পূঁইশাক পাওয়া যায়। গত এক বছর পূর্বে ও পূঁইশাক কেজি প্রতি পাঁচ দশটাকায় বিক্রি হতো, কিন্তু বর্তমানে বাজার মুল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা মনের আনন্দে চাষে নিয়োজিত, পুঁইশাক কেবলমাত্র সবজি নয়, ইহার পুষ্টিগুন অত্যাধিক। জনপ্রিয় এই শাক অপরাপর শাক অপেক্ষা সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর, পুঁইশাকের কচি ডগা রান্নার পর বিশেষ স্বাদ এর সৃষ্টি করে। এক সময়ের বাড়ীর ছাদে, মাচানে পতিত জায়গায়, রান্নার ঘরের ছেচেতে যে পুঁইশাক হতো তা আজ বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে যা সবজি উৎপাদনের এক মহাক্ষেত্র। পুঁইশাকের পাশাপাশি পুঁইশাকের দানা অতি লোভনীয় আর স্বাদের সবজি, বাজারে যখন পূঁইশাকের ডিম, বিচি বা দানা ওঠে তখন বাজারের সর্বাপেক্ষা দামী সবজির তালিকায় থাকে। সাতক্ষীরার সদর উপজেলার বইকারী, ছনকা, আলিপুর, মাহমুদপুর, ভাড়–খালী, ঘোনা সহ বহু এলাকা, তালা পাটকেলঘাটা কলারোয়া, এলাকায় ব্যাপক ভাবে পূঁইশাক চাষ হচ্ছে। গত কয়েক বছর যাবৎ দেবহাটা আশাশুনীর চিংড়ী ঘেরের ভেড়িবাঁধে পূঁইশাক চাষের বিপ্লব ঘটেছে। চিংড়ী ঘেরের ভেড়িবাধ পতিত জমির অংশ হিসেবে পরিচিত অথচ সেই ভেড়িবাঁধ পুইশাকের সতেজ সবুজ, লালশাকে, ঝকঝকে ডোগা এগিয়ে চলেছে। প্রতিদিন মন কি মন পূঁইশাক কাটছে চাষীরা, কয়দিন পর আবারও সেই কাটাস্থান দিয়ে ডোগার জন্ম নিচ্ছে, পুইশাকের ডোগা রোপন করলে অতি সহজেই গাছের জন্ম সৃষ্টি হয়। চাষীরা জানান পুইশাক ক্ষেতে জো না থাকলে পানি সেচ দিতে হয় আর উক্ত পানি সেচ যেন কোন ভাবেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না করে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ইতিপূর্বে শুধুমাত্র স্থানীয় পর্যায়ের সার অর্থাৎ গোবর খইল, বর্তমান সময়ে বানিজ্যিক ভাবে পূইশাক চাষে ইউরিয়া, টিএসপি সহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে। সব মিলে পুইশাক চাষে অনেকে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন।