দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকার জনমানুষের মাঝে প্রকৃতির রুদ্ররোষ আর তান্ডবলীলা প্রতিনিয়ত জাগ্রত। অতীতের আর নিকট অতীতের হারিকেন, সিডর, আইলা, বুলবুল নামীয় জ্বলোচ্ছ¡াস এবং ঘুর্ণিঝড়ের মুহুর্ত বারবার পার করেছে। সম্পদ আর জীবন হানির বিভিষিকাময় স্মৃতি রোমানর করে চলেছে। সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকার হৃদয় স্পর্শী, মর্মান্তিক ঘনঘটা যেমনটি শঙ্কিত করে চলেছে অনুরুপ ভাবে উপকুলীয় এলাকায় টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মান কাজ শুরু হওয়ায় আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে। দেশের সর্ব দক্ষিনের উপজেলা শ্যামনগর এই উপজেলার সর্বাপেক্ষা ঝুকিপূর্ণ এবং প্রকৃতির হিংস্রতায় বারবার ক্ষত বিক্ষত ইউনিয়ন গাবুরা, সুন্দরবনের কোলঘেষে বঙ্গপোসাগরের অদুরের গাবুরাকে দ্বীপ ইউনিয়ন ও বলা হয়। ইতিহাস খ্যাত গাবুরা বহুবারই জলস্রোত এবং ঘূর্ণিঝড়ে লন্ড ভন্ড হয়েছে। এখানেই শেষ নয় চারিদিকে লবনাক্ত পানি বেষ্টিত, আর আগ্রাসী পানির রাক্ষুসে ছোবলে সারা বছরই অস্তিত্ব হুমকির মুখে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা। গাবুরার প্রকৃতির শক্তির কাছে অসহায় জনসমষ্টির প্রত্যাশা ছিল স্থায়ী তথা টেকসই ভেঁড়িবাঁধ নির্মানের মাধ্যমে গাবুরাকে রক্ষা করা। বানের স্রোতে এই ইউনিয়নের ফসলিজমি, চিংড়ী ঘের ডুবে নদী আর সাগরের সাথে একাকার হয়েছে। গবাদিপশু ভেসে গেছে। হাজার মানব সন্তান আশ্রয়হীন হয়েছে। কঠিন, কঠোর জীবন সংগ্রামের পর মানব সন্তানরা আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত, প্রতিমুহুর্তে চোখে মুখে আতঙ্ক, আমাবশ্যার কালোমেঘের ঘনঘটা কারন প্রকৃতির অসীমক্ষমতা মোকাবিলা করার সাধ্য তাদের নেই। দিনে দিনে গাবুরার মানুষ যেমন সর্বস্ব হারিয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রানন্তকর প্রচেষ্টা চালিয়েছে অনুরুপ ভাবে বসতবাড়ী, সর্বপরি ভূ-খন্ড বিলীন হয়েছে। আশাবাদী, খুশি, নতুন ভাবে বাঁচবার, বসবাসের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে গাবুরা বাসি ইতিমধ্যে গাবুরা রক্ষায় হাজার কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। পঁয়তালিশ হাজার জনগোষ্ঠীর গাবুরা অপরুপ সৌন্দর্য্যরে অধিকারী কিন্তু ছিল প্রাণহীন, নানান ধরনের বিপদের আশঙ্কা কিন্তু বাস্তবতা হলো হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গাবুরা রক্ষায় মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়ায় দ্বীপ ইউনিয়নটির জন মানুষের সীমানা পেরিয়ে সর্বত্র উদ্বাস, উৎসব আর আনন্দের ছোয়া। মহাকাজ প্রত্যক্ষ করতে ইতিমধ্যে গাবুরার দুর্গম এলাকা ও নির্মানাধিক কর্মযজ্ঞ পরিদর্শন করেছেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান। গত বছরে গাবুরার জনপদ তথা গাবুরাকে রক্ষা করতে এক হাজার বিশ কোটি টকার কাজ শুরু হয়। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের গাবুরা রক্ষার টেকসই বাঁধ নির্মান পরিদর্শনের পর জন মানুষের মাঝে কাজের গুনগত মান নিয়ে ও আশার সঞ্চার হয়েছে। এলাকা বাসি জানান সচিব গাবুরার জেলেখালী ও নেবুবুনিয়া সহ অপরাপর দুর্গম এলাকায় শুরু হওয়া মেগা প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করতে এবং কাজের গুনগত মান সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেন এ সময় তিনি নদীর মধ্যভাগে স্থাপনকৃত কার্গোতে অবস্থান নিয়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগের পরিমান, গুনগতমানে যাচাই করেন। পানি সম্পদ সচিব পাঁচ নম্বর পোল্ডারের অধিকতর ঝুকিপর্ণ দুর্গাবাটিক এলাকা পরিদর্শন কারেন। প্রকাশ্যে তিনি ঘোষণা দেন কার্যদেশ অনুযায়ী সঠিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। গাবুরার অধিবাসিদের সুদিন আসছে, মেগা প্রকল্পটি পয়তালিশ হাজার জনসমষ্টির গাবুরার জন্য আর্শীবাদ। শ্যামনগরের গাবুরা বাসি আগামী দিনের প্রকতির রুদ্র রোষ হতে বাঁচতে চলেছে। শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালী পদ্মপুকুর হুমকির মুখে থেকে যাচ্ছে। বিগত দিনের প্রকৃতির হিংসাত্মক তৎপরতায় পাতাখালি, বুড়িগোয়ালীনী, কৈখালী, লন্ডভন্ড হয়েছে। খোলপেটুয়ার পানিতে ভেঙ্গেছে, ভেড়িবাঁদ একই ভাবে খোলপেটুয়ার রাক্ষুসে পানি উলেখিত জনপদগুলোকে করেছে বিবর্ণ, ভাঙ্গন অব্যাহত আছে। উপকুলীয় এলাকার জনগোষ্ঠী, সাতক্ষীরার বিশলক্ষাধীক জনমানব গাবুরার ন্যায় অন্যান্য ঝুকিপূর্ণ এলাকার টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে।