এফএনএস বিদেশ: বেলারুশের সামরিক হেলিকপ্টার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে বলে পোল্যান্ড অভিযোগ করেছে। বেলারুশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ফলে রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে উত্তেজনার আশঙ্কা বাড়ছে। ইউরোপ তথা সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনকে নানা রকম সহায়তা দিয়ে চললেও সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এড়িয়ে চলেছে। কিন্তু পোল্যান্ড ও বেলারুশ সীমান্তে চলমান উত্তেজনা সেই ভারসাম্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। পোল্যান্ডের অভিযোগ, বেলারুশের দুটি সামরিক হেলিকপ্টার সীমান্ত পেরিয়ে আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। খুবই কম উচ্চতায় ওড়ার জন্য রাডারে সেগুলির উপস্থিতি ধরা পড়ে নি। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার পোল্যান্ড সীমান্তে বাড়তি সৈন্য ও সামরিক হেলিকপ্টার পাঠানোর ঘোষণা করেছে। ন্যাটোকেও এই পদক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে। বেলারুশ অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ন্যাটোর সদস্য দেশ পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করেছে। সীমান্তে সৈন্যসংখ্যা বাড়ানোর ‘অজুহাত’ হিসেবে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে বেলারুশ দাবি করছে। ঘটনাটি সম্পর্কে পোল্যান্ডের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বার বার পরিবর্তনের প্রতি নজর আকর্ষণ করে বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যে বিদেশি ‘মনিব’-দের সঙ্গে কথা বলেই পোল্যান্ড মতবদল করেছে। তাদের মতে, অভিযোগের সপক্ষে কোনো তথ্যও পেশ করা হয় নি। বেলারুশে রাশিয়ার ভাগনার ভাড়াটে বাহিনীর তৎপরতাও পোল্যান্ডের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে তাদের উপস্থিতি উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। শনিবার পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেয়ুশ মোরাভিয়েৎস্কি বলেন, প্রায় ১০০ ভাগনার যোদ্ধা পোলিশ সীমান্তের কাছে চলে আসায় পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেংকো মঙ্গলবার মসকরা করে বলেছেন, যে ভাগনার বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পোল্যান্ডের বরং কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। গত মাসে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুটিনের সঙ্গে আলোচনার সময়ে বলেন, কিছু ভাগনার যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ পর্যন্ত যেতে আগ্রহী। বেলারুশ যেভাবে ইউক্রেনের উপর হামলা চালাতে রাশিয়াকে সাহায্য করে আসছে এবং সে দেশে রুশ পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করতে দিয়েছে, তার ফলে পশ্চিমা জগতে উদ্বেগ রয়েছে। তার উপর রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুটিন গত সপ্তাহে পোল্যান্ডকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যে বেলারুশের ভ‚খÐ দখলের চেষ্টা করলে রাশিয়া সেই হামলাকে নিজের উপর হামলা হিসেবে বিবেচনা করবে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ সরাসরি ন্যাটোর উপর পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপাতত ঘটনাটিকে অন্তত প্রকাশ্যে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, বেলারুশে ভাগনার ভাড়াটে বাহিনীর উপস্থিতি পোল্যান্ড বা ন্যাটো সহযোগীদের জন্য স্পষ্ট হুমকির কারণ হতে পারে, এমন কোনো কারণ ওয়াশিংটন দেখছে না।