লবনাক্ত, অনাবাদী ও পতিত জমিতে চাষাবাদ বাড়াতে হবে
দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ দেশের উন্নয়নের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত ও স্বীকৃত কৃষি। আর তাই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি হলে দেশের সামগ্রীক উন্নয়ন সম্ভব। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় আবাদি জমিকে অবশ্যই উৎপাদনের আওতায় আনতে হবে একই সাথে কোন জমি অনাবাদি, রাখা যাবে না। পতিত জমিজমাকে আবাদের আওতায় আনতে হবে। কেবলমাত্র ধান, পাট বা রবিশস্য আবাদ করতে হবে তা নয় যে যায়গা যে ফসলের উপযোগী বা যেসকল পতিত জমিজমায় ফলের গাছ রোপন করা সম্ভব তা করতে হবে। সরকারের পক্ষ হতে বার বার ঘোষনা দেওয়া হচ্ছে আহবান জানানো হচ্ছে কোন ধরনের পতিত জমি রাখা যাবে না। উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর আহবান জানিয়েছেন এবং পতিত জমিজমা চাষাবাদের আওতায় আনতে বলেছেন। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় এই জেলা বরাবরই শষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। সাতক্ষীরার উৎপাদিত ধান, রবিশষ্য, কাটাখন্দ জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলার চাহিদা মিটিয়ে থাকে। সাতক্ষীরায় বিপুল পরিমান জমিজমা অনাবাদী যা চাষাবাদের আওতায় আসলে কৃষি উৎপাদন অনেক অনেক গুন বৃদ্ধি পেতে পারে। জেলার শত সহস্র বিঘা বিঘার চিংড়ী ঘেরের অস্তিত্ব বিদ্যমান। ছোট বড় হাজার হাজার চিংড়ী ঘেরের ভেড়ী বাঁধ এতো দিনে কেবল মাত্র ভেড়িবাঁধ হিসেবেই ব্যবহৃত হতো। কিন্তু সা¤প্রতিক সময় গুলোতে চিংড়ী ঘেরে ভেড়িবাঁধে নানান ধরনের সবজি চাষ হচ্ছে। ভেড়িবাঁধ পতিত জমি হিসেবে পরিচিত থাকলেও সময়ের ব্যবধানে ভেড়িবাঁধে চাষাবাদ হচ্ছে, সবুজের সমারোহের দৃষ্টিনন্দন আবহ সৃষ্টি হয়েছে। সময় এসেছে ভেড়িবাঁধ গুলোতে পরিকল্পিত ভাবে চাষাবাদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। খিরা, টমেটো, পেচেঙ্গা, ঝিঙা, ধুন্দল, ঢেড়শ, উচ্চে সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি অধিকতর উৎপাদন করা সম্ভব। চিংড়ীঘের গুলো শুধুমাত্র চিংড়ী চাষের জন্য ব্যবহৃত হতো, জেলার শত শত একরের চিংড়ী ঘেরগুলোতে লবনাক্ত সহনীয় ধানচাষ করা সম্ভব। দৃষ্টিপাতের অনুসন্ধানে দেখাগেছে জেলার আশাশুনী, দেবহাটা, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলার কোন কোন চিংড়ী ঘেরে লবনাক্ত সহনশীল ধান চাষ হয়েছে এবং চাষীরা কাঙ্খিত লাভবান হয়েছেন। জেলার সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়ক সহ অভ্যন্তরের সংযোগ সড়ক গুলোতে ফলবান বৃক্ষ রোপন করা যেতে পারে, আম, জাম, কাঠাল, লিছু, ছবেদা সহ বিভিন্ন ধরনের ফলজ বৃক্ষ স্থানীয় পর্যায়ের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অর্থনীতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। পতিত জায়গায়, সড়ক সংলগ্ন এলাকায় খেজুর, তাল, আমড়া বৃক্ষ রোপন করা যেতে পারে। বাড়ীর উঠানে, রান্না ঘরের আশপাশে পুইশাক, সিম, লাউ ঝিঙে, চালকুমড়া গাছ রোপন পরবর্তি মাচা বা রান্না ঘরের চালায় চাষাবাদ করা সম্ভব। দৃশ্যতঃ লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য আবাদী জমির পরিমান বৃদ্ধি করা, অনাবাদী জমি না রাখা, আইনের বাধ্যবাধকতা বলছে আবাদী তথা কৃষি জমিতে বসতি স্থাপন ঘরবাড়ী বা শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মান না করা কিন্তু সাতক্ষীরার প্রেক্ষিতে এই বিধি বিধান মানা হচ্ছে না। ফসলি জমিতে স্থাপনা তৈরী হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি, সাতক্ষীরার কৃষি বিভাগকে বিশেষ দায়িত্বশীল হতে হবে, কৃষি উৎপাদনে, অনাবাদি জমি আবাদী করনে, পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্র বির্নিমান করনের পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। উদ্বাবনী প্রযুক্তির সাথে কৃষকদের পরিচিত করতে হবে। কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষন দিতে হবে। জেলাকে সবুজের সমারোহ তথা উৎপাদনের শীর্ষে পর্যায়ে নিতে হবে।