বিস্মৃতির রসালো স্মৃতি
শেখ মফিজুর রহমান
ডাকবাক্স পড়ে আছে রাস্তার এক কোণে
হলুদ কিংবা এয়ার মেইলের সাদা খাম
এখানে আর জমা হয় না।
স্মৃতির কোষে ধুলো পড়ার মতো
এই ডাকবাক্সেও ধুলো জমে ভীষণ ফ্যাকাশে।
না বলা কথাগুলো আরো বেশি বলা হয়
ম্যাসেঞ্জারে কিংবা হোয়াটস অ্যাপে।
ক্রিং ক্রিং শব্দে ফোনটা এখন আর বাজে না
প্রেমিক ছেলেটি প্রেমিকার পিতার কন্ঠ শুনে
হুট করে রিসিভার নামিয়ে রাখে না
বা অপ্রস্তুত কন্ঠে বলে না – রং নাম্বার।
প্রতিবেশিনীর করুণ কন্ঠে অনুরোধ আসে না
আমাদের অমুক ফোন করলে একটু বলবেন!
পোস্টকার্ডের কথা মনে আছে?
ছোট্ট করে গুটি গুটি করে
যেখানে অনেক কথা লেখা থাকতো!
কিংবা হঠাৎ আসা সেই টেলিগ্রাম
যার দুঃসংবাদ হৃদয় দিতো কাঁপিয়ে।
পূজোর মেলায় এখন আর
মাটির পুতুল আর রঙিন হাঁড়ি দেখি না।
পুতুল নাচ নেই, জারী গান নেই
নেই ছেলেরা মেয়ে সেজে যাত্রাগান।
সব জায়গায় হিন্দি গান বাজে
মেশিনের তৈরি কৃত্রিম জিনিসের ছড়াছড়ি।
রসকদম, কদমা কেউই কি এখন খায় না?
সবারই বুঝি ডায়াবেটিস?
নাকি পিজ্জা বার্গারের ভিড়ে
সেগুলো এখন শুধুই অতীত?
হয়তো আমার মতোই কেউ আছে
ধোপদুরস্ত পোষাকেও
ছিপহাতে মাছ ধরার সময়টাকে
হারিয়ে ফেলা মণি মানিক্যের মতো
খুঁজে বেড়ায়।
দিনশেষে অবসরে ব্যস্ত গৃহকোণে
স্মৃতিগুলো স্মরণ করে
যেভাবে ছোটবেলায়
মচমচে গরম জিলাপির
টসটসে রস হাতের কনুই পর্যন্ত
গড়িয়ে গড়িয়ে পড়তো
স্মৃতিগুলো যেন সেই
জিলাপির মিষ্টি রস
রোমান্থন করি, স্বাদ আস্বাদন করি
একটু একটু করে।