এফএনএস বিদেশ : বৃহত্তর রাশিয়ান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে শত শত রাশিয়ান ট্যাংক ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেন। একজন মার্কিন বিশেষ অপারেশন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন জ্যাক মরফি নামে যুক্তরাষ্ট্রের এক সিনিয়র সাংবাদিক, যিনি পূর্ব ইউরোপিয়ান জাতির মধ্যে চলা যুদ্ধের ওপর নজর রাখছেন। খবর এনডিটিভির। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ৩০০ গোলাবর্ষণ হয়েছে। এতে অন্তত ২৮০টি রাশিয়ান সাঁজোয়া যান ধ্বংস হয়েছে, যা ধ্বংসের হার ৯৩ শতাংশ। রেথিয়ন ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা এবং লকহিড মার্টিন দ্বারা তৈরি এই জ্যাভলিন। এটি এমন একটি ফ্লাইট পথ, যা ওপর থেকে অনুসরণ করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। প্রায় প্রতিটি ট্যাংক বর্ম পাশের দিকে মোটা, কিন্তু ওপরের অংশটি দুর্বল থাকে। আর সেখানেই জ্যাভলিন মিসাইল আঘাত হানে। প্রয়োজনে সরাসরি ফ্লাইট চলমান মোডেও গুলিবর্ষণ করতে পারে ক্ষেপণাস্ত্রটি। সাংবাদিক মরফি তার নিবন্ধে লিখেছেন, জ্যাভলিনের প্রথম চালান ইউক্রেনে পৌঁছেছিল ২০১৮ সালে। সেই সঙ্গে অস্ত্র পরিচালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং টেকসই ব্লক (যাকে মোট প্যাকেজ অ্যাপ্রোচ বলা হয়) বাবদ প্রায় ৭৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মরফি আরও জানিয়েছেন, ইউক্রেনের কাছে থাকা জ্যাভলিনের বিষয়টি যেহেতু রাশিয়ানরা জানতে পারার কারণে, তাদের ডনবাসে থাকা টি-৭২ ট্যাঙ্কগুলো কম আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে রাশিয়ানরা সামনের সারিতে থেকেও অনেক পিছিয়ে গেছে। তবে মরফি লিখেছেন, জ্যাভলিন বা অন্যান্য ট্যাংকবিরোধী অস্ত্রের দ্বারা ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রতিরোধের সংখ্যাগুলো গুরুত্ব সহকারে নেওয়া কঠিন। সামাজিকমাধ্যমে প্রকাশিত সংখ্যাগুলো ইউক্রেনীয় বাহিনী দ্বারা অতিরঞ্জিত হতে পারে অথবা রাশিয়ানদের দ্বারা কম দেখানো হতে পারে। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে এ সংখ্যা নির্ণয় করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। দীর্ঘ দুই সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার আগ্রাসনের শিকার ইউক্রেন। কিছুকিছু অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও চ‚ড়ান্তভাবে যুদ্ধের সমাপ্তির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রাশিয়ার শর্ত পূরণের আংশিক ইঙ্গিত দেওয়া হলেও চ‚ড়ান্ত ঘোষণা আসেনি দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে। যুদ্ধের কারণে ১৫ লাখেরও বেশি শরণার্থী ইউক্রেন ছেড়েছে। এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ঠেকাতে দেশটির মূল সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই যোগ দিচ্ছে হাজার হাজার বিদেশি সেনা। যাদের বেশির ভাগই পূর্ব ইউরোপের নাগরিক বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেভা। তবে স্বেচ্ছায় অংশ নেওয়াদের মধ্যে উগ্রবাদী রাশিয়াপন্থি থাকতে পারে, এমন আশঙ্কা জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।