দিঘলিয়া প্রতিনিধি \ দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা চৌরাস্তা সড়ক। বড় বড় গর্তে পড়ে প্রায়ই বিকল হচ্ছে যানবাহন, ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেহাল দশার এই সড়কটিতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হলেও শুরু হয়নি সংস্কারকাজ। এদিকে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের। কারণ তাদের দীর্ঘ ভাঙা পথ পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। যার কারণে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সময় মতো শিক্ষার্থীরা যেতে পারে না। দ্রুত এই সড়কের মেরামত না করা হলে সার্বিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে এই অঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি। মূল সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ট্রাক, অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ ছোট বড় অনেক যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কোনো সংস্কার না হওয়ায় পিচ উঠে অসংখ্য স্থানে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। ওই সড়কে চলাচলকারী শিক্ষার্থী জান্নাত আক্তার বলেন, সড়কটির বেশির ভাগ স্থানই ভেঙে গেছে। যার কারণে স্কুলে যেতে খুবই কষ্ট হয়। আমরা চাই সড়কটি দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হোক। উপজেলায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বসবাস, এবং এই সড়কটি তাদের ও চলাচলের একমাত্র অবলম্বন হওয়া সত্ত্বেও তেমন কোন মাথাব্যাথা নেই কারো। খানাখন্দে ভরা এই সড়কে প্রতিদিন চলছে হাজার হাজার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন, পথচারীরা। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের গর্তগুলোতে পানি জমে বেহাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা। উপজেলা শহরসহ দিঘলিয়া, দেয়াড়া, সেনহাটি, গোয়ালপাড়া, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাবার সহজ যোগাযোগ এই রাস্তা। অথচ, রোগী ও জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত যাওয়া যায় না এই রাস্তাটি দিয়ে। আর বৃষ্টিতে ভোগান্তি ওঠে চরমে। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছে হাজারো মানুষ। সড়কের পিচ উঠে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় জনজীবনে বেড়েছে চরম দুর্ভোগ। প্রতিদিনই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে উল্টে যাচ্ছে রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশাসহ আটকে পড়ছে প্রাইভেটকার ও মালবাহী কাভার্ড ভ্যান। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এই সড়কে চলাচলকারী অসংখ্য মানুষ। আর বৃষ্টির পানি জমে একেকটি গর্ত যেন পরিণত হয়েছে ছোট ডোবায়। বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই সড়কটি সরকার কয়েক বছর আগে করলেও ড্রেনেজ সিস্টেম না থাকায় সড়কে পানি জমে রাস্তার এই বেহাল দশা। আমাদের চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। এক বস্তা চাল যে বাড়িতে নেব, সে উপায়ও নাই। এসব ময়লা পানি মাড়িয়ে প্রতিনিয়ত পেটের তাগিদে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। আমরা সরকারের কাছে এই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য দাবি জানাই। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পর বাংলাদেশের সড়ক পথের যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অপরিকল্পিত ও ভারসাম্যহীন নগরায়ণ, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ক্রমেই দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। রাস্তাঘাটের দুরবস্থার চিত্র প্রতিদিনই খবরের কাগজে কিংবা টেলিভিশনে দেখা যায়, সে সঙ্গে জনগণের কী পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তা সরেজমিনে প্রতিবেদন আকারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাও করা হয়। সে সঙ্গে রাস্তাঘাটের দুরবস্থার কারণ ও প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, ওয়ার্ড কমিশনার, চেয়ারম্যান, স্থানীয় সংসদ সদস্য সবাইকেই অবগত করানো হয়। তৎক্ষণাৎ সবাই আশাভরসা দিয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিলেও দিন কয়েক পরেই তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। তখন রাস্তাঘাটের দুরবস্থার সঙ্গে সাধারণ মানুষের দুরবস্থার আর কোনাে পার্থক্য থাকে না। প্রকৃতপ্রস্তাবে, রাস্তাঘাটের দুরবস্থার চিত্রটি যেমন সত্য তেমনি বাস্তবসত্য হল এর পেছনে নিহিত নানাবিধ অবকাঠামোগত কারণ। তবে এখন আর শুধু আশ্বাসের কথা নয়, আঞ্চলিক এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন চলাচলকারী বাসিন্দা, শ্রমিক, শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।