এফএনএস স্পোর্টস: শেই হোপের ছক্কায় ম্যাচ শেষ হতেই ড্রেসিং রুমে সবার আগে উঠে দাঁড়ালেন রভম্যান পাওয়েল। তার মুখে হাসি, হাতে তালি চলল ক্রমাগত। সতীর্থদের অভিনন্দন জানালেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। একটু পর ওপরের দিকে তাকিয়ে আঙুল তুলে কিছু একটা দেখালেন, হয়ত কৃতজ্ঞতা জানালেন ¯্রষ্টাকে। পরে আলিঙ্গনে জড়ালেন তিনি কোচ ড্যারেন স্যামিকে। একটু পর ট্রফি নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের উল্লাস চলতেই থাকল লম্বা সময়। এমন উপলক্ষ তো সা¤প্রতিক সময়ে খুব একটা পায়নি তারা! উপলক্ষটাকে ধারাভাষ্যকক্ষে খুব ভালোভাবে ধারণ করতে পারলেন ইয়ান বিশপ, “ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই টি-টোয়েন্টি দল এবং সব মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্যও দারুণ জরুরি এক জয়ৃ বিশেষ করে গত ১২ মাসে সব সংস্করণ মিলিয়ে যা কিছু হয়ে গেছে।” ‘যা কিছু হয়ে গেছে’ বলতে, টেস্টে একের পর এক ম্যাচ হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্ব পার হতে পারেনি তারা গ্রæপে স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের কাছে বাজেভাবে হেরে গিয়ে। তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের আরও বেশি বিব্রতকর একসময় এসেছে পরে, যখন ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরাতে ব্যর্থ হয়েছে দল। সব মিলিয়ে ভীষণ দুঃসময় চলছিল ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের। ভারতের এই সফরেও টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে তারা। টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে এগিয়ে গেলেও ভারত সমতা ফেরায় পরের দুটি জিতে। শেষ পর্যন্ত শেষ ম্যাচে ফ্লোরিডায় রোববার ৮ উইকেটের দারুণ জয়ে সিরিজ জিতে নেয় ক্যারিবিয়ানরা। ম্যাচ শেষে ক্যারিবিয়ানদের উল্লাসেই ফুটে উঠল তাদের অনুভ‚তি। অধিনায়ক পাওয়েল তো কথায় তা ফুটিয়ে তুলতেই পারছিলেন না। “এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এই অনুভ‚তির যথেষ্ট উপযুক্ত বিশেষণ অপ্রতুল। অনেক বড় সিরিজ জয় এটি। নিজেদের মাঠে ভারতকে হারানো আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি, বিশেষ করে চারপাশে যতকিছু হয়ে গেছে।” আগের দিন এই মাঠেই ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়ে ভারতের কাছে ¯্রফে উড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে এতটা প্রবল দাপটে ঘুরে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব পাওয়েল দিলেন দল সংশ্লিষ্টদের। “গত রোববার আমরা বাজেভাবে হেরে যাওয়ার পর সবাই একসঙ্গে বসে কথা বলি। আমরা তো শুধু নিজেদের হাসিমুখের জন্য খেলছি না, ক্যারিবিয়ার মানুষদের মুখেও হাসি ফোটাতে চাই। কোচিং স্টাফদের অনেকটা কৃতিত্ব দিতে হবে, এমনকি চেয়ারম্যানকেও (ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের)। কালকের হারের পর আমরা খুব সহজেই অস্থির হয়ে ভেঙে পড়তে পারতাম। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বসেছেন এবং আমরা আলোচনা করেছি, কোথায় উন্নতি করতে পারি।” “সমর্থকদেরও বড় কৃতিত্ব প্রাপ্য। যখন সবকিছুই ভেঙে পড়েছিল, তখনও তারা আমাদের পাশে থেকেছে। শুধু মাঠে শারীরিকভাবেই নয়, সামাজিক মাধ্যমেও সমর্থন করেছে।” ক্রিকেটে সবসময় দলীয় অবদানের কথা বলা হলেও পাওয়েলের দর্শন একটু ভিন্ন। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের হাত ধরেই দলের এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্বাসী তিনি। সিরিজ সেরা নিকোলাস পুরানের জন্য তাই বিশেষ প্রশংসা বরাদ্দ থাকল অধিনায়কের। বোলিং আক্রমণের কথাও বললেন তিনি আলাদা করে। “আমি সবসময়ই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স গুরুত্ব দেই। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ভালো হলেই দল ভালো করে। পুরান অনেক বড় পারফর্মার আমাদের জন্য। আমরা ওকে বলেছিলাম, পাঁচ ম্যাচের অন্ততটাতে তিনটাতে ভালো করতে হবে। ও ঠিকই তা করেছে। আমাদের বোলিং আক্রমণকেও কৃতিত্ব দিতে হবে, এতটা শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপকে দমিয়ে রাখার জন্য।”