এফএনএস স্পোর্টস: কোচ ম্যাথু মট ও অধিনায়ক জস বাটলারের কাছ থেকে আগেই বার্তা পেয়েছিলেন হ্যারি ব্রæক। তিনি তাই জানতেন, বেন স্টোকস ফিরলে কোপটা তার ওপরই পড়বে। মানসিক প্রস্তুতি থাকায় দল ঘোষণার পর বড় কোনো ধাক্কা লাগেনি তার। তবে বিশ্বকাপ স্বপ্ন ভেঙে গেলে খারাপ লাগাটা তো আর কম নয়! ব্রæক অবশ্য চেষ্টা করছেন সেই হতাশা পেছনে ফেলে ইতিবাচক থেকে এগিয়ে যেতে। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ দল এখনও ঘোষণা করা হয়নি বটে। তবে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে আগামী মাসে চার ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের যে দল দেওয়া হয়েছে, সেটিকেই বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াড বলছেন তারা। চোট-টোট বাধা হয়ে না দাঁড়ালে কিংবা অতি নাটকীয় কিছু না হলে এই দলই খেলবে বিশ্বকাপে। সেখানে জায়গা হয়নি ব্রæকের। এই সিদ্ধান্ত কিছুটা চমক জাগানিয়াই বটে। বিশ্ব ক্রিকেটেরই সবচেয়ে আলোচিত তরুণ প্রতিভাদের একজন ব্রæক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর মধ্যেই নিজের ছাপ রেখেছেন দারুণভাবে। টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা তিনি দুর্দান্ত করেছেন। টি-টোয়েন্টিতেও ছুটছেন ভালোভাবে। ওয়ানডে অবশ্য খেলেছেন মোটে ৩টি। গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৭৫ বলে ৮০। পরের ম্যাচে আউট হন ৬ রানে। তার পরও তার যা প্রতিভা ও সামর্থ্য, তাতে বিশ্বকাপের অন্য বেশির ভাগ দলেই হয়তো সহজেই জায়গা পেয়ে যেতেন ব্রæক। কিন্তু ইংল্যান্ডের সাদা বলের দলে জায়গার লড়াইটা এতটাই তুমুল। সেই বাস্তবতাই মেনে নিচ্ছেন ব্রæক। দা হান্ড্রেড-এ শুক্রবার রাতে ২৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান স্কাই স্পোর্টসকে বললেন, বিশ্বকাপকে ভাবনার বাইরে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি। “অবশ্যই এটা হতাশার (বিশ্বকাপে থাকতে না পারা), তবে এখন আর কিছু করার নেই আমার। সামনে এগিয়ে যেতেই হবে। আমি চেষ্টা করছি এটা নিয়ে বেশি না ভাবতে।” “ম্যাথু (মট) ও জসের (বাটলার) সঙ্গে খুব বেশি কথা হয়নি আমার। তবে তারা বলেছিলেন যে, স্টোকসি (বেন স্টোকস) ফিরে আসছে, কাজেই আমাকেই হয়তো এবার বাইরে থাকতে হবে। ক্রিকেটের সর্বকালের সেরাদের একজন সে, কাজেই আমি আসলে অভিযোগ করতে পারি নাৃ পারি কি?” বরং নিজের আরও কিছু করার সুযোগ ছিল, সেটি ছোট্ট করে বললেন ব্রæক। “আমার মনে হচ্ছে, এই মুহূর্তে আমি ভালো খেলছি এবং বিশ্বাস করি, এই দলে আমি বাড়তি কিছু যোগ করতে পারতাম। তবে হ্যাঁ, আরও বেশি কিছু করার সুযোগ তো সবসময় ছিলই।” আরেকটি বাস্তবতাও উপলব্ধি করতে পারছেন ব্রæক। জাতীয় দলের হয়ে যেমন মাত্র ৩টি ওয়ানডে খেলেছেন, এর বাইরে ঘরোয়া ক্রিকেটে বা ‘এ’ দলের হয়েও এই সংস্করণে খেলেন না তিনি চার বছরের বেশি সময় ধরে। জাতীয় দলের ওই ৩ ম্যাচের বাইরে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তিনি সবশেষ খেলেছেন ২০১৯ সালের মে মাসে ইয়র্কশায়ারের হয়ে। গত চার বছরে আর ঘরোয়া একদিনের ম্যাচে খেলতে পারেননি একই সময়ে হান্ড্রেড বা জাতীয় দলের ব্যস্ততা থাকায়। গত আইপিএলে চোখধাঁধানো পারিশ্রমিকে দল পেলেও একটি সেঞ্চুরি ছাড়া ভালো কিছু করতে পারেননি ব্রæক। পরে তো একাদশে জায়গাও হারান। ভারতের মাঠে বিশ্বকাপে এটিও নির্বাচকদের বিবেচনায় ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্রæক নিজেও অনুধাবন করতে পারছেন এসব। “সত্যি বলতে, ওয়ানডে ক্রিকেটে খুব বেশি খেলার সুযোগ পাইনি আমি, সেটা ইয়র্কশায়ারের হয়ে হোক বা ইংল্যান্ডের হয়ে। যদিও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট প্রচুর খেলেছি। তবে জানি না, আগে যতটা ভালো করেছি, গত ৬ মাসে ততটা পেরেছি কি না। সেটাও হয়তো কোনো প্রভাব রেখেছে।” ব্রæকের না থাকা অবশ্য বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে ইংলিশ ক্রিকেটে। জফ্রা আর্চার যেমন বিস্মিত। চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকা এই ফাস্ট বোলার দা হান্ড্রেড-এ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন বিবিসিতে। বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন না তিনিও। চোটের কারণে ¯্রফে রিজার্ভ বোলার হিসেবে ভারতে যাবেন ইংল্যান্ডের গত বিশ্বকাপ জয়ের নায়কদের একজন। তবে ব্রæককে স্কোয়াডে না দেখে তিনি অবাক। “আমি এমনকি খেয়ালও করিনি যে ব্রæকি (ব্রæক) স্কোয়াডে নেইৃ এটা আমাকে এতটাই হতবাক করেছে।” কেভিন পিটারসেনের মতে, ভারতের কন্ডিশনে দাভিদ মালানের চেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারতেন ব্রæক। সাবেক এই অধিনায়ক মানতেই পারছেন না আগ্রাসী এই ব্যাটসম্যানের না থাকা। “আমি স্তম্ভিত যে, সে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে নেই। স্তম্ভিত, কারণ সে দারুণ মানসম্পন্নৃ আমি ¯্রফে বিশ্বাস করতে পারছি না।”