শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন

হেরে গিয়ে আফগানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩

এফএনএস স্পোর্টস: বাউন্ডারিতে পাকিস্তানকে জিতিয়ে যখন ব্যাট আর গøাভস ছুড়ে ফেলে বাঁধানহারা উদযাপনে ডানা মেলে দিয়েছেন নাসিম শাহ, আফগান ক্রিকেটাররা তখন যেন স্তম্ভিত। হাশমাতউল্লাহ শাহিদির চোখেমুখে ফুঠে উঠল রাজ্যের হতাশা, আফগান অধিনায়ক যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না কী করবেন। রাশিদ খান, মোহাম্মাদ নাবির মতো অভিজ্ঞরা তখন স্তব্ধ, মাথা নিচু করে ঠায় দাঁড়িয়ে শেষ ওভারের বোলার ফাজালহাক ফারুকি। ১৫১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর প্রায় ৫০ ওভার দারুণ কিপিং করা রহমানউল্লাহ গুরবাজ হতাশায় কিপিং গøাভস ছুড়ে মারলেন মাঠে। হাতের মুঠো থেকে জয় ফেলে দেওয়ার পর এমন প্রতিক্রিয়াই স্বাভাবিক। ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে প্রথমবার হারানোর খুব কাছে চলে গিয়েছিল তারা বৃহস্পতিবার। কিন্তু স্বপ্নের অপমৃত্যু শেষ সময়ে গিয়ে। এমন পরাজয় মানতে কষ্টই হচ্ছে আফগানদের। শেষ ২ ওভারে ¯্রফে ২ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। এই সময়টাতেই খেই হারায় আফগানরা। আবদুল রহমানের করা ওভারের প্রথম বলে রান না হলেও পরের তিন বলেই দুটি করে রান নেন শাদাব খান। তবে আফগানদের মূল সর্বনাশ হয় শেষ দুই বলে। তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা রহমান ভেঙে পড়েন চাপে। ২১ বছর বয়সী পেসার দুটি বলই করে বসেন ফুল টস। প্রথমটি লেগ স্টাম্পে, শাদাব মারেন চার। পরেরটি ¯েøায়ার করতে গিয়ে রসালো ফুল টস। এবার শাদাব অনায়াসে উড়িয়ে দেন ছক্কায়। ৮ বলে ২১ রানের সমীকরণ নেমে আসে ৬ বলে ১১ রানে। তারপরও শেষ ওভারে সম্ভাবনা প্রবলভাবেই জাগিয়ে তোলে আফগানিস্তান। ওভারটি শুরুর আগেই যে বিদায় নেন তাদের মূল বাধা হয়ে থাকা শাদাব খান! বারবার আগেই ক্রিজে ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন শাদাব। আফগানরা হয়তো তা খেয়াল করেছিল। শেষ ওভারে ফাজালহাক ফারুকি প্রথম ডেলিভারি করার আগেই শাদাব যথারীতি বেরিয়ে যান স্ট্রাইক নিতে মরিয়া হয়ে। দ্রæতই নন স্ট্রাইক প্রান্তের বেলস ফেলে দেন ফারুকি। ৩৫ বলে ৪৮ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন শাদাব। উইকেটে তখন পাকিস্তানের শেষ জুটি, ১০ ও ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান। জয় তো আফগানদেরই নাগালে! কিন্তু নাসিম শাহ প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে দেন দারুণ এক ইনসাইড আউট শটে। পরের বলে রান হয়নি, তৃতীয় বলে আসে সিঙ্গেল। চতুর্থ বলে ¯øগ করেন হারিস রউফ। যেটিতে হতে পারত এক রান। কিন্তু ডিপ মিড উইকেটে বলের অ্যাঙ্গেল বুঝতে না পেরে ধোঁকা খান ফিল্ডার। এবার বল গড়িয়ে চলে যাচ্ছিল বাউন্ডারিতে। কিন্তু পেছন থেকে ব্যাক আপ ফিল্ডার কোনোরকমে বল থামান ডাইভ দিয়ে। রান আসে ৩টি। ২ বলে তখন লাগে ৩ রান। ওইসময় আবার গড়বড় করে বসেন ফারুকি। থার্ডম্যান ফিল্ডার বৃত্তের ভেতরে থাকলেও স্টাস্পের বাইরে বল করেন বসেন তিনি। নাসিমের ব্যাটের কানায় লেগে থার্ডম্যান দিয়েই বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। আফগানদের হতাশা দৃশ্যমানই ছিল। ম্যাচ শেষে তা উঠে এলো শাহিদির কণ্ঠেও। আফগান অধিনায়ক অবশ্য শেষ ওভারের চেয়ে দায় দিলেন শেষের আগের ওভারকে। “আমরা খুবই কষ্ট পাচ্ছি, কারণ আমরা মনে করেছিলাম, যথেষ্ট রান তুলতে পেরেছি। তবে শেষ সময়ে ম্যাচটি আমাদের কাছ থেকে ওরা নিজেদের করে নিল। ৪৯তম ওভারটিতেই খেলা (বদলে গেছে)ৃ, সহজ কিছু বল হয়েছে ওই ওভারে, ব্যাটসম্যান যা কাজে লাগিয়েছে। শেষ সময়ে আসলে আমরা চাপের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারিনি।” আগের ম্যাচে ৫৯ রানে গুটিয়ে গিয়ে বিশাল ব্যবধানে হারা দলের জন্য এত দ্রæত ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের কাছে যাওয়াও অবশ্য কম প্রাপ্তি নয়। সেখানে বড় কৃতিত্ব প্রাপ্য রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও তার উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী ইব্রাহিম জাদরানের। গত মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন দুজন। এবার পাকিস্তানের দুর্দান্ত পেস আক্রমণকে পাত্তা না দিয়ে দুজনে গড়েন ২২৭ রানের জুটি! বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪৫ রানের ইনিংস খেলা গুরবাজ এবার নিজেকে ছাড়িয়ে যান ১৫১ রানের ইনিংস খেলে। ওয়ানডেতে ৫ সেঞ্চুরি হয়ে গেল তার ¯্রফে ২৩ ইনিংসেই। ইব্রাহিম এ দিন ফেরেন ৮০ রান করে। ম্যাচ হেরে গেলেও দুই ওপেনারের প্রাপ্য প্রশংসা করলেন অধিনায়ক শাহিদি। “ওরা দুর্দান্ত ব্যাট করেছে। গত দেড় বছর ধরেই ওরা দারুণ করছে এবং আমাদের চাওয়া, ওরা যেন এভাবেই এগিয়ে যায়। দুজনই খুব ভালো, তাদের শক্তির জায়গা আলাদা।”

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com