দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ সাতক্ষীরায় চিংড়ী ঘেরগুলো সাদা প্রজাতির মাছ চাষে বিপ্লব ঘটেছে। লবনাক্ত পানির ঘেরই চিংড়ীর জন্য উপযুক্ত। লবনাক্ত পানিতে সাদা প্রজাতির রুই, মৃগেল, কাতলা, চিতল, মিনারকাপ, ট্যাবলেট, জাপানি পুটি সহ বহুবিধ মিঠা পানির মাছের অস্তিত্ব বা উৎপাদন শুন্যের কোঠায়। গত কয়েক বছর যাবৎ লবনাক্ত চিংড়ী ঘেরগুলোতে ব্যাপক ভিত্তিক মিঠা পানির উলেখিত মাছ উৎপাদন হচ্ছে। আষাঢ় শ্রাবনের বৃষ্টির পানিতে লবনাক্তময় চিংড়ী ঘেরগুলোর পানি ক্রমান্বয়ে লবনাক্ত কাটতে থাকে শেষ শ্রাবনে এবং ভাদ্রমাসে বৃষ্টির পানির প্রভাবে জেলার শত শত চিংড়ী ঘেরের পানি দুধলবন হয় যা মিঠা পানির মাছের জন্য সহনীয় আবাস স্থল সৃষ্টি করে। গত একমাস যাবৎ চিংড়ী ঘের গুলোতে সাদা মাছ অবমুক্ত করছে ঘের ব্যবসায়ীরা। প্রতি কেজিতে ৮/১০ পিচের রুই, কাতলা, মৃগেল সহ অপরাপর চালাই মাছ, আবার অনেকে ৪/৫ টি কেজির চালাই অবমুক্ত করছে। ইতিপূর্বে কলারোয়া ও যশোর এলাকার চালাই মাছ সাতক্ষীরার সদর উপজেলা, দেবহাটা, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরের চিংড়ী ঘেরগুলোর সাদা মাছের চাহিদা মেটালেও সা¤প্রতিক বছর গুলোতে সদর উপজেলা, দেবহাটা সহ অপরাপর উপজেলা গুলোতে দুই/তিন বিঘার আয়তনের সাদা (চালাই মাছের) চাষ হচ্ছে এবং উক্ত চালাই মাছ স্ব স্ব উপজেলার চাহিদা পূরন করছে। চালাই মাছ চাষীরা নিজস্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিম ফুটিয়ে রেনু অবমুক্ত করে আবার অনেকে কেজি প্রতি রেনু প্রতি কেজিতে (দুই হাজার তিন হাজার) অবমুক্ত করে কেজিতে ১০/১৫ এবং ৪/৫টি হলে ঘের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে খুচরা ক্রেতারা স্থানীয় ভাষায় যাদেরকে হাড়ি পাটি বলা হয় তারা সাদা মাছের ঘের হতে চালাই মাছ ক্রয় করে বাজারে এনে বিক্রি করছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ঘের এলাকায় যেয়েও বিক্রি করছে। চিংড়ী ঘেরগুলোতে সাদা মাছ অবমুক্ত করার সময় ফুরিয়ে আসছে। শেষ মুহুর্তে তাই হাড়ি পাটির প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে ঘের ব্যবসায়ীরা। দৃশ্যতঃ সাতক্ষীরার বাস্তবতায় দীর্ঘদিন যাবৎ চিংড়ী নির্ভর অর্থনীতির সুবাতাস বইলেও বর্তমান মৌসুমগুলোতে সাদা মাছ নির্ভর অর্থনীতির মেরুকরন ঘটেছে। চালাই উৎপাদনে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে যে কারনে চালাই উৎপাদন এর ক্ষেত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে। খোজ নিয়ে জানাগেছে বর্তমান সময়ে কেজি প্রতি রুই কাতলা ৮/১০ টি ২২০ হতে ২৩০ টাকা, কয়েকদিন পূর্বে ও দাম কিছুটা চড়া ছিল বেশীর ভাগ চিংড়ী ঘেরে সাদা মাছ অবমুক্ত করার চাহিদা পূরন হওয়ায় বর্তমানে চাহিদা কিছুটা হ্রাস পেলেও প্রতিনিয়ত ঘেরগুলোতে চালাই উৎপাদন কারী এবং ঘের ব্যবসায়ীরা উভয়ই সাদা মাছে লাভবান হয়েছে। বর্তমানে সাদা মাছের বাজার চড়া, সাতক্ষীরার উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের সাদা প্রজাতির মাছ কেবল রাজধানীতে যাচ্ছে তা নয় দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় যাচ্ছে। এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারনে সাদা মাছ উৎপাদনে ব্যবসায়ীরা অধিকতর আগ্রহী হচ্ছে।