দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ আজ থেকে সুন্দরপ্রান প্রান ফিরে পাচ্ছে। উন্মুক্ত হচ্ছে বিশ্বের অনন্য অসাধারন নয়নাভিরাম আর সম্পদের মহাক্ষেত্র প্রিয় সুন্দরবন। উন্মুক্ত দার দিয়ে এবার বন অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে পর্যটক, বনজীবী, জেলে, বাওয়ালী, মাওয়াল সহ বনের সাথে সংশ্লিষ্টরা। সুন্দরবনকে সুন্দর রাখতে, জীব বৈচিত্র, মাছ সহ অপরাপর প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সেই সাথে পরিবেশ এবং সৌন্দর্যকে অক্ষুন্ন রাখতে দীর্ঘ তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের দ্বার বন্ধ ছিল। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত সত্যিকার অর্থে বনজ সম্পদ রক্ষায় অতি কার্যকর। সরকার এই দীর্ঘ সময় যেমন রাজস্ব উপার্জন হতে বঞ্চিত হয়েছে একই সাথে ভ্রমন পিপাসুরা (পর্যটক) সুন্দরবন ভ্রমন করতে পারেনি অন্যদিকে সুন্দরবনের উপর জীবন জীবিকার জন্য নির্ভরশীল হত দরিদ্র বনজীবিরাও সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারেনি। বনের উপর নির্ভরশীল হত দরিদ্ররা অবশ্য সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ তথা বন্ধ থাকা দরজা আজ খুলছে আর এ নিয়ে অন্তত পক্ষকাল ব্যাপী সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত বনজীবীদের তোড়জোড় তথা প্রস্তুতির সামান্যতম ঘাটতি নেই। জাল নৌকা সাবাই, প্রস্তুত, জ্বালানী এবং খাবার, পোশাক শেষ নেই। বন অভ্যন্তরে প্রতিনিয়ত, প্রতিমুহুর্তে বাঘের আক্রমনের শঙ্কা, সেই সাথে সাপ কুমির সহ অপরাপর হিংস্র প্রাণির আনাগোনা, সব কিছুকে উপেক্ষা করে বনজীবিরা বন অভ্যন্তরে মৌসুমে নিরন্তন জীবন মরন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকবার প্রানন্তকর প্রচেষ্টাকে সঙ্গী করে। বন অভ্যন্তরের দ্বার বন্ধ ছিল বনের উন্নয়নেই তবুও মন যেন মানছিলনা অভাবের সংসারের কান্ডারীদের। গতকাল থেকে শুরু হচ্ছে উৎসবের যাত্রা প্রস্তুতি, ভোর হতে না হতেই নৌকা, ট্রলার এবং বিপদ সংকুল ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে তারা আজ জীবন যুদ্ধের সোনালী আর স্বচ্ছলতার যাত্রায় সামিল হবে। ইতিমধ্যে পাস সংগ্রহ করেছে তারা। গত ১ জুন হতে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত সুন্দরবন ভ্রমন সহ জেলে সহ অপরাপর বনজীবীদের বনে প্রবেশাধিকার না থাকায় বেকার হয়ে পড়া শ্রম পরিবার গুলো আজ হতে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে। অভাবের দিন গুলো এবার হয়ত শেষ হতে চলেছে। তিন মাসের বেকারত্বের কারনে বনজীবীরা আর্থিক ভাবে ঋনগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। সুদঋন, মহাজন ঋন এবং এনজিও ঋনে আক্রান্ত। তালিকা করা জেলেরা অতি দ্রুত সরকারি সহায়তা পাবেন বলে আশা করছেন। পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিক শ্রেনিরা ও তিন মাসে পর্যটকদের মাধ্যমে উপার্জন করতে পারেনি। অবশ্য করমজল এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমন ছিল। পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িতরাও আর উপার্জনের আশা করছেন। অভিযোগ নিষিদ্ধ বৃক্ষ নিধন ও জীব বৈচিত্র কে ধ্বংস করে আবার বনজীবীদের আবরনে বা ছদ্দবেশে চোরা শিকারীরাও বন অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। বন বিভাগ তথা সুন্দরবন রক্ষায় নিয়োজিত দায়িত্বশীল সহ বন প্রহরীদেরকে অধিকতর দায়িত্বশীল এবং কর্তব্য পরায়ন হতে হবে যেন ছদ্দবেশ ধারীরা বৃক্ষ ও জীব বৈচিত্রের ক্ষতি সাধন করতে না পারে।