জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে ॥ নতুন করে স্বপ্নের হাতছানি দিচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের স্বপ্নের রেল সংযোগ প্রকল্পটি। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এই রেল রাজধানী ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা রেল সংযোগটি ফরিদপুরের ভাঙা হয়ে খুলনা-যশোর-বেনাপোল হয়ে ভারতের সঙ্গে সেতু স্হাপিত হবে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে কমলাপুর থেকে ভাঙা রেল চলাচলের মাধ্যমে নতুন দিগন্তের সূচনা ও সেতু রচিত হয়েছে। এই স্বপ্ন যাত্রাই সরকারের মন্ত্রী-পরিষদের সদস্য, সংসদের চীফ হুইপ, এমপি ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপিসহ সরকারের আমলা এবং পেশাজীবী সদস্য শামিল হন। এর আগে ২০২২ সালের ২৫ জুলাই পদ্মা সড়ক সেতুর উদ্বোধনের মধ্েয দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নপূরণ হয়েছিল। এদিকে, দুপুর সোয়া ১২টায় ভাঙায় পৗেছে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এর আগে সকাল ১০ টা ০৮ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে ভাঙার উদ্দেশ্য যাত্রা করে। প্রায় পাঁচশ সদস্য নিয়ে ট্রেনটি আবার ঢাকায় ফিরে আসে। ফিরতি ট্রেনটি সোয়া ১ টায় কমলাপুরের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসে। ইতিহাসের সাক্ষী হতে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো ট্রেনটির দু’পাশে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানাতে দেখা যায়। উৎসবের আমেজে মেতেছিল পুরো কমলাপুর থেকে ভাঙা পর্যন্ত। নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সাধারণ মানুষ। তারা বলেন, কখনও ভাবেনি ট্রেন চলবে এই পথে।আজ তা বাস্তবে রুপ পেতে যাচ্ছে। এদিকে, আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমলাপুর থেকে ভাঙা পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করবেন। আর তার ১ সপ্তাহ পরে এ রুটে বাণিজ্যিক ভাবে ট্রেনে চরাচল করবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, বিএনপি জামাত সরকার রেলকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলের উন্নয়নে রেল মন্ত্রণালয়কে আলাদা করেন। বিএনপি জামাত জোট রেললাইন উপড়ে, রেল পুড়িয়ে ও রেলের প্রচুর ক্ষতি করে। আর বর্তমান সরকার রেলের জন্য কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা থেকে পদ্মা৷ সেতুর ওপর দিয়ে ভাঙা পর্যন্ত পরীক্ষা মূলক ট্রেন চলাচল করে। সকাল ১০ টা ৮ মিনিটে কমলাপুর থেকে ট্রেনটি ছেড়ে দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ ভাঙা স্টেশনে পৌছায়। সেখানে হাজারো উৎসাহী জনতা রেলমন্ত্রীসহ ট্রেনটিকে স্বাগত জানায়। এ সময় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, এক বছর আগে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। আর আজ আমরা কমলাপুর থেকে ভাঙা পর্যন্ত পরীক্ষা মূলক ট্রেন চালালাম। মোটামুটি লাইনের অগ্রগতি ঢাকা -মাওয়া ৮০ শতাংশ, মাওয়া – ভাঙা ৯৬ শতাংশ এবং ভাঙা থেকে যশোর পর্যন্ত ৭২ শতাংশ অগ্রগতি হযেছে। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী এ রুটে ট্রেন রেল চলাচলের উদ্বোধন করবেন। তার সপ্তাহখানেক পরে বাণিজ্যিক ভাবে এ রুটে ট্রেন চলবে। ভাঙায় প্রেসবিফিংয়ে সাংবাদিকদের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষিত পদ্মা রেল সংযোগ সেতু এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার দশটি প্রকল্পের দুটি হলো পদ্মা রেল সংযোগ ও চট্টগ্রাম দোহাজারী কক্সবাজার সম্প্রসারিত রেল সংযোগ প্রকল্প। এই দুটি প্রকল্প উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত। শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করবেন। প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ভাঙা পযর্ন্ত ৮২ কিলোমিটার চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে। এটি খুলনা যশোর পযর্ন্ত মোট ১৭২ কিলোমিটার। এই যাত্রাই রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সংসদের প্রধান হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী, মেহের আফরোজ চুমকি, সাগুফা ইয়াসমিন এমিলি, নিক্সন চৌধুরী, সাইফুজ্জামান শিখর, রুবিনা আক্তার, নাসরিন শিকদার ও নাহিদ ইজাহার খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, এই পরীক্ষামূলক রেল চলাচল উপলক্ষ্যে উৎসবে রাঙানো হয়।