দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ সড়কে সড়কে দূর্ঘটনা থেমে নেই। প্রতিনিয়ত এবং প্রতিমুহুর্তে সড়ক ও মহাসড়ক গুলোতে আহতদের আর্তনাদ এবং নিহতদের পরিবারের আহাজারি সড়ক পথের সীমানা ভেদ করে আকাশে বাতাসে যেন কান্নাকাটি করছে। যে পরিবারের কোন সদস্য সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত এবং আহত হয় সেই পরিবারের সদস্যরাই জানেন সড়ক দূর্ঘটনা কতটুকু বেদনাদায়ক এবং মর্মান্তিক। একটি মৃত্যু এবং একটি পঙ্গুত্ব আজীবনের কান্না। সড়ক দূর্ঘটনা এতটুকু বেহিসেবী এবং অহরাজ ঘটে চলেছে যেন মহামারী আকার ধারন করেছে। সদ্য শেষ হওয়া পবিত্র ঈদুল আযহার দিনগুলোতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় দুই শতাধিক মানব সন্তানের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দেশের সড়ক ও মহাসড়ক গুলোর মান কোন ভাবেই অনুন্নত নয় আমাদের দেশের সড়ক ও মহাসড়কগুলো শুধুমাত্র উন্নত বা আধুনিক নয়, বিশ্বমানেরও বটে। কিন্তু কেন প্রতিনিয়ত প্রতি মুহুর্তে দেশের সড়ক ও মহাসড়ক গুলোতে মহামারী আকার ধারন করেছে সড়ক দূর্ঘটনা? বারবার একটি প্রশ্ন সম্মুখ পানে আসছে তা হলো যানবাহন গুলোর কোন কোনটি নিয়ন্ত্রনহীন গতিতে চালনা, ট্রাফিক আইন না মানা, আবার কোন কোন ক্ষেত্রে যানবাহনের ফিটনেসহীনতা, যখনই দেশের অভ্যন্তরের সড়করা মহাসড়কে দূর্ঘটনায় পরিচিত, বিখ্যাত আর আলোকিত কোন ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে তখন দেশ ব্যাপী সড়ক দূর্ঘটনা রোধে, প্রতিকারে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়টি সামনে আসে। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই সব ধরনের তোড়জোর অনুপস্থিত হয়ে পড়ে। বর্তমান বর্ষা মৌসুম চলছে সড়ক ও মহাসড়ক গুলোতে কোন কোন অংশে পানি জমে থাকে আবার সড়কের খানা খন্দক গুলোতে পানিতে পূর্ণ থেকে বড় বড় গাড্ডার সাথে মিশে সড়ক দূর্ঘটনা ত্বরান্বীত করতে পারে একই ভাবে সড়কের দুই পার্শ্বে জমে থাকা পানি কাদা সড়ক দূর্ঘটনাকে এগিয়ে নিতে যথেষ্ট। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় থেমে নেই সড়ক দূর্ঘটনা নামক মানব ঘাতক, সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়ক দূর্ঘটনার মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন সড়কে সড়কে লাশের মিছিল সাতক্ষীরাকেও স্পর্শ করেছে। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়ক অত্যাধিক ব্যস্ততম সড়ক। প্রতিদিন এই সড়কটিতে হাজার হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। একদিকে ভোমরা স্থল বন্দর এর পণ্য সামগ্রী বহনকারী মালবাহী বৃহদাকার ট্রাক চলাচল, সাতক্ষীরা বড় বাজার মুখি বিভিন্ন ধরনের পন্যের আনা নেওয়া পণ্য বাহী ট্রাক, মিনিট্রাক, ও যানবাহন, বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক সামগ্রীর আনা নেওয়া, রপ্তানীযোগ চিংড়ী সহ অভ্যন্তরীন বাজার গুলোতে চিংড়ী সহ সাদা মাছের চালান প্রেরন, একমাত্র সড়কটি যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যম। ট্রাক, বাস, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মহেন্দ্র, পা ভ্যান, মোটর সাইকেল সবই চলছে একাধারে যে কারনে এই সড়কটি দূর্ঘটনা প্রবন হয়ে পড়েছে। সড়কটিতে সাম্প্রতিক সময় গুলোতে যেমন উঠতি বয়সের (কিশোর) ছেলেরা মোটরবাইক নিয়ে বেহিসেবী ভাবে চলাচল করছে। মোটর সাইকেল আরোহীরা সড়ক দূর্ঘটনায় বিপর্যস্ত হচ্ছে। সড়কে মোটরসাইকেল আরোহী কিশোর মোটরসাইকেল নিয়ে নিহত হয়ে পড়ে থাকছে অথবা আহত হয়ে মরনযন্ত্রনায় ভুগছে। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কে কথিত যানবাহন ইজিবাইক, মহেন্দ্র, ইঞ্জিনভ্যান, নছিমন, করিমন, অবলিলায় চলছে তো চলছেই। সাতক্ষীরার প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিনের অতি প্রয়োজনীয়তা সেই সাথে বিশলক্ষাধীক জনমানুষের প্রত্যাশা রেলপথ, জেলায় রেল পথ থাকলে সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়ক বর্তমানের ন্যায় ব্যস্ততম থাকতো না, রেল পথ যাতায়াত, যোগাযোগ পণ্য বহনে ভূমিকা রাখতো এবং সড়ক দূর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ হতো। সড়ক দূর্ঘটনা রোধে দক্ষযোগ্য চালকের অপরিহার্যতা এবং নিয়ন্ত্রনের মধ্যে যান চলাচল করতে হবে। সর্বদা ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে, সড়কে সড়কে লাশের উপস্থিতি রোধ করতে হবে।