দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা তথা যুগ জামানায় মোবাইল ফোন যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমন অতি পরিচিত এক ডিভাইস। বর্তমানের তথ্য প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ফোন ব্যতিত জীবনযাত্রা কর্মযজ্ঞ অচল। প্রযুক্তির এই মাধ্যম বিশ্বকে কাছাকাছি আনলেও অতিরিক্ত ব্যবহার মানব দেহের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মোবাইল ফোন, ল্যাবটপ, ট্যাব, টেলিভিশন শিশুদের জন্য কেবল বিপদজনক নয়, জীবনী শক্তি শেষ হওয়ার পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের ক্ষতির কারন। কিন্তু বাস্তবতা হলো দেশের শিশুদের হাতে মোবাইল ফোনের উদ্বেগজনক উপস্থিতি। এক সময় শহরের শিশু, কিশোরদের হাতে এই ফোনের উপস্থিতি দেখা গেলেও সাম্প্রতিক সময় গুলোতে গ্রামে গ্রামে মোবাইল ফোনের অত্যাধিক উপস্থিতির কারন হেতু গ্রামের শিশু কিশোরদের মাঝে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং প্রতিনিয়ত ফোন নিয়ে শরীরের ধ্বংসে মেতে আছে। শিশুদের হাতে হাতে জীবনী ধ্বংসকারী মোবাইল ফোন পরিস্থিতি এপর্যায়ে পৌছেছে যে, এই যন্ত্রটি যেন এক ধরনের খেলনা। পিতামাতা শিশুমনকে শান্ত রাখতে, শিশুদের খেলায় ব্যস্ত থাকতে অবলিলায় ফোন দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে মোবাইল ফোন কোন ধরনের খেলনা নয়, শিশুদের কে মোবাইল হতে দুরে রাখতে মায়েরাই সর্বাধিক ভূমিকা রাখতে পারে, বিধায় শিশুকে মোবাইলের ক্ষতিকর ক্রিয়া হতে শিশুদেরকে মায়েরাই রক্ষা করতে পারেন। বর্তমান সময় গুলোতে দেখা যায় শিশুর চাওয়া এবং পাওয়ার ক্ষেত্রে কান্নাকাটি হতে রক্ষা পেতে মায়েরা শিশুদের হাতে মোবাইল তুলে দেন। যা নিজ হাতে নিজের সন্তানকে ক্ষতির মুখে নিক্ষেপ করা। শিশুদের ধারনশক্তি কম বিধায় শিশুদেরকে ডিভাইস মারাত্মক সমস্যায় ফেলে থাকে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন আসক্তির কারনে শিশুর স্নায়ু, কান ও চোখের সমস্যা সৃষ্টি করে। এই ফোনের ক্ষতিকর রেডিয়েশন শিশুদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। সঙ্গত কারনে বয়স্কদের অপেক্ষা শিশুদের মাথার খুলি যেমন পাতলা তেমন ছোট বিধায় মোবাইল ফোন এবং ল্যাবটপের রেডিয়েশন শিশুদের মস্তিককে ক্ষতি করে। মোবাইল ফোন শিশু বিকাশে, সামাজিকতায় সর্বপরি সৃজনশীলতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, একটি শিশু সর্বক্ষনিক মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে সে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে এবং অসামাজিক হয়। বাইরের খোলামেলা জগৎ হতে বিচ্ছিন্ন হয়, আর এ কারনে তার জগৎ সংকুচিত হয় যে কারোর সাথে মিশতে পারে না। মোবাইল ফোনের আগ্রহ হতে আপনার বাচ্চাকে দুরে রাখতে তাকে নানান ধরনের কাজে ব্যস্ত রাখুন। গল্প শোনান, খেলাধুলায় উৎসাহিত করুন, ফুলবাগান করতে ও পরিচর্যায় উৎসাহিত করুন, গান, কবিতা আবৃতিতে ও সৃজনশীল কর্মকান্ডে এগিয়ে নিন। পিতামাতাকে অবশ্যই সংযমী হতে হবে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে, বিশেষ কের বাবা মাকে অবশ্যই তার শিশুর সামনে যখন তখন মোবাইল ফোন ব্যবহার হতে বিরত থাকতে হবে। শিশুরা যেমন অনুকরন প্রিয় অনুরুপ কৌতুহলী বিধায় বাবা মায়ের হাতে থাকা মোবাইল ফোনের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বেই। কোন ভাবেই শিশুদের কে ব্যস্ত রাখতে তাদের হাতে মোবাইল দেওয়া যাবে না। আমাদের সন্তান মাদকের সাথে পরিচিত হোক তা কোন ভাবেই আমরা প্রত্যাশা করি না, বিধায় কোন ভাবেই আমরা যেন আমাদের বাচ্চাদের হাতে মোবাইল ফোন না দিই, অতিরিক্ত টিভির সামনে না রাখি। মনে রাখবেন মাদক অপেক্ষা শিশুদের জন্য মোবাইল ফোন কোন অংশে কম বিপদজনক নয়।