এফএনএস বিদেশ : ন্যাটো জোটের সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে বিদেশি ভাড়াটে সেনা হত্যার দাবি করেছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে ইয়াভোরিভ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলায় ইউক্রেনের অন্তত ১৮০ জন ভাড়াটে বিদেশি সেনা নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ধ্বংসের দাবি করেছে মস্কো। তবে স্থানীয় কর্মকর্তাদের দাবি রবিবারের এই হামলায় ৩৫ জন নিহত এবং আরও ১৩৪ জন আহত হয়েছেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেঙ্কোভ এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীতে যোগ দেওয়া বিদেশি সেনাদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী ইউক্রেনীয় ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিপুল পরিমাণ ধ্বংস হয়েছে। মস্কোর দাবি, বিদেশিদের সরবরাহ করা এসব অস্ত্র ওই ঘাঁটিতে মজুত রাখা হয়। পোল্যান্ড সীমান্তে হামলার পর নড়েচড়ে বসেছে পশ্চিমা বিশ্ব। যুক্তরাজ্য বলেছে, এই ঘটনা সংঘাত উলেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সতর্ক করে বলেছেন, ন্যাটো সীমান্তে যেকোনও আঘাতের পাল্টা জবাব দেবে পশ্চিমা সামরিক জোট। ৩৬০ বর্গকিলোমিটারের ইয়াভোরিভ কেন্দ্রটি ইউক্রেনের অন্যতম বড়, এবং দেশটির পশ্চিমাংশের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। এতোদিন পর্যন্ত সংঘাতের বাইরেই ছিল কেন্দ্রটি। ইউক্রেন ছাড়ছে লাখ লাখ মানুষ রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছেন ২৫ লাখের বেশি ইউক্রেনীয়। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর এত সংখ্যক শরণার্থী ইউরোপে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি। ইউক্রেনের রুশ অভিযানের ১৯তম দিনে গড়িয়েছে। গোলা আর বোমা বর্ষণের কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছে ইউক্রেনের নাগরিকরা। পালিয়ে আসাদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী নাগরিকদের দেশ না ছাড়তে একটি আইন জারি করে ইউক্রেন সরকার। রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যই এমন পদক্ষেপ নেয় ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার। দেশ ছেড়ে যাওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী ঢুকেছে প্রতিবেশী পোল্যান্ডে। ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, যুদ্ধ শুরু পর এ পর্যন্ত ১৬ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এই সংখ্যা সামনে আরও বৃদ্ধি পাবে। পার্শ্ববর্তী দেশ হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়াতেও প্রবেশ করেছেন অনেকে। ২ লাখ ৪৫ হাজার হাঙ্গেরি আর স্লোভাকিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার শরণার্থী। এমন তথ্য শুক্রবার জানিয়েছে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি। আয়তনে ছোট হলেও ইউক্রেনের ৩ লাখ ২৮ হাজার শরণার্থীর জায়গা হয়েছে মলদোভায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মলদোভার পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী নিকু পোপেস্কু। আর রোমানিয়ায় ঢুকেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার শরণার্থী। অন্যদিকে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, আয়ারল্যান্ডসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে অব্যাহত আছে ইউক্রেনের শরণার্থী প্রবেশ। সূত্র: আল জাজিরা।