ব্রহ্মরাজপুর প্রতিনিধি ॥ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ও ব্রহ্মরাজপুর এলাকায় প্রতিমা তৈরিতে শেষ মুহূর্তে চলছে কারিগরদের ব্যস্ততা।এখন যেন দম ফেলার সময় নেই তাদের। বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। জানা যায়, দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয় মহালয়ার দিন থেকেই। তবে আগামী ২০ অক্টোবর (২ কার্তিক) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে সূচনা এবং ২৪ অক্টোবর(৬ কার্তিক) বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা জেলার প্রতিমা শিল্পীরা কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে রাতভর প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন। দক্ষ হাতের নিখুঁত কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে আয়োজন। পূজার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে- ততই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। এসময় বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কারিগররা তাদের নিখুঁত হাতের কারুকার্যে বাঁশ, কাঠ, সুতা, খড়, কাদামাটিসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি করছে প্রতিমা। মন্দিরগুলোতে দেবী দুর্গার প্রতিমা ছাড়াও কার্তিক, গনেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতীসহ অন্যান্য প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন এই শিল্পীরা।প্রতিমা শিল্পী দেবপ্রসাদ দৃষ্টিপাতকে বলেন, আমি দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পেশার সাথে জড়িত। সারা বছর কাজ না থাকলেও বছরের এই সময় ২৫ টিরও বেশি প্রতিমা তৈরি করি। ফলে ৪/৫ জন সহযোগীও নিতে হয়। সময়ের সাথে সাথে প্রতিমার আকার ও ডিজাইনে ভিন্নতা এসেছে। আমাদের মাটির কাজ শেষ। পূজা শুরুর কয়েকদিন আগে রঙের কাজ শেষ করে কমিটির লোকজনের কাছে প্রতিমা বুঝিয়ে দেওয়া হবে,কয়েক জায়গায় কাজ শেষ। পূজোর অল্প কিছুদিন বাকি থাকায় চাপ অনেক বেশি। তিনি বলেন প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেশি। খরচা গিয়ে লাভ থাকে না।সার্বজনীন ব্রহ্মরাজপুর দুর্গাপূজা কমিটির সভাপতি গৌতম বিশ্বাস দৃষ্টিপাতকে বলেন, গতবছরে তুলনায় এবছর বাজেট অনেক বাড়াতে হয়েছে। গত বছর থেকে এ বছর প্রতিমা তৈরির খরচও প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি লাগছে।তিনি আরো জানান, মন্দির ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজা মণ্ডপ সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় রাখা হয়েছে। ধুলিহর ব্রাহ্মণপাড়া সার্বজনীন মন্দির পূজা কমিটির সভাপতি সজীব দত্ত দৃষ্টিপাতকে জানান, নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী। প্রতিটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে আমাদের বাজেট বাড়াতে হয়েছে। মন্দির ও দর্শনার্থীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সর্বক্ষণ সিসি টিভিতে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, পূজোর দিন ঘনিয়ে আসায় মন্দির কমিটির সকলেই ব্যস্ত সময় পার করছি। ধুলিহর পালপাড়া বাসিন্দা অনুপ কুমার বলেন, দুর্গা পূজা আমাদের সবচেয়ে বড় পূজা। চার দিন ব্যাপী পূজোর প্রতিদিনই ঘুরতে যাই ও মজা করি। সবকিছু ঠিক থাকলে এবছরও ঘুরব মজা করব। ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই হাসান রহমান দৃষ্টিপাতকে জানান,দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিনিয়ত মন্ডবপরিদর্শন সহ সকাল সন্ধ্যা টহাল ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি- সেক্রেটারিদের বিভিন্ন নির্দেশনাসহ সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিক বিষয়ে মনিটরিং কাজ চলমান।