এস এম জাকির হোসেন শ্যামনগর থেকে ॥ শ্যামনগর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে ৭০টি দুর্গাপূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরি ও সাজ সজ্জায় শেষ মুহূর্তে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নানা রঙ-ঢঙে। দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। সনাতন ধর্ম মতে এ বছর দেবী দূর্গা আসছে ঘোটকে চড়ে এবং প্রস্থান করবে ঘোটকে চড়ে। উপজেলার কয়েকটি পুজা মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, মৃৎশিল্পীরা তাদের মনের মধ্যে লুকায়িত মাধুর্য্য দিয়ে সেরা সৈল্পিক দক্ষতায় সুনিপূণ কারুকার্যে উদ্ভাসিত করে তুলেছে দেবী দূর্গার মমতাময়ী রুপ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসবকে ঘিরে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। মাটির কাজ শেষ করে এখন চলছে সাজসজ্জার কাজ। রঙের আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নানা রঙ-ঢঙে। পূজা ঘনিয়ে আসায় এখন রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎশিল্পীরা।উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ কৃষ্ণপদ মন্ডল জানান, এবার উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ৭০টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। সরকারি সকল নিয়ম মেনে আনন্দঘন পরিবেশে উৎসব উদযাপনের সব প্রস্তুতি নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মেনে পূজার আয়োজন করতে বলা হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দেবীর অর্ঘ্য নিবেদনের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই উৎসবে প্রশাসন ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সর্বাত্বক সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দূর্গাপুজা সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম আজাদ দৈনিক দৃষ্টিপাতকে জানান, বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন শারদীয়া দুর্গাপূজা। এই সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পুলিশ আনসার ভিডিপি সহ সকল বাহিনীর সমন্বয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেইসঙ্গে এখন যে সব পূজা মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে সেসকল স্থানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি পূজা মন্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। উৎসব মুখর পরিবেশে শ্যামনগর উপজেলায় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বক্ষণিক আপনাদের সাথে আছে। তিনি বাঙালির উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা সুন্দরভাবে উদযাপনের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। উল্লেখ্য গত ১৪ অক্টোবর শনিবার দেবীপক্ষের আগমন মহালয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার। আগামী ২০ অক্টোবর ষষ্ঠীতে দশভূজা দেবী দূর্গার সায়ংকালে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসনের মাধ্যমে উপজেলা ব্যাপি সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে বিরাজ করবে উৎসবের আমেজ। উচু নিচু ধনী গরিব ভেদাভেদ ভুলে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্র করে বর্ণিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে ঢাক-ঢোল, কাশা-বাশির আওয়াজে আনন্দঘন পরিবেশে ৫দিন ব্যাপি পালিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা উৎসব। ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ২৪ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজা।