ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি ॥ দিন গড়িয়ে বছর পেরিয়ে সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক যুগে মানব সভ্যতার বসবাস। অতীতের সোনালী দিনের এনালগ পদ্ধতি গুলো যেন ক্রমে ক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে মানব জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে। সর্বত্রই হর হামেশাই সাথে দেখা যাচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া। যন্ত্র প্রযুক্তির অফভূতপূর্ব সাফল্যের ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের চায়ের দোকানগুলোতেও দেখা মিলছে প্রযুক্তির ছোয়া। এক কাপ চায়ের আড্ডায় এ প্রতিবেদকের তথ্য অনুসন্ধানীতে এমন তথ্য মিলেছে। শ্যামনগর উপজেলার নঁয়া বেকি বাজার সংলগ্ন সবুজের চায়ের দোকানে চায়ের আড্ডায় চা খেতে খেতে দেখা গেল মাটির চুলায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ বা গ্যাসের চুলার জ্বালানি হিসেবে গ্যাস সিলিন্ডার নয়। চলছে ছোট ফ্যান বা পাখা দেখতে যেন একটু অদ্ভুত মনে হল। কৌতুহলবসত ভাই ফ্যান কেন চলছে জিজ্ঞেস করতেই মাথাটা দুলিয়ে মুচকি হেসে আলতো ভাবে বললেন ভাই দিন বদলে গেছে। বর্তমান সময়ে আধুনিক যুগে সবকিছুতেই নতুনত্বের ছোঁয়া। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে এই ফ্যান চলছে আর ভেতরে রাখা কয়লা গুলো জ্বলছে। এভাবে গরম হচ্ছে চায়ের পানি। প্রস্তুত হচ্ছে সুস্বাদু চা। ছোটখাটো চায়ের দোকান তবুও যেন পরি পাটিতে ঘাটতি নেই। চায়ের দোকানের বিশেষত্ব দ্বিতল চা। চায়ের নামটা শুনে আগ্রহটা যেন আরো বেড়ে গেল। জানতে ইচ্ছে করল অনেক কিছু। জানা গেল ৪০ বছরের চায়ের দোকান। পৈত্রিক সূত্রে চায়ের দোকানদার হয়েছেন সবুজ (২৯) নামের এই যুবক। নিজেও চায়ের দোকান ১০-১২ বছর ধরে চালাচ্ছেন। দ্বিতল চা এ যেন হাতের এক কারিশমা । হাতের নিপুন ছোঁয়ায় দক্ষ এ কারিগর তৈরি করছেন দ্বিতল এ চা। চায়ের কাপের পানির উপরের অর্ধেক অংশটুকু লাল নিচের অর্ধেক পানি যেন সাদা শরবতের মত। খেতেও বেশ সুস্বাদু। একদিকে সুস্বাদু চা অন্যদিকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কয়লা। ব্যাপারটা বেশ পছন্দনীয়। জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার না করায় পরিবেশ কিছুটা হলেও দূষণমুক্ত থেকে দূরে থাকছে। অন্যদিকে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহারে পাখা চলছে প্রাকৃতিক গ্যাস বা বিদ্যুতের অপচয় রোধ হচ্ছে। সামগ্রিক বিষয়টা যেন অনেকখানি নিরাপদ। নেই কোন দুর্ঘটনার কোনো ঝুঁকি। দ্রুত সময় তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চা। কিভাবে এ প্রযুক্তি তিনি ব্যবহার শিখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি নিজেই এটা উদ্ভাবন করেছি। কামারেরা লোহা পোড়ানোর জন্য হাত দিয়ে রশি টেনে ঢোলের ভিতর কুলার সাহায্যে বাতাস বৃদ্ধির মাধ্যমে আগুনের উত্তর বাড়ায়। ঠিক আমি ও এ ব্যাপারটা উপলব্ধি করেছি অনুসরণ করেছি। এর বিকল্প অনুকরণ হিসেবে ফ্যান বা পাখা ব্যবহার করেছি। যান্ত্রিক শক্তি হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ। নিত্য নতুন আবিষ্কার যন্ত্রপ্রযুক্তির অভূতপূর্ব উৎকর্ষ, সাফল্য মানব জীবনকে সহজ থেকে সহজতর করছে। এমন উদ্যোগ এমন আধুনিকতার ছোঁয়া পৌঁছে যাক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন আশাবাদ সুধীজনদের।