ঢাকা ব্যুরো ॥ বিনা কারণে শিকল টেনে ট্রেন থামানোর জরিমানা ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। বুধবার (২৫ অক্টোবর) সংসদের বৈঠকে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান রেলমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়। মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত খসড়া রেলওয়ে আইনে ‘যদি কোনো যাত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে বা আইনগত কারণ ব্যতিত চেইন টেনে তার সুবিধাজনক স্থানে ট্রেন থামান তা হলে তিনি অনূর্ধ্ব এক মাসের কারাদন্ড বা অনধিক দুই হাজার টাকা অর্থদন্ড, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।’ এই বিধান রাখা হয়েছে। রেলমন্ত্রী বলেন, রানিং ট্রেনে হোস পাইপ বিচ্ছিন্ন এবং শিকল টেনে ট্রেন থামানো প্রতিরোধকল্পে বিভিন্ন ট্রেনে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে চেকিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ট্রেনে চেইন টানার শাস্তি হিসেবে বর্তমানে ২০০ টাকা অর্থদন্ডের বিধান রয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি হতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৪৩টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। রেলপথে লেভেল ক্রসিং গেটে অবৈধভাবে সড়কযানের অনুপ্রবেশের কারণে ২৬ জন এবং অন্যান্য দুর্ঘটনায় ১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। উল্লেখ্য ২৩ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা এগারসিন্দুর গোধূলি ট্রেনের সঙ্গে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে ১৮ জনের প্রাণহানি হয়। ১৮ মাসে ১৪৩ রেল দুর্ঘটন : ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮ মাসে ১৪৩টি রেল দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো: নূরুল ইসলাম সুজন। প্রশ্নোত্তোরে রেলমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েতে জানুয়ারী ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৪৩টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। রেলপথে লেভেল ক্রসিং গেইটে অবৈধভাবে সড়কযানের অনুপ্রবেশের কারণে দুর্ঘটনায় ২৬ জন এবং অনান্য দুর্ঘটনায় একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। সংসদ সদস মোরশেদ আলমের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রেলওয়ে একটি সেবামূলক সংস্থা। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সাল হতে এ পর্যন্ত মোট ৯৫টি নতুন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের এডিপিতে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫টি বিনিয়োগ প্রকল্প এবং তিনটি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প অর্থাৎ মোট ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বর্তশান সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ৮৭৩ দশমিক ১৯ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ৩৪০.১৭ মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রুপান্তর, ১ হাজার ৩৯১ দশমিক ৩২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন/পুন:নির্মাণ, ১৪৬টি নতুন স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ২৩৭টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন/পুন:নির্মাণ, ১ হাজার ৩৭টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন/পুন:নির্মাণ, ১৩৪টি স্টেশনে সিগনালিং বভস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, ৪৪টি নতুন বিদ্যমান ট্রেন সার্ভিস-রুট বর্ধিতকরণ এবং চিলহাটি এক্সপ্রেসসহ ১৪৩টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে। রেলের সেবা আরো আধুনিক করার জন্য বর্তমান সরকারের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।