জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে ॥ সম্প্রতি ভৈরবে এতবড় রেল দূর্ঘটনার পরেও রেলমন্ত্রী মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে না আসায় তাকে তুলোধুনো করলেন জাতীয় সংসদে বিরোধীদল জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, রেলমন্ত্রী স্বপরিবারে মালয়েশিয়াতে আছেন, রেল সচিবও স্বপরিবারে চীনে আছেন, আচ্চা থাকুন, সরকারী খরচে বিদেশ ভ্রমন খারাপ না। তবে আমি আশা করেছিলাম এত বড় দুর্ঘটনা, এত লোক মারা গেল, নিশ্চয়ই রেলমন্ত্রী তড়িঘড়ি ফিরে আসবেন , কিন্তু আসেন নি। অথচ ভারতে তৎকালীন জহরলাল নেহেরুর সরকারের রেলমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী একটি রেলদূর্ঘটনার কারণে পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু পদত্যাগের তো কালচারই আমাদের নেই। চুন্নু এসময় মৃত ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ৫ লাখ করে অর্থ সহায়তা দেবার আহ্বাণ জানান। তিনি বলেন, আর যারা তদন্ত করছেন তাদের রিপোর্ট তো আলোর মুখ দেখবে না , কেননা এতে তো উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়বেন। তাই তদন্ত রিপোর্ট কি হবে তা বলাই বাহুল্য। আর আমি যা বললাম তা যদি সত্য হয় তাহলে তদন্ত অন্য কোন বিভাগ দিয়ে করা দরকার। বুধবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাড়িয়ে চুন্নু এমন অভিযোগ করেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন। মুজিবুল হক চুন্নু বিভিন্ন পত্র পত্রিকার রিপোর্টের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এ দুর্ঘটনায় লোকমাস্টার ও সিগনাল ম্যানকে শাস্তি দেয়া হয়, তবে আসলে যারা উচ্চস্তরের বা পিছনে যারা আছে তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। তিনি বলেন, রেলের টার্ম টেবিল নষ্ট তা ঠিক করার জন্যগত গত বরিবার চট্টগ্রাম থেকে রেলের ঢাকা বিভাগীয় চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে চিঠি দেয়া হয় । বলঅ হয় যে, টার্ম টেবিল নষ্ট হওয়ায় ট্রেন ঠিকমত ঘোরান যাচ্ছেনা। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্খা তেকে যাচ্ছে। চুনউন বলেন, যে ইঞ্জিন দিয়ে মালবাহি ট্রেন চালানো হয়, সেগুলো ‘পোল ২ আই’ তা দিয়ে পিছনে কিছু দেখা যায় না, এবং টার্ম টেবিল না থাকায় ট্রেন ঘোরানো যায় না বলে পোল-২ ইঞ্জিন দিয়ে মালবাহি ট্রেন চালান হয়। যে মালবাহি ট্রেনটি ঢাকাগামী যাত্রীবাহি ট্রেনের পিছনে ধাক্কা মারে সেটা চালাচ্ছিলেন মো. জাহাঙাগীর আলম । তিনি বলেছেন, যে ইঞ্জিন দিয়ে তিনি ট্রেনটি চালাচ্ছিলেন তা এতটা পুরাতন যে তার সামনে দিয়ে তড়িঘড়ি সিগনাল দেখা যায় না, বসার জায়গা বেশ দুরে, বহু দুর থেকে সিগনাল দেখতে হয়। তার নম্বর ২০২৮। পোল ২ আই-এ ইঞ্জিনের দৈর্ঘের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৮ ফুট দুর থেকে সিগনাল দেখতে চান। আবার বেশী দুর থেকে ইঞ্জিনের পিছনে দেখা যায় না। তা ছাড়া মালবাহি ট্রেনের ডিসটিবিউটার ভাল্ব কাজ করেনি, জরুরি ব্রেক কাজ করেনি। সেকারণে তিনি ব্রেক করলেও ট্রেনটি থামেনি। দুর্ঘটনা ঘটে যায়। অথচ আগেই জানান হয়-ঢাকা বিভাগীয় লোকসরের টার্ম টেবিলটি দীর্ঘদিন নষ্ট, তাই ইঞ্জিন ঘোরান যাচ্ছে না। তাই দ্রুত মেরামত করার আবেদন জানান হলেও তা করা হয়নি। তাহলে দোষি কি শুধু ওই লোকমাস্টার। সে কেন একা শাস্তি পাবে?