গাজার চারিদিকে ইসরাইলী সেনা ঃ হিজবুল্লাহ ও হুজি হামলা চালাচ্ছে ঃ রাশিয়া ত্রান পাঠিয়েছে গাজায়
দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইলে ফিলিস্তীনিদের উপর বর্বরোচিত হামলা পরিচালনা করলেও তাদেরকে বীরদর্পে রুখে দিচ্ছে হামাস যোদ্ধারা। হয় মরবো, নতুবা মারবো, গাজা হতে বিতাড়িত হবো না এমন শফতে বিশ্বের অন্যতম পারমানবিক শক্তিধর দেশ ইসরাইলের সাথে লড়াই করে চলেছে। কেবল হামাস নয় লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধারাও ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামলা পরিচালনা করছে। ইতিপূর্বে হিজবুল্লাহ ইসরাইলের অভ্যন্তরে রকেট হামলা পরিচালনা করতো কিন্তু গত দুই দিনে তারা অত্যাধুনিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা করছে। ইসরাইল সরকার লেবানন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে তাদের নাগরিকদেরকে সরিয়ে নিয়েছে। আজ ইসরাইলী হামলার সাতাশ দিন পূর্ণ হয়েছে সাতাশ দিনে দখলদার ইসরাইলী বাহিনীর হামলায় অন্তত নয় হাজারের অধিক নিরীহ ফিলিস্তীনির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চব্বিশ লক্ষ ফিলিস্তীনির বসবাস গাজার বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে কোন ভাবেই সেখানে স্বাভাবিক পরিবেশের উপস্থিতি নেই খাদ্যের জন্য হাহাকার, পানির অভাবে আত্মনাদ ঔষধ আর চিকিৎসার অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত, হাসপাতাল গুলো মুৃত্যুকুপে পরিনত হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে একদিকে নিহতের লাশের স্তুপ, অন্যদিকে আহতদের আত্মচিৎকার সব মিলে এক বিভিষিকাময় পরিবেশের উপস্থিতি। হাসপাতাল গুলোতে অপারেশন কক্ষে অভাব হেতু বারন্দায় চলছে সার্জারির কাজ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্ব ইসরাইলকে অব্যাহত ভাবে সমর্থন জানালেও এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলের প্রতি যুদ্ধ বিরতির আহবান জানিয়েছেন। হামাস যোদ্ধাদের পক্ষ হতে বলা হচ্ছে তারা যুদ্ধ বিরতিতে প্রস্তুত কিন্তু কোন ভাবেই গাজা উপত্যকা ত্যাগ করবে না এবং বিনা প্রতিরোধে ইসরাইলের হামলা ও দখল দারিত্বকে মেনে নেওয়া হবে না। বিশ্বের শত শত কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ করছে গাজায় চরম মানবতা বিপর্যয়ের করুন দৃশ্য। একদা বিশ্বের সব এলাকা হতে ইহুদীরা বিতাড়িত হয় বর্তমান সময়ে বিতাড়িত সেই ইহুদীরা দখলদারিত্বের আবদ্ধে আবদ্ধ হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো ইচ্ছা করলেই ইসরাইলের দখল দালিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। ইসরাইলের গর্ভ আর মর্যাদার প্রতিক খ্যাত অত্যাধুনিক ট্যাংক গুলো গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করার সময়ে হামাস যোদ্ধাদের তুমুল প্রতিরোধে পড়ে। ইসরাইলী সামরিক কমান্ডার জেনারেল ইটজিক কোজেন বিষয়টি স্বীকার করে বলেছে, আমাদের বাহিনী গাজা সিটের দরজায় যেখান থেকে হামাস ও ইসলামিক জেহাদের সদস্যরা হামলা চালাচ্ছে। সৌদি আরব, সহ আরব দেশ গুলো ইসরাইলের হামলার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দৃশ্যতঃ ফিলিস্তীনিরা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে। আরব আমিরাত গাজায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহনে আগ্রহী হলেও ইসরাইলী বিমান হামলার কারনে তা সম্ভব হচ্ছে না। গাজার উত্তরাঞ্চলের জনবসতির দিকেই ইসরাইলী বাহিনীর লক্ষ্য আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ইসরাইলী বাহিনী হামলা পরিচালনা করে চলেছে। প্রতিদিনই হামলার তীব্রতা বাড়ছে তো বাড়ছেই। ইরান বারবার ইসরাইলকে হামলা বন্ধ করার আহবান জানালেও ইরানের আহবান কে কোন অবস্থাতেই পাত্তা দিচ্ছে না দখলদার ইসরাইলী বাহিনী। গত কয়েকদিন যাবৎ গাজায় পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে। গাজা সিটির মতই গাজার তলায় হামাসের কিলোমিটারের পর কিলোমিটার মাকড়সার জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সুরঙ্গের দিকেই বিশেষ দৃষ্টি ইসরাইলের আর সুরঙ্গকে লক্ষ্য বস্তু ভেবেই আক্রমন পরিচালনা করছে দখলদার বাহিনী। ইসরাইলী বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তীনি মহিলা ও শিশুরা যেমন পরিত্রান পাচ্ছে না অনুরুপ ভাবে হাসপতাল, মসজিদ, ও শরনার্থী শিবির রেহাই পাচ্ছে না। ইসরাইলের দানবীয় ও বর্বরোচিত হামলা যে কোন সময়ে বড় ধরনের যুদ্ধ গোটা মধ্যপ্রাচ্যময় ছড়িয়ে পড়তে পারে আর এমনটি যদি ঘটে তাহলে বিশ্ব আরও একটি বিশ্বযুদ্ধ দেখতে পাবে কিন্তু সেটা কোন ভাবেই বিশ্ব শান্তী, কল্যান সর্বপরি বিশ্ব মানবতার জন্য কল্যান বয়ে আনবে না, আর তেমনটি যদি ঘটে তাহলে তার জন্য সমুদয় দায় দায়িত্ব বর্তাবে ইসরাইলের উপর।