শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন

খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০২২

এফএনএস: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ছয়মাস বাড়নো হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত আবেদনে দন্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয়মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এরপর আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রী বলেন, আমি ফাইলটি ছেড়ে দিয়েছি। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলে গেছে। আনিসুল হক বলেন, আগের শর্তে (বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং দেশে চিকিৎসা নিতে হবে) তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয়মাস বাড়ানোর জন্য মতামত দেওয়া হয়েছে। সব কিছু আগের মতো, নতুন কিছু যুক্ত করা হয়নি। আইন মন্ত্রণালয়ে মতামতের পর এখন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আগামী ২৪ মার্চ শেষ হবে। কয়েকদিন আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো এবং চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। গতকাল বুধবারই দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো সংক্রান্ত একটি আবেদন পেয়েছেন। সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মতামত বুধবারের মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হচ্ছে বলে সচিবালয়ে ভিন্ন অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী। খালেদা জিয়ার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা রয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেখানে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান মেডিকেল বোর্ড। গত ১ ফেব্র“য়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও দুই দফা খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে যেতে হয়। ৭৬ বছর বয়সী এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। দুটি মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদন্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দন্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয়মাসের জন্য মুক্তি দেয়। প্রথম দফা মুক্তির মেয়ার শেষ হয়ে আসলে ওই বছরের ২৫ আগস্ট বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্থায়ী মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দ্বিতীয় দফায় গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায়। খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদনও করে পরিবার। কিন্তু সরকার সেই প্রস্তাব আমলে না নিয়ে আরও দুদফা মুক্তির মেয়াদ বাড়ায়, যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৪ মার্চ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com