হাসপাতাল ও শরনার্থী শিবিরে বোমা হামলা চলছেই ঃ প্রতিরোধ যুদ্ধে হামাস হিজবুল্লাহ
গাজা শিশুদের কবরস্থানে পরিনত ঃ নয় দেশের রাষ্ট্র দূত ইসরাইল হতে প্রত্যাহার
দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ গাজায় থামছে না ইসরাইলের বিমান হামলা। ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা ঘৃন্য আর বর্বর হামলায় নিশিহৃ হওয়ার পথে গাজা। দখলদার ইসরাইলী বাহিনীর মূল লক্ষ্য হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করা কিন্তু সেটা কতটুকু সম্ভব তা নিয়ে খোদ ইসরাইলী সেনাদের মাঝে মতভেদ বিদ্যমান। এমন কোন দিন নেই যে দিনে বর্বর ইসরাইলী বাহিনী নিরস্ত্র ফিলিস্তীনিদের উপর বর্বরোচিত হামলা পরিচালনা করছে না। আজ ইসরাইলী হামলার একমাস একদিন পূর্ণ হয়েছে। গত এক মাসে অন্তত দশ হাজার ফিলিস্তীনিকে হত্যা করেছে। তাদের হামলায় নারী ও শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। দিনে দিনে হামলার ধরন ও প্রকৃতি এতটুকু দুর্ধর্ষ হচ্ছে যে পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে গাজা সিটি ধ্বংস হতে বাধ্য। তবে হামাস যোদ্ধারা বীর বিক্রমে সুড়ঙ্গে অবস্থান করে অথবা সুড়ঙ্গ হতে বের হতে চোরাগুপ্ত হামলা চালাচ্ছে আবার কোন কোন সময়ে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে। ইসরাইলের পক্ষ হতে গত সপ্তাহব্যাপী বলা হচ্ছে যে ইসরাইলের সেনারা পুরো গাজা উপত্যকা ঘিরে ফেলেছে। অন্যদিকে হামাসের পক্ষ হতে বলা হচ্ছে দখলদার ইসরাইলী বাহিনী কোন ভাবেই তাদের বিতাড়িত বা ধ্বংস করতে পারবে না, এই যুদ্ধে তারাই জয়ী হবে। কাতার ভিত্তিক হামাসের রাজনৈতিক শাখা পশ্চিমা বিশ্ব তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ বিরতির বিষয়েও আটক ইসরাইলীদের মুক্তিদানের ক্ষেত্রে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। হামাসের নিহত নেতা কাসেমের নামানুসারে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে হামলাকারী ইহুদী সেনাদের গাজা হতে কালো কাপড়ে মুড়িয়ে ইসরাইলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। গত কয়েকদিন যাবৎ গাজার আশ্রয় ও খাদ্যহীন অধিবাসিদের মাঝে ত্রান বিতরন চলছে মিশরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ত্রানবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকছে। আরব বিশ্বের দেশগুলো ত্রান সহযোগিতা করছে। ইসরাইলী সেনারা ত্রান বিতরনের সুযোগ দিলেও তারা আশ্রয় শিবির গুলোতে হামলা অব্যাহত রেখেছে। আশ্রয়হীন মানুষগুলো যখন আশ্রয়নিতে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছে সেই আশ্রয় শিবিরে দখলদার বাহিনী হামলা চালিয়ে দৃশ্যতঃ মানবতার সব মূল্যবোধ কে হত্যা করলো। দখলদারদের হামলায় গাজায় শিশু মৃত্যু চরম আকার ধারন করেছে। গতকাল পর্যন্ত অন্তত চার হাজার শিশু নিহত হয়েছে। গোটা গাজা দৃশ্যতঃ শিশুদের কাবর স্থানে পরিনত হয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে গাজা সিটি যেন কবর স্থানের শহরে পরিনত হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইয়েফ এরদোগানের ইসরাইল সফরের কথা থাকলেও নিরীহ ফিলিস্তীনিদের উপর ক্রমবর্ধমান হামলা ও হত্যাযজ্ঞের কারনে ইসরাইল সফর বাতিল করেছে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইসরাইল হামাস যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত লোকহর্ষক ও বৃহত্তর এলাকা বিস্তৃত করনে পশ্চিমারাই ভূমিকা রাখছে। তিনি পশ্চিমাদের কেই দায়ী করে অবিলম্বে ইসরাইলের বিমান হামলা ও স্থল অভিযান বন্ধের আহবান জানিয়েছেন। হামাস যোদ্ধাদের পাশাপাশি হুযি ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধারাও ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামলা পরিচালনা করছে। খবরে প্রকাশ হামাস যোদ্ধাদের একটি প্রশিক্ষিত দল লেবাননে অবস্থান করে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সাথে একজোট হয়ে ইসরাইলে মুহুর মুহুর হামলা পরিচালনা করছে। কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিয়া জানিয়েছে ইসরাইলের উত্তরের শহর নাহারিয়া এবং হাইকা ও দক্ষিনের একাধিক শহরে অন্ততঃ ষোলটি অত্যাধুনিক অপ্রতিরোধ্য রকেট নিক্ষেপ করেছে। ইসরাইলী কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে, লেবাননে হামলা চালিয়ে একাশি জন লেবাননীকে হত্যা করেছে তার মধ্যে উনষাটজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা অন্যদিকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হামলায় ছয় ইসরাইলী সেনা ও দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ইসরাইল হামাস যুদ্ধের বর্বরোচিত মুহুর্ত গুলোতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরব নেতাদের সাথে বৈঠক শেষ করে এবার তুরস্ক সফর করলো। ইসরাইলী বাহিনীর হামলার বিপক্ষে বরাবরই বিরুদ্ধচারন করে আসছে তুরস্ক। গত কয়েকদিন যাবৎ পশ্চিমা মিডিয়া সহ আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে একটি খবর বিশেষ গুরুত্বের সাথে প্রকাশ পাচ্ছে এবং উক্ত খবরটি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে খবরটি হলো গাজায় ইসরাইলের পারমানবিক বোমা হামলার সম্ভাবনা, উল্লেখ্য ইতিপূর্বে ইসরাইলের পক্ষ হতে গাজার সুড়ঙ্গপথ গুলোতে অবস্থান রত হামাস যোদ্ধাদের হত্যা করতে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগের ভাবনায় ছিল। আগামী দিনের গাজা, হামাস এবং ফিলিস্তীনিরা কতটুকু সুরক্ষিত থাকবে সেটাই দেখার বিষয়।