এক ইসরাইলি সোন কর্মকর্তা নিহত ঃ আজ হতে যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী বিনিময় শুরু ঃ আবারও হাসপাতালে হামলা ঃ আল শিফার পরিচালক কে ধরে নিয়েগেছে দখলদাররা ঃ হিজবুল্লাহ ও ইসরাইল হামলা, পাল্টা হামলায় শিশুদের মিশরে চিকিৎসা চলছে ঃ বৃটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইসরাইল সফর
দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করতে না পেরে এবং তাদের হাতে আটক দুইশতাধীক ইসরাইলীকে মুক্ত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর রীতিমত বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাশালী দেশ ইসরাইল হামাস যোদ্ধাদের সাথে সমঝোতায় পৌচেছে। যা বলা যায় আত্মসমর্পন। দেশটির মন্ত্রিসভা হামাসের সাথে বন্দী বিনিময় চুক্তি ও যুদ্ধবিরতির বিষয়টিক অনুমোদন ও করেছে। কথা ছিল বৃহস্পতিবার (গতকাল) হতে যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু বিশ্বের শত শত কোটি মানব সন্তান প্রত্যক্ষ করলো দখলদার বাহিনীর শেষ মুহুর্তের কুটচাল যে কুটচালে গতকাল রাত ও দিন ব্যাপী তারা ফিলিস্তীনিদের উপর নির্মম বোমা হামলা চালিয়েছে। নির্বিচারে বোমা হামলার ঘটনায় অন্তত ত্রিশজন ফিলিস্তীনির নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দেশটির ঘাতক প্রধানমন্ত্রী নেতানিহানু বলেছে শুক্রবার (আজ) থেকে যুদ্ধ বিরতি কার্যকর ও বন্দী বিনিময় হবে। ইসরাইলের গণ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময় অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া তারপরও সেটা করতে হচ্ছে। গতকাল ইসরাইলের বন্দী ও ফিলিস্তীনি বন্দীদের আত্মীয়স্বজনরা গভীর আগ্রহ আর প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ মুহর্তের বড় ধরনের হামলা পরিচালনা করার জন্য যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী বিনিময়ে কালক্ষেপন করলো। গত সাতচল্লিশ দিন যাবৎ বর্বর ইসরাইলি বাহিনী যতটুকু বেপরোয়া ভাবে গাজা ভূ-খন্ডে হামলা চালিয়েছে গতকালের বিমান হামরা ছিল গত সাতচল্লিশ দিন অপেক্ষা ভয়াবহ। হামরায় একই পরিবারের অন্তত সতেরজনের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ইসরাইলী বাহিনীর হামলাকে বীর বিক্রমে মোকাবিলা করেছে হামাস যোদ্ধারা। ইসরাইল যে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করতে পারে এবং হামাস সদস্যদের অপ্রস্তুত রেখে হামরা চালাতে পারে এমন ধারনায় বিশ্বাসী হয়ে হয়ত হামাস যোদ্ধারা প্রস্তুতিতেই ছিল যে কারনে গতকালের হামলায় কোন হামাস সদস্য নিহত হইনি বরঞ্চ দখলদার বাহিনীর উর্ধত্মন এক সামরিক কর্মকর্তার হামাসের হামলায় নিহত হয়েছে এবং কয়েকটি সামরিক যান ভস্মিভূত করে ধ্বংস করেছে হামাস যোদ্ধারা। গত সাতচল্লিশ দিনে হামাসের হামলায় ষাটটির বেশী ইসরাইলের সামরিক যান ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে। গতকালও গাজার অত্যাধুনিক হাসপাতাল সিফায় ইসরাইলি বাহিনী অভিযান পরিচালনা করেছে। উক্ত অভিযানে আল সিফা হাসপাতালের পরিচালক কে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে ইসরাইলি বাহিনীূ। গাজা দৃশ্যতঃ জলন্তভূমি আর লাশের উপত্যকায় পরিনত হয়েছে। কখন কে ইসরাইলের হামলায় নিহত হবে তার কোন নিশ্চয়তা নই। ইসরাইলের বিরুদ্ধে আরব দেশ গুলো অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষা ঐক্যবদ্ধ সৌদি আরব বলেছে ইসরাইল তার আত্মরক্ষার অজুহাতে যে ভাবে হামলা পরিচালনা করছে তার যেন সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। জর্দান, মিশর একই ধরনের মনোভাব ব্যক্ত করেছে। ইরান তো প্রথম থেকেই ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সর্বশেষ বিশ্বের অন্তত পঞ্চাশ টি দেশে ইরান পত্র প্রেরন করেছে ইসরাইলের সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন গতকাল ইসরাইল সফর করেছে। তিনি দক্ষিন ইসরাইলের যে এলাকায় গত সাত অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা হামলা চালিয়ে ছিল সেই কিবুৎঞ্জ এলাকা পরিদর্শন কালে তিনি মন্তব্য করেন যুদ্ধবিরতি কষ্টকর হলেও বন্দীদের মুক্তি আর ফিলিস্তিনদের প্রতি মানবিকতার কারনে যুদ্ধাবিরতির বিকল্প নেই। এদিকে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধ চলছে। উভয় পক্ষই হামলা ও পাল্টা হামলা পরিচালনা করছে। হিজবুল্লাহর হামলা নিকট অতীতের যে কোন হামলা অপেক্ষা ভয়াবহ। ইসরাইল আবারও পঞ্চম দফায লেবানন সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলো হতে তার নাগরিকদেরকে সরিয়ে নিয়েছে। গতকালও মিশর সীমান্ত দিয়ে গাজায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ত্রানবাহি ট্রাকের অনুপ্রবেশ ঘটে। হাসপতাল গুলোতে বর্বর ইসরাইলের হামলা অব্যাহত থাকায় শিশুদেরকে বিশেষ ব্যবস্থায় মিশরের অভ্যন্তরে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইসরাইলের প্রধান মন্ত্রী বলেছে যুদ্ধবিরতি মানে হামাস নির্মূল অভিযান বন্দ নয়, তাদের গোয়েন্দাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিশ্বের যে স্থানে থাকুক না কেন হামাস নেতাদের হত্যা করতে হবে।