দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ গাজায় চলছে গণহত্যা, দখলদার ইসরাইলি বাহিনী নির্বিচারে এই হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এমন কোন সময় নেই যে সময়ে ফিলিস্তীনিরা মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে দ্বিকবিদিক ছুটছে না, নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে খ্যাত শরনার্থী শিবির গুলো ও মৃত্যু ফাঁদে পরিনত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ইসরাইলের বর্বর বাহিনী শরনার্থী শিবির গুলোতে হামলা চালাচ্ছে। দক্ষিন গাজায় হামাসের হামলায় তিন দখলদার সেনা নিহত হওয়ার পর থেকে সেখানে ইসরাইলি বাহিনী ব্যাপক ভাবে বিমান হামলা পরিচালনা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজায় হামলা পরিচালনায় দৃশ্যতঃ সরাসরি ইসরাইলকে সমর্থন জানাচ্ছে অতি সম্প্রতি দক্ষিন গাজায় বেসামরিক ফিলিস্তীনি হত্যার দায়ে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর, ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ইসরাইলের হামলার বিপক্ষে বা যুদ্ধ বিরতির পক্ষে নয় তা আবারও দ্বিতীয়বারের মত প্রশমিত হলো। গতকাল জাতিসংঘ মহাসচিব গাজায় যুদ্ধ বিরতির লক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের সভা আহবান করে এবং তের সদস্য দেশের উপস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করলে সদস্য দেশ গুলো যুদ্ধ পক্ষে সমর্থন করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রদানের মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধ বিরতির বিষয়টি নাকচ করে দেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো কার্যকর কারনে অসহায় নিরীহ ফিলিস্তীনিরা নির্মম ভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে। এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব গাজায় যুদ্ধ বিরতির ক্ষেত্রে তার নিজস্ব ক্ষমতা ৯৯ ধারা প্রয়োগ করে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহবান করলে ইসরাইল জাতিসংঘের মহাসচিবের উপর ব্যাপক ভিত্তিক যুদ্ধ হয় এবং জাতিসংঘের মহা সচিবকে বিশ্ব শান্তি জন্য বিপদজনক হিসেবে অবহিত করেন। এদিকে রামাল্লায় হামাস ও ইসরাইল বাহিনীর মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ থেমে নেই। গতকালও দুই পক্ষের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। রামাল্লা শহরটি বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ তথা অভিজাত শ্রেনির ফিলিস্তীনিদের বসবাস বলে মনে করা হয়। ইসরাইল বাহিনীূ গতকাল গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা পরিচালনা করে একশত ত্রিশজনের অধিক ফিলিস্তীনিকে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডের শিকারে এবারও উল্লেখযোগ্য মহিলা ও শিশুরা, দখলদার বাহিনীর বারবার লক্ষ বস্তুতে পরিনত হচ্ছে অসহায় ফিলিস্তীনি নারী ও শিশুরা হিজবুল্লাহ অব্যাহত ভাবে হামলা পরিচালনা করছে ইসরাইলের অভ্যন্তরে পাল্টা হামলা পরিচালনা করছে ইসরাইলের সেনারা। গতকাল ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছে হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসীদের হামলা বন্দ না হলে পৃথিবীর বুক থেকে হিজবুল্লাহর অস্তিত্ব বিলীন করে দেওয়া হবে। গতকালও দখলদার ইসরাইলির ভূ-খন্ডে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ব্যাপক ভিত্তিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা পরিচালনা করেছে। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে আগামী দুই মাস পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলী সেনারা অভিযান পরিচালনা করবে। গতকাল দক্ষিন গাজার খান ইউনুস এলাকায় ইসরাইল বাহিনী বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান পরিচালনা করছিল এমন সময়ে হামাসের একটি দল দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর উপর হামলা পরিচালনা করে। গাজার বিখ্যাত মসজিদ ও অতি প্রাচীন বাহিনীর উপর হামলা পরিচালনা করে। গাজার বিখ্যাত মসজিদ ও অতি প্রাচীন মহান ওমরি মসজিদ বিমান হামলার মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছে হামাসের পক্ষ হতে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ অব্যাহত আছে। দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ইতিমধ্যে ফিলিস্তীনির বিখ্যাত ব্যক্তিদেরকে হত্যা করে চলেছে। যার মধ্যে চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, সাংবাদিক, কবি সাহিত্যিক, অন্যতম। গতকাল ইসরাইলের হামলায় নিহত হওয়ার খাতায় যোগ হলো ফিলিস্তিনির অন্যতম বিখ্যাত কবি রিফাত আলারিয়ার। গতকাল দক্ষিন গাজার কবি রিফাত আলারিয়ার বাসভবন লক্ষ্য করে ইসরাইলের সেনারা বিমান হামলা করলে ঘটনা স্থলেই তিনি সহ তার পিতা,মাতা, ও পরিবারের অপরাপর সদস্যরা নিহত হয়। খাদ্যের অভাবে, সুপেয় পানির অভাবে ফিলিস্তীনিদের মাঝে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে, এমন দুঃস্থ পরিস্থিতি ইতিপূর্বে ফিলিস্তীনিরা প্রত্যক্ষ করেনি। ফিলিস্তীনিরা কেবল খাদ্য অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে তা নয়, তারা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। ইসরাইলের বাহিনী চিকিৎসা কেন্দ্র তথা হাসপাতাল গুলো ধ্বংস করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাশিয়া সফর শুরু করেছে। তিনি রাশিয়া যেয়েঢ বলেছেন পৃথিবীর মানচিত্র হতে ইসরাইল নামক রাষ্ট্রকে মুছে দিতে হবে আর এটাই তাদের জন্য সর্বাপেক্ষা বড় পুরস্কার।