বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেবহাটায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করলেন মুহাদ্দিস রবিউল বাসার শ্যামনগরে বিএনপি’র দু—গ্রুপের সংঘর্ষ,রণ ক্ষেএ, ১৪৪ ধারা জারী, ভাংচুর,সদস্য সচিব অবাঞ্চিত ঘোষনা,সেনা পুলিশ উপস্থিতি রংপুর বিভাগে আবারও শৈত্যপ্রবাহ, বেড়েছে শীতজনিত রোগ জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস আলম রপ্তানি পণ্যে হিসেবে নতুন মাত্রা যোগ করেছে কৃষিপণ্য খুলনা সদর থানার ওসির অপসারণ দাবি বিএনপির হাসিনার আমলে লুট হয় ১৭ বিলিয়ন ডলার ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতিকে ড. ইউনূস অপরাধের দায় স্বীকার না করে আ. লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সৌজন্য সাক্ষাৎ

রাতের আঁধারে বিভিন্নস্থানে চলছে অতিথি পাখি শিকার

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

এম এম নুর আলম ॥ শীতকাল শুরু হতেই অতিথি পাখি ভিনদেশ থেকে আসতে শুরু করে আমাদের দেশে আর তাদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠি আমরা। সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা অঞ্চল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে অতিথি পাখি এসে আশ্রয় নেয়। হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এসব পাখি আমাদের দেশে আসে শুধু আশ্রয় নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য। এদের আমাদের দেশে আশার মূলে রয়েছে শীত প্রধান দেশে শীতের মাত্রা এতটা তীব্র থাকে যে তা এই পাখিরা সহ্য করতে পারে না। শীত প্রধান দেশে তীব্র শীত দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের অভাবও দেখা দেয়। শীতে উত্তর মেরু, সাইবেরিয়া, ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু অংশে প্রবল তুষারপাত হয়ে থাকে। তীব্র তুষারপাতে এসব পাখি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে এবং বাংলাদেশের মতো অপেক্ষাকৃত কম শীতের দেশে এসে উপস্থিত হয়। লক্ষ্য করে দেখাগেছে, শহরের কাছেই গ্রাম আর গ্রামের পাশেই বিল ও জলাশয়। বিলের মধ্যে মৎস্য ঘের। ঘেরের মাঝে পানিতে বাঁশ পুতে রেখে ফাঁস জাল টানিয়ে রাখা। আর একটু সরে গিয়ে একাধিক জায়গায় লোহার চিকন তার দিয়ে ফাঁদ পেতে রাখা। কূয়াশা ঢাকা ভোরে পরিযায়ী পাখিরা এবং রাতে রাতচরা পাখি ফাঁদে আটকে যায়। দূরে ওৎ পেতে থাকা শিকারীরা ফাঁদে আটকানো পাখি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ঠিক এইভাবে ফাঁস জাল, সাউন্ড সিস্টেম ও বিশেষ ফাঁদ পেতে পাখি শিকার চলছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন বিল অঞ্চলে। একারণে সাতক্ষীরার জলাশয়-বিলগুলো এখন অতিথি পাখির জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। উপজেলার ঘেরগুলো ও সীমন্তবর্তী সকল বিলে বিভিন্ন সিস্টেমে পাখি ধরেছে অসাধু ও প্রকৃতির কিছু শত্রুরা। বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এ উল্লেখ রয়েছে, কোন ব্যক্তি পাখি বা পরিযায়ী পাখি শিকার অথবা হত্যা করলে অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। দন্ডিপ্রাপ্ত ব্যক্তি অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদন্ড, দুই লাখ টাকার অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। এই অনুচ্ছেদে আরও উল্লেখ রয়েছে, কোন ব্যক্তি পাখি বা পরিযায়ী পাখির ক্রয়-বিক্রয় বা পরিবহন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে দন্ড দ্বিগুণ হবে। সংবিধানে এত গুরুত্বপূর্ণ আইনের উল্লেখ থাকলেও বাস্তবতায় তার কোন প্রয়োগ নেই বললেও চলে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন যদি পরিযায়ী পাখি ও প্রকৃতি রক্ষায় সোচ্চার হয় তবেই প্রকৃতিকে বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা। এলাকার সচেতন মহল জানান, প্রতি বছর শীত ঋতুতে পরিযায়ী পাখিরা আমাদের প্রকৃতিকে সমৃদ্ধ করছে। এরা এদেশের জলবায়ুর জন্য আশির্বাদ স্বরুপ। এরা বেঁচে থাকার তাগিদে অতিথি হয়ে আমাদের দেশে আসে। দুঃখজনক, একশ্রেণির নির্মম-নিষ্ঠুর মানুষ প্রকাশ্যে বা কখনো গোপনে এয়ারগান, ফাঁসজাল, খাঁচা ও ফাঁদ পেতে পরিযায়ী ও দেশীয় প্রজাতির পাখি ধ্বংস করে চলেছে। তারা আরও জানান, শিকারীদের হাত থেকে পাখিদের রক্ষায় পুলিশ ও প্রশাসনকে প্রচলিত আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে তবেই পরিযায়ী পাখি নিধন বন্ধ সম্ভব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com