মানবতার শত্র“ এই চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি মানবতাবাদীদের সময় এসেছে খোলা স্থানের বিরানীর বিষয়ে তদারকির
দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ মধ্যযুগের কবি চন্ডি দাসের অমর পক্তি সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই। মরসি কবির অতি গুরুত্বপূর্ণ বোধ বর্তমান সময়ে কোন কোন মানুষের জন্য কেবল বিব্রতকর নয় চরম অবমাননাকর। মানুষই সত্য আর সেই মানুষ যখন মানুষ্যহীনতায় অমানবিক কর্মযজ্ঞ করে তখন কোন কোন মানুষের পরিচয় মানুষ কি থাকে? অতি সম্প্রতি খুলনায় কুকুরের মাংস বিক্রি সহ কুকুরের মাংসে রান্না করা বিরানি তৈরী পরবর্তী বিক্রি করা ও সেই কুকুরের মাংসের বিরানি মানুষ হয়ে মানুষকে খাওয়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা কেবল কি অন্যায় আর অপরাধ? না শুধু মাত্র অপরাধ নয় মানুষের প্রতি চরম অপরাধ, এমন জঘন্য, পৈশাষিক, বেদনা দায়ক ঘটনা আর কি হতে পারে? পণ্য সামগ্রী ক্রয় বিক্রয় সমাজ ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ, মানুষের সরলতায়, বিশ্বাসে এমন প্রতারনা যারা করতে পারে তাদের পরিনতি আর যাই হোক কোন সাধারন অপরাধ নয়। অবিশ্বাস্য বিবেক বিবেচনাহীন পর্ব কুকুরের মাংস যে বা যারা মানুষকে খাওয়াতে পারে তারা এরপরও কি নিজেদেরকে মানুষ হিসেবে দাবী করতে পারে? নির্মম, নিষ্ঠুর, বেদনাদায়ক ঘটনাটি গত বুধবারের। অবশ্য বুধবারে ঘটনা জানাজানি হয় এবং মানুষরুপী অমানুষগুলো খাচায় বন্দী হয়। ঘটনার অন্তরালে জানা যায় খুলনা শহরের পলিটেকনিক সংলগ্ন প্রতিষ্ঠানটির একটি পরিত্যক্ত ভবনে একই এলাকার দুই তিন কিশোর কুকুর জবাই করে উক্ত মাংস খুলনার বিভিন্ন এলাকায় খাসির মাংস বলে বিক্রি করে আসছিল। ক্রেতাদের প্রশ্নের মুখে তারা জানিয়ে আসছিল যে খাসির মাংসের দোকানে তারা কাজ করে এবং তাদের ভাগের অংশ তারা বিক্রি করছে। এক হাজার টাকা কেজি প্রতি খাসির মাংস চার/ পাঁচশত টাকায় পাওয়ায় লুফে নিতে থাকে ক্রেতারা। প্রতারক মানুষরুপী অমানুষগুলোর ফেরি করে কুকুরের মাংস বিক্রিতে সুবিধা হচ্ছিল না আর তাই বেশী লাভের আশায় স্থানীয় বিরানী ব্যবসায়ী জনৈক সাইদুলকে কুকুরের মাংস দিয়ে বিরানী তৈরী করে প্যাকেট প্রতি বিরানী ৬০/৭০ টাকায় বিক্রি করে আসছিল। বুধবারে সকালে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা বিকট গন্ধ পেতে থাকলে খোজাখুজি করতে থাকে গন্ধের উৎস এর মধ্যে কেউ একজন দেখতে পান এক কিশোর কুকুরের গলায় দড়ি বেধে পরিত্যক্ত ভবনটির অভ্যন্তরে নিতে। সন্দেহ হলে অন্যদের জানিয়ে অনেকে এক সাথে উক্ত পরিত্যক্ত ভবনে প্রবেশ পরবর্তি দেখতে পায় উক্ত ঘরে কুকুরের মাথা চামড়া, হাড় হাড্ডি এবং দড়ি দিয়ে কয়েকটি কুকুর ঝুলিয়ে রাখা, মুহুর্তে ঘটনাটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুলিশ এসে অপরাধীদের গ্রেফতার করে। অতি অমানবিক কাজের হোতা ও সহযোগিরা একই অপরাধে অপরাধি আর তাই তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে মানুষের জন্য চরম অবমাননা কর হবে। সচেতন মহলের প্রত্যাশা তাদের সাজা এমন দৃষ্টান্তমূলক হতে হবে যেন আগামীতে আর কেউ এমন জঘন্যতম কাজ করার সামান্যতম ইচ্ছা না দেখায়। মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে জড়িতরা ইতিমধ্যে কেবল খুলনা বা সাতক্ষীরার নয় পুরো দেশবাসির শত্র“তে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে সময়ে এসেছে বিরানী রান্না, বিক্রি, বাজারজাত করনের উপর তদারকির। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় মোড়ে মোড়ে গজিয়ে উঠেছে বিরানীর দোকান। দোকানে সাথে রান্না বা রান্না সরঞ্জামানের দৃশ্য চোখে পড়ে না। এসব বিরানী কোথায় রান্না হয়, কারা রান্না করে এ বিষয়ে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বা তদারকি থাকা জরুরী। আবার রান্না করা বিরানী কতটুকু মানসম্মত সেটাও পরীক্ষার বিষয়। অপরাধ এবং অপরাধী যখন প্রকাশ পায় তখনই হৈ চৈ পড়ে এবং বিচার বিশ্লেষন চলে, কিন্তু অপরাধীকে অপরাধ করার ক্ষেত্র বন্ধ করলে অপরাধের মাত্রা অনেকাংশে কমে। কুকুরের মাংস দিয়ে বিরানী রান্না করা এবং বিক্রি করা চক্র সত্যিকার অর্থে মানবতার শত্র“। আইনের ম্যারপ্যাচে এমন জঘন্য অপরাধীরা যেন পার না পায় সে বিষয়ে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করতে হবে।